ঢাকা ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিক শহিদকে প্রাণনাশের হামলাকারী ফোরকান জেল হাজতে সিবিএ নেতা আসিফ নাঈমকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা: বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে বন্দর এলাকা বাবার থ্রি হুইলারে চড়ে স্কুলে যাওয়া হলোনা রুবাইয়ার// ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-মেয়ে নিহত ঘিওর, মানিকগঞ্জের এই জুলুমের বিচারের জন্য আওয়াজ তুলুন, স্থানীয়রা এগিয়ে আসুন! জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে নতুন করে ভাবছে সরকার মালয়েশিয়ায় ১৭০০ রিঙ্গিতের নিচে বেতনপ্রাপ্ত শ্রমিকদের অভিযোগ করার আহ্বান গণঅভ্যুত্থানে মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় ১৬ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে ট্রাইব্যুনাল ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা: কখন কীভাবে কার্যকর হবে কাঠালিয়া গার্ডার ব্রিজ রাতে ঢালাই রাতে ডেবে যায় নাসিরনগরে তিন সংগঠনের তারুণ্যের সমাবেশ অনুষ্ঠিত

সৌদিতে আগুনে পুড়ে নিহত ৩ শ্রমিকের পরিচয় পাওয়া গেছে

নওগাঁর সংবাদদাতা
  • আপডেট টাইম : ০৬:২৫:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪
  • / ১৯৬ ১৫০.০০০ বার পাঠক

সৌদি আরবের রিয়াদের মুসাসানাইয়া এলাকায় একটি সোফা তৈরির কারখানায় আগুনে পুড়ে চার বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার তিনজন রয়েছেন। বুধবার (৩ জুলাই) সৌদির স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা সময় আগুনের এই ঘটনা ঘটে বলে নিহতদের স্বজনেরা জানান। নিহতদের তিন পরিবার দ্রুত মরদেহ দেশে আনতে সরকারের সহযোগিতা চাচ্ছে।

নিহত তিন ব্যক্তিরা হলেন- আত্রাই উপজেলার দিঘা স্কুলপাড়া গ্রামের কবেজ আলীর ছেলে শুকবর রহমান (৪০), তেজনন্দি গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে ফারুক হোসেন (৪০), শিকারপুর গ্রামের সাহাদ আলীর ছেলে এনামুল হোসেন (২৫)।

বৃহস্পতিবার বিকালে তেজনন্দি গ্রামের ফারুক হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের লোকজন ও আত্মীয় স্বজন ভিড় করে আছেন। গ্রামের জুড়েই যেন কান্না আর শোকের রোল পরে গেছে। ফারুকের স্ত্রী-দুই সন্তানকে যেন কেউ থামাতেই পারছেন না। বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।

ফারুক হোসেনের ভাতিজা পিন্টু জানান, চাচা ফারুক হোসেন গার্মেন্টেস কর্মী ছিলেন। প্রায় ৬ বছর আগে ধার-দেনা করে সৌদি আরবে যান। কিন্তু যাওয়া পর থেকেই সেখানে নানা সমস্যার সম্মুখীন হন তিনি। ৮ মাস আগে সোফা তৈরির কারখানায় নতুন কাজে যোগদান করেছেন। এরই মধ্যে বুধবার রাত ১০টা দিকে মোবাইল ফোনে জানতে পারেন কারখানায় আগুনে চাচা ফারুক নিহত মারা গেছেন।

উপজেলার দিঘা গ্রামের নিহত শুকবর আলীর মেয়ের জামাই বিদ্যুৎ হোসেন জানান, তার শ্বশুর কৃষি শ্রমিক ছিলেন। আড়াই বছর আগে ১১ শতক জমি বিক্রি করে তার সঙ্গে ধার-দেনার টাকায় সৌদি আরবে যান। এখন পর্যন্ত ধার-দেনার টাকা শোধ করতে পারেননি। শুকবরের দুই ছেলে এক মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে বড় ছেলে শামীম হোসেন প্রতিবন্ধী। তার মাথা গোঁজার একমাত্র বাড়ির তিন শতক জায়গা ছাড়া আর কিছুই নেই। শাশুড়ি কিভাবে শ্যালকদের নিয়ে চলবেন তা নিয়ে ঘোর বিপাকে পড়েছেন। শ্বশুর শুকবর আলীই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি।

