ঢাকা ০৬:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::

হেফাজত ইসলামের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আর দিচ্ছেন না

স্টাফ রিপোর্টার।।

দোয়া-বিক্ষোভ কর্মসূচি দিল হেফাজত

অনলাইন রিপোর্টার ॥ হেফাজতে ইসলামের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল বাড়ানো হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী। রবিবার (২৮ মার্চ) পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

হেফাজতে মহাসচিব বলেন, সোমবার (২৯ মার্চ) দোয়া মাহফিল ও শুক্রবার (২ এপ্রিল) বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।

নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, হেফাজতে ইসলাম মোদির আগমন প্রত্যাহার করার জন্য কর্মসূচি দিয়েছিল। কিন্তু মোদির আগমনের দিন হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না।

তিনি বলেন, হেলমেট বাহিনী দ্বীনের শত্রু, ইসলামের শত্রু। তারা কেউ হেফাজতের নয়। যারা কালেমা জানে বিশ্বাস করে তারা অন্তত বিজেপিকে ভালবাসতে পারে না।

হেফাজতে ইসলামের হরতাল সর্বাত্মকভাবে পালন করার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, হেফাজতের ভবিষ্যত কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে।

হেফাজতের এ নেতা আরও বলেন, প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আহতের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আটকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হোক আমরা চাই না।

সরকার দলীয় লোক বাড়ি বাড়ি হামলার হুমকি দিচ্ছে। ২/১ দিনের মধ্যে দাবি মানা না হলে আমিরে হেফাজত বাবুনগরীসহ শীর্ষস্থানীয় নেতারা বসে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন।

সারাদেশে শান্তিপূর্ণ হরতাল পালিত হচ্ছে, এতে দেশের জনগণ সাড়া দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। রবিবার বিকেল ৩টায় হাটহাজারী সদরের ত্রিবানি এলাকায় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

হেফাজতের আমির বলেন, ‘গত শুক্রবার মাদরাসাছাত্রদের মিছিলে প্রশাসন, পুলিশ গুলি করে হাটহাজারীর চার জনকে শহীদ করেছে। এছাড়া সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। সারাদেশে হেফাজতের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আজকের হরতালেও বিভিন্ন জায়গায় সরকারি বাহিনী হামলা ও গুলি করেছে।’

হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরের সহসভাপতি ও খেলাফত মজলিশের শায়খুল হাদিস মামুনুল হক বলেছেন, ‘আর যদি আমার কোনো ভাইকে হত্যা করা হয়, আবার যদি গুলি চলে, আর যদি কোনো ভাইয়ের রক্ত ঝরে, তাহলে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া গোটা বাংলাদেশ অচল করে দেওয়া হবে।’

মামুনুল হক বলেন, ‘আজ হেফাজতের হরতাল কর্মসূচি ছিল, আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি ছিল না। তবু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মাঠে দেখা গেছে আওয়ামী পাণ্ডাদের। আমার শান্তিপ্রিয় ভাইদের ওপর পুলিশ-বিজিবি নির্বিচারে গুলি ছুড়েছে। মধুগড়ের বর্ষীয়ান আলেম হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল হামিদ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

এটা কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করল। মনে রাখবেন, এভাবে গুলি করে হেফাজতকে দমানো যাবে না, বরং আপনি আপনার গদি টেকাতে পারবেন না।’

মামুনুল হক প্রশ্ন রাখেন, ‘হাটহাজারীতে, বি.বাড়িয়ায় আমার ভাইয়ের রক্ত পান করেছেন, পির সাহেবকে রক্তাক্ত করেছেন, নির্বিচারে গুলি ছুড়ছেন- এরপরেও কি আপনাদের রক্ত পিপাসা মেটেনি? এভাবে গোটা বাংলাদেশের জনগণকে খুন করে আপনারা কি রামরাজত্ব চালাতে চান?’

দুপুরে জোহরের নামাজের পর স্লোগান দিয়ে রাজধানীর পল্টন মোড়ে অবস্থান নেন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। এর আগে রবিবার (২৮ মার্চ) সকালেও তারা এখানে অবস্থান নিয়েছিলেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লাঠি হাতে হরতাল সমর্থনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন হেফাজতের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য উপস্থিত থাকলেও বিক্ষোভকারীদের বাধা দেয়নি তারা। পরে বিক্ষোভকারীরা যুবলীগ, ছাত্রলীগকে উদ্দেশ করে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় পল্টন মোড়ে ও আশপাশের এলাকায় গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে।

বেলা ৩টার পর মিছিলটি আবারও বায়তুল মোকাররমের দিকে চলে গেলে পল্টন মোড়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেয় পুলিশ।

আরো খবর.......

