হামুন ’ মোকাবেলায় প্রস্তুত আমতলীর ১১১ সাইক্লোন শেল্টার
- আপডেট টাইম : ০৩:২৭:৩৬ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩
- / ১৩৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
ঘূর্নিঝড় হামুন মোকাবেলায় আমতলী উপজেলায় ১১১টি সাইক্লোন সেল্টার প্রস্তত রাখা হয়েছে। সোমবার বিকেল ও মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় উপজেলা দুর্যোগ প্রস্ততি কমিটির জরুরী সভায় নদীতীরবর্তী মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সাইক্লোন সেল্টারে নিয়ে আসার জন্য সিদান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল প্রস্ততি সম্পন্ন করে ২৮৮০জন সিপিপি এবং বিভিন্ন বেসরকারী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা মাঠ পর্যায়ে ঝুকিপূর্ন মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্নিঝড় হামুনের প্রভাবে উপকূলীয় আমতলী ও তালতলী উপজেলায় মঙ্গলবার সকাল থেকে গুমট আবহাওয়া বিরাজ করছে এবং থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে এবং মৃদু বাতাস বইছে। শহরে মানুষের তেমন একটা আনাগোনা নেই।
হামুন মোকাবেলায় আমতলী তালতলীসহ উপকূলীয় এলাকায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আমতলী উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্নিঝড় হামুন মোকাবেলায় সোমবার বিকেলে এবং মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় দুদফা প্রস্তুতি মূলক সভা করা হয়েছে। সভায় সরকারী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন বেসরকারী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল ধরনের প্রস্ততি গ্রহন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জামাল হোসাইন।
হামুন মোকাবেলায় আমতলীর বিভিন্ন এলাকায় এনএসএস ও দাতা সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের ৫০০ শ’স্বেচ্ছাসেবক ঝুকিপূর্ন এলাকা থেকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা এবং দুর্যোগের বার্তা প্রচার করছে বলে জানিয়েছেন নজরুর স্মৃতি সংসদ (এনএনএসএস) এর নির্বাহী পরিচালক শাহাবুদ্দিন পাননা।
আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেলী পারভীন মালা জানান, নদীতীরবর্তী মানুষকে নিরাপদ আম্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য আমি নিজে এলাকায় কাজ করছি। তবে বালিয়াতলী, পশুর বুনিয়াসহ কয়েকটি গ্রামের বন্যানিয়ন্ত্রন বাধ ঝুকিতে থাকায় মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।
আমতলী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মেতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, আমতলী সদর ইউনিয়নের লোছাসহ কিছু এলাকা পায়রা নদীর তীরবতর্ী হওয়ায় সেখানকার মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে তাদেরকে নিরাপদ আম্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছে।
আমতলী উপজেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় “হামুন ” মোকাবেলায় উপজেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি ২৩৮০ জন স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগের বার্তা প্রচারসহ নদীতীরবতর্ী ঝুকিপূর্ন জায়গা সরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে।
আমতলী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. মতিয়ার রহমান বলেন, পৌরসভার পাশ দিয়ে প্রমত্তা পায়রা নদী প্রবাহিত। এই নদীতীরবতর্ী ১, ৪,৫, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড অবস্থিত হওয়ায় এখানকার প্রায় ৭ হাজার মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। এসকল মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে এজন্য আশ্রয় কেন্দ্রে শুকনো খাবার, খিচুরি এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুম্পা বলেন, হামুন মোকাবেলায় মঙ্গলবার সকালে জরুরী সভা করে সকল ধরনের প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে। উপজেলার ৫৫টি সাইক্লোন সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এবং ১১৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনার কাজ করছে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, জরুরী সভা করে হামুন মোকাবেলায় সকল ধরনের প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে। এজন্য ১১১টি সাইক্লোন সেল্টার প্রস্তত করে সেখানে নদীতীরবতর্ী সকল মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নিয়ে আসার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া সিপিপি এবং বিভিন্ন বেসরকারী সংগঠনের ২৮৮০ জন স্বেচ্ছাসেবক মাঠ পর্যায়ে মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনার জন্য কাজ করছে। এবং প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং অন্যান্য সামগ্রী মজুদ রাখা হয়েছে।