শিকারপুর গ্রামের নিহত যুবক এনামুলের চাচা জাহিদুল ইসলাম জানান, এনামুল গার্মেন্টস শ্রমিক। অনেকটা সুখের আসায় ঘর বাঁধতে ধার-দেনা করে সৌদি আরবে যান। সেখান থেকে কেবল রোজগারের টাকায় ধার-দেনা শোধ করে ইটের বাড়ি নির্মাণ করছেন। বাড়ির কাজ শেষ হলে আগামী বছর নাগাদ দেশে এসে বিয়ে করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা তার ভাগ্যে সইলো না। বুধবার রাতে আগুনে পুরে মারা যাবার খবর আসে। তখন থেকেই একমাত্র ছেলেকে হারানোর শোকে বাবা-মা পাথর হয়ে গেছেন। কিছুতেই যেন তাদের বুঝ দিয়ে থামানো যাচ্ছে না। নিহতদের লাশ দ্রুত দেশে আনার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, সৌদি আরবে আগুনে পুড়ে তিনজন নিহতের বিষয়টি জেনেছি। নিহত তিন পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে। নিহতদের মরদেহ দেশে আনার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সৌদিতে আগুনে পুড়ে নিহত ৩ শ্রমিকের পরিচয় পাওয়া গেছে

আপডেট টাইম : ০৬:২৫:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪

সৌদি আরবের রিয়াদের মুসাসানাইয়া এলাকায় একটি সোফা তৈরির কারখানায় আগুনে পুড়ে চার বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার তিনজন রয়েছেন। বুধবার (৩ জুলাই) সৌদির স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা সময় আগুনের এই ঘটনা ঘটে বলে নিহতদের স্বজনেরা জানান। নিহতদের তিন পরিবার দ্রুত মরদেহ দেশে আনতে সরকারের সহযোগিতা চাচ্ছে।

নিহত তিন ব্যক্তিরা হলেন- আত্রাই উপজেলার দিঘা স্কুলপাড়া গ্রামের কবেজ আলীর ছেলে শুকবর রহমান (৪০), তেজনন্দি গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে ফারুক হোসেন (৪০), শিকারপুর গ্রামের সাহাদ আলীর ছেলে এনামুল হোসেন (২৫)।

বৃহস্পতিবার বিকালে তেজনন্দি গ্রামের ফারুক হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের লোকজন ও আত্মীয় স্বজন ভিড় করে আছেন। গ্রামের জুড়েই যেন কান্না আর শোকের রোল পরে গেছে। ফারুকের স্ত্রী-দুই সন্তানকে যেন কেউ থামাতেই পারছেন না। বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।

ফারুক হোসেনের ভাতিজা পিন্টু জানান, চাচা ফারুক হোসেন গার্মেন্টেস কর্মী ছিলেন। প্রায় ৬ বছর আগে ধার-দেনা করে সৌদি আরবে যান। কিন্তু যাওয়া পর থেকেই সেখানে নানা সমস্যার সম্মুখীন হন তিনি। ৮ মাস আগে সোফা তৈরির কারখানায় নতুন কাজে যোগদান করেছেন। এরই মধ্যে বুধবার রাত ১০টা দিকে মোবাইল ফোনে জানতে পারেন কারখানায় আগুনে চাচা ফারুক নিহত মারা গেছেন।

উপজেলার দিঘা গ্রামের নিহত শুকবর আলীর মেয়ের জামাই বিদ্যুৎ হোসেন জানান, তার শ্বশুর কৃষি শ্রমিক ছিলেন। আড়াই বছর আগে ১১ শতক জমি বিক্রি করে তার সঙ্গে ধার-দেনার টাকায় সৌদি আরবে যান। এখন পর্যন্ত ধার-দেনার টাকা শোধ করতে পারেননি। শুকবরের দুই ছেলে এক মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে বড় ছেলে শামীম হোসেন প্রতিবন্ধী। তার মাথা গোঁজার একমাত্র বাড়ির তিন শতক জায়গা ছাড়া আর কিছুই নেই। শাশুড়ি কিভাবে শ্যালকদের নিয়ে চলবেন তা নিয়ে ঘোর বিপাকে পড়েছেন। শ্বশুর শুকবর আলীই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি।

শিকারপুর গ্রামের নিহত যুবক এনামুলের চাচা জাহিদুল ইসলাম জানান, এনামুল গার্মেন্টস শ্রমিক। অনেকটা সুখের আসায় ঘর বাঁধতে ধার-দেনা করে সৌদি আরবে যান। সেখান থেকে কেবল রোজগারের টাকায় ধার-দেনা শোধ করে ইটের বাড়ি নির্মাণ করছেন। বাড়ির কাজ শেষ হলে আগামী বছর নাগাদ দেশে এসে বিয়ে করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা তার ভাগ্যে সইলো না। বুধবার রাতে আগুনে পুরে মারা যাবার খবর আসে। তখন থেকেই একমাত্র ছেলেকে হারানোর শোকে বাবা-মা পাথর হয়ে গেছেন। কিছুতেই যেন তাদের বুঝ দিয়ে থামানো যাচ্ছে না। নিহতদের লাশ দ্রুত দেশে আনার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, সৌদি আরবে আগুনে পুড়ে তিনজন নিহতের বিষয়টি জেনেছি। নিহত তিন পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে। নিহতদের মরদেহ দেশে আনার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।