ঢাকা ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের পর ছাত্রলীগ নেতার গলিত মরদেহ উদ্ধার চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৃষ্টির জন্য চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে ইসতিসকার নামাজ আদায় মঠবাড়ীয়া তীব্র তাপদাহের হাত থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ। প্রার্থনা ময়মনসিংহে আন্তর্জাতিক শব্দদূষণ দিবস উদযাপিত উজিরপুরে সাব রেজিষ্টার মোঃ ইমরান খান এর বিদায় উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত রায়পুরে আলোচনায় চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ জামালপুরে বিনা খেসারি-১ এর চাষের উজ্জল সম্ভাবনা ব্যাংককের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী মনোহরদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হলেন এড.মো. মাসউদ তারাকান্দা উপজেলায় ছেঁড়া ১০টাকা নিয়ে সংঘর্ষে ছেলে নিহত-বাবা সংকটাপন্ন

ব্যাংকে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে ব্যাংক খাতে মোট কর্মী ১ লাখ ৮৩ হাজার এর মধ্যে ২৮ হাজার নারী মোট কর্মীর সাড়ে ১৮ শতাংশ নারী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার।।

ব্যাংকের চাকরিতে নারী কর্মীর প্রতিনিয়ত সংখ্যা বাড়ছে। ফলে পুরুষের তুলনায় নারীদের অংশও বাড়ছে। এখন যারা চাকরিতে আসছেন এমন ব্যাংকারদের মধ্যে ১৮ শতাংশের বেশি রয়েছেন নারী। এক সময় তা ১০ শতাংশেরও কম ছিল। অন্যদিকে নারী কর্মীদের চাকরি বদলের প্রবণতা কিংবা চাকরি ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতাও আগের চেয়ে কমেছে। ব্যাংক খাতের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের লিঙ্গসমতা বিষয়ক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক বাদে দেশে কার্যরত অন্য ৫৯টি তপশিলি ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের ব্যাংকগুলোতে জনবলের সংখ্যা ১ লাখ ৮৩ হাজার ২০৩। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাবে দেখা গেছে, এরমধ্যে পুরুষ কর্মীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮২৮ জন। আর নারী কর্মীর সংখ্যা ২৮ হাজার ৩৭৮ জন। সে হিসাবে ব্যাংকগুলোতে নারী কর্মী ১৮ দশমিক ৩২ শতাংশ। অন্যদিকে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর রয়েছেন ১৬ শতাংশ। দেশের ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ১৫ জন নারী চাকরি করেন।
বিশ্বে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য বিষয়ে প্রতিবছর ‘দ্যা গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট’ প্রকাশ করে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম। বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে ২০২০ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ছিল শীর্ষে। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২০ সালে বিশ্বের ১৫৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫০তম। প্রতিবেদনটি বলছে, এমনটা সম্ভব হয়েছে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে। প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি অনুকূল কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা ও প্রতিষ্ঠানের সর্বক্ষেত্রে লৈঙ্গিক সমতা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানসমূহের লৈঙ্গিক সমতা বিষয়ক সূচক পর্যালোচনা করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১১ সালের পহেলা ডিসেম্বর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ব্যাংকগুলোতে ৩০ বছরের কম বয়সি যেসব কর্মী রয়েছেন তাদের মধ্যে ২০ দশমিক ৬২ শতাংশ নারী। ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সি কর্মীদের মধ্যে নারীর হার ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর ৫০ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে এ হার ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর সূচনা পর্যায়ে নারী কর্মী রয়েছেন ১৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। মধ্যবর্তী পর্যায়ে আছেন ১৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। হিসাবে দেখা গেছে, ব্যাংকিং খাতে নারীদের অংশগ্রহণ প্রারম্ভিক পর্যায়ে বেশি।

আরও পড়ুন:
এখনও সংগ্রাম চলছে নারী আইনজীবীদের

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকে কর্মরত মোট নারী কর্মীদের মধ্যে ২০২০ সালের শেষ ছয় মাসে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ চাকরি বদল করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ব্যাংক খাতের মোট পরিচালকদের ১২ দশমিক ২০ শতাংশ নারী। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নারী পরিচালক রয়েছেন বিদেশি মালিকানার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে। এসব ব্যাংকের পরিচালকদের ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ নারী। বেসরকারি ব্যাংকের ১২ দশমিক ৮৫ শতাংশ পরিচালক নারী। আর রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে এ হার ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

এদিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা চালু করেছে। ব্যাংকগুলো মাঝে মধ্যে লৈঙ্গিক সমতা বিষয়ক সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকে। ব্যাংকগুলোর নেওয়া এসব উদ্যোগের ফলে নারীরা স্বাচ্ছন্দে চাকরি করতে পারছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকও সময়ে সময়ে এসব সুবিধার বিষয়ে তদারকি করে থাকে।

জানা গেছে, দেশের ৫৯টি তপশিলি ব্যাংকে কর্মরত নারী কর্মীদের জন্য ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি কার্যকর রয়েছে। ২৭টি ব্যাংক শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করেছে। ৪৮টি তফশিলি ব্যাংকের লৈঙ্গিক হয়রানি বন্ধের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। অবশ্য ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।

আরো খবর.......