জনপ্রিয় সংবাদ

মোংলায় ডে বোট অপারেটর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

হেফাজত ইসলামের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আর দিচ্ছেন না

আপডেট টাইম : ০১:০৫:০৮ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৮ মার্চ ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার।।

দোয়া-বিক্ষোভ কর্মসূচি দিল হেফাজত

অনলাইন রিপোর্টার ॥ হেফাজতে ইসলামের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল বাড়ানো হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী। রবিবার (২৮ মার্চ) পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

হেফাজতে মহাসচিব বলেন, সোমবার (২৯ মার্চ) দোয়া মাহফিল ও শুক্রবার (২ এপ্রিল) বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।

নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, হেফাজতে ইসলাম মোদির আগমন প্রত্যাহার করার জন্য কর্মসূচি দিয়েছিল। কিন্তু মোদির আগমনের দিন হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না।

তিনি বলেন, হেলমেট বাহিনী দ্বীনের শত্রু, ইসলামের শত্রু। তারা কেউ হেফাজতের নয়। যারা কালেমা জানে বিশ্বাস করে তারা অন্তত বিজেপিকে ভালবাসতে পারে না।

হেফাজতে ইসলামের হরতাল সর্বাত্মকভাবে পালন করার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, হেফাজতের ভবিষ্যত কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে।

হেফাজতের এ নেতা আরও বলেন, প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আহতের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আটকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হোক আমরা চাই না।

সরকার দলীয় লোক বাড়ি বাড়ি হামলার হুমকি দিচ্ছে। ২/১ দিনের মধ্যে দাবি মানা না হলে আমিরে হেফাজত বাবুনগরীসহ শীর্ষস্থানীয় নেতারা বসে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন।

সারাদেশে শান্তিপূর্ণ হরতাল পালিত হচ্ছে, এতে দেশের জনগণ সাড়া দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। রবিবার বিকেল ৩টায় হাটহাজারী সদরের ত্রিবানি এলাকায় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

হেফাজতের আমির বলেন, ‘গত শুক্রবার মাদরাসাছাত্রদের মিছিলে প্রশাসন, পুলিশ গুলি করে হাটহাজারীর চার জনকে শহীদ করেছে। এছাড়া সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। সারাদেশে হেফাজতের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আজকের হরতালেও বিভিন্ন জায়গায় সরকারি বাহিনী হামলা ও গুলি করেছে।’

হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরের সহসভাপতি ও খেলাফত মজলিশের শায়খুল হাদিস মামুনুল হক বলেছেন, ‘আর যদি আমার কোনো ভাইকে হত্যা করা হয়, আবার যদি গুলি চলে, আর যদি কোনো ভাইয়ের রক্ত ঝরে, তাহলে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া গোটা বাংলাদেশ অচল করে দেওয়া হবে।’

মামুনুল হক বলেন, ‘আজ হেফাজতের হরতাল কর্মসূচি ছিল, আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি ছিল না। তবু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মাঠে দেখা গেছে আওয়ামী পাণ্ডাদের। আমার শান্তিপ্রিয় ভাইদের ওপর পুলিশ-বিজিবি নির্বিচারে গুলি ছুড়েছে। মধুগড়ের বর্ষীয়ান আলেম হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল হামিদ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

এটা কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করল। মনে রাখবেন, এভাবে গুলি করে হেফাজতকে দমানো যাবে না, বরং আপনি আপনার গদি টেকাতে পারবেন না।’

মামুনুল হক প্রশ্ন রাখেন, ‘হাটহাজারীতে, বি.বাড়িয়ায় আমার ভাইয়ের রক্ত পান করেছেন, পির সাহেবকে রক্তাক্ত করেছেন, নির্বিচারে গুলি ছুড়ছেন- এরপরেও কি আপনাদের রক্ত পিপাসা মেটেনি? এভাবে গোটা বাংলাদেশের জনগণকে খুন করে আপনারা কি রামরাজত্ব চালাতে চান?’

দুপুরে জোহরের নামাজের পর স্লোগান দিয়ে রাজধানীর পল্টন মোড়ে অবস্থান নেন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। এর আগে রবিবার (২৮ মার্চ) সকালেও তারা এখানে অবস্থান নিয়েছিলেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লাঠি হাতে হরতাল সমর্থনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন হেফাজতের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য উপস্থিত থাকলেও বিক্ষোভকারীদের বাধা দেয়নি তারা। পরে বিক্ষোভকারীরা যুবলীগ, ছাত্রলীগকে উদ্দেশ করে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় পল্টন মোড়ে ও আশপাশের এলাকায় গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে।

বেলা ৩টার পর মিছিলটি আবারও বায়তুল মোকাররমের দিকে চলে গেলে পল্টন মোড়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেয় পুলিশ।