জনপ্রিয় সংবাদ

কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের পর ছাত্রলীগ নেতার গলিত মরদেহ উদ্ধার

ব্যাংকে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে ব্যাংক খাতে মোট কর্মী ১ লাখ ৮৩ হাজার এর মধ্যে ২৮ হাজার নারী মোট কর্মীর সাড়ে ১৮ শতাংশ নারী

আপডেট টাইম : ০৮:৩৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৮ মার্চ ২০২১

অর্থনৈতিক রিপোর্টার।।

ব্যাংকের চাকরিতে নারী কর্মীর প্রতিনিয়ত সংখ্যা বাড়ছে। ফলে পুরুষের তুলনায় নারীদের অংশও বাড়ছে। এখন যারা চাকরিতে আসছেন এমন ব্যাংকারদের মধ্যে ১৮ শতাংশের বেশি রয়েছেন নারী। এক সময় তা ১০ শতাংশেরও কম ছিল। অন্যদিকে নারী কর্মীদের চাকরি বদলের প্রবণতা কিংবা চাকরি ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতাও আগের চেয়ে কমেছে। ব্যাংক খাতের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের লিঙ্গসমতা বিষয়ক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক বাদে দেশে কার্যরত অন্য ৫৯টি তপশিলি ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের ব্যাংকগুলোতে জনবলের সংখ্যা ১ লাখ ৮৩ হাজার ২০৩। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাবে দেখা গেছে, এরমধ্যে পুরুষ কর্মীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮২৮ জন। আর নারী কর্মীর সংখ্যা ২৮ হাজার ৩৭৮ জন। সে হিসাবে ব্যাংকগুলোতে নারী কর্মী ১৮ দশমিক ৩২ শতাংশ। অন্যদিকে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর রয়েছেন ১৬ শতাংশ। দেশের ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ১৫ জন নারী চাকরি করেন।
বিশ্বে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য বিষয়ে প্রতিবছর ‘দ্যা গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট’ প্রকাশ করে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম। বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে ২০২০ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ছিল শীর্ষে। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২০ সালে বিশ্বের ১৫৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫০তম। প্রতিবেদনটি বলছে, এমনটা সম্ভব হয়েছে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে। প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি অনুকূল কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা ও প্রতিষ্ঠানের সর্বক্ষেত্রে লৈঙ্গিক সমতা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানসমূহের লৈঙ্গিক সমতা বিষয়ক সূচক পর্যালোচনা করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১১ সালের পহেলা ডিসেম্বর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ব্যাংকগুলোতে ৩০ বছরের কম বয়সি যেসব কর্মী রয়েছেন তাদের মধ্যে ২০ দশমিক ৬২ শতাংশ নারী। ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সি কর্মীদের মধ্যে নারীর হার ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর ৫০ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে এ হার ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর সূচনা পর্যায়ে নারী কর্মী রয়েছেন ১৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। মধ্যবর্তী পর্যায়ে আছেন ১৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। হিসাবে দেখা গেছে, ব্যাংকিং খাতে নারীদের অংশগ্রহণ প্রারম্ভিক পর্যায়ে বেশি।

আরও পড়ুন:
এখনও সংগ্রাম চলছে নারী আইনজীবীদের

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকে কর্মরত মোট নারী কর্মীদের মধ্যে ২০২০ সালের শেষ ছয় মাসে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ চাকরি বদল করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ব্যাংক খাতের মোট পরিচালকদের ১২ দশমিক ২০ শতাংশ নারী। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নারী পরিচালক রয়েছেন বিদেশি মালিকানার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে। এসব ব্যাংকের পরিচালকদের ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ নারী। বেসরকারি ব্যাংকের ১২ দশমিক ৮৫ শতাংশ পরিচালক নারী। আর রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে এ হার ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

এদিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা চালু করেছে। ব্যাংকগুলো মাঝে মধ্যে লৈঙ্গিক সমতা বিষয়ক সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকে। ব্যাংকগুলোর নেওয়া এসব উদ্যোগের ফলে নারীরা স্বাচ্ছন্দে চাকরি করতে পারছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকও সময়ে সময়ে এসব সুবিধার বিষয়ে তদারকি করে থাকে।

জানা গেছে, দেশের ৫৯টি তপশিলি ব্যাংকে কর্মরত নারী কর্মীদের জন্য ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি কার্যকর রয়েছে। ২৭টি ব্যাংক শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করেছে। ৪৮টি তফশিলি ব্যাংকের লৈঙ্গিক হয়রানি বন্ধের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। অবশ্য ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।