ঢাকা ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
সিএমপি ইপিজেড থানা পুলিশের অভিযানে সাজা ভুক্ত পলাতক আসামী জাকির হোসেন গ্রেফতার জামালপুরে লেবু বাগান করে অধিকাংশ কৃষক স্বাবলম্বি শিবগঞ্জে এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতা হানি ঘটিযে ভিডিও চিত্র ধারণের প্রতিকার  চেয়ে উপজেলা  নির্বাহী অফিসার কাছে আবেদন এলজিইডি’র কর্মকর্তা আশরাফুলের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ সাংবাদিক খালেক’র পিতার মৃত্যুতে লোহাগাড়া সাংবাদিক ফোরাম’র শোক নবাবগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন ইবিতে কর্মকর্তাদের শুদ্ধাচার বিষয়ক কর্মশালা আয়োজিত ইবিতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আহবায়ক কমিটি গঠন রানীশংকৈলে বঙ্গবন্ধু ‘র জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মহান স্থাপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪ তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ঠাকুরগাঁও

সিগারেটের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে ক্ষুব্ধ-সাধারণ মানুষ সেই সাথে কর্মীরা

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। বৃহস্পতিবার সংসদে বাজেট উত্থাপনের সময় তিনি এ প্রস্তাব করেন।

উল্লেখ্য যে তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমাতে এবং সেই সাথে রাজস্ব আদায় বাড়াতে তিনি বেশ কয়েকটি সুপারিশ প্রস্তাব করেন।

সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি আওয়ামী লীগ সরকার এটিকে রেওয়াজ প্রবর্তন করেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটের পর এমন মন্তব্য শোনা যায় দেশের নানান শ্রেণী পেশার মানুষের মুখ থেকে, আসুন জেনে নেই প্রস্তাবিত বাজেটে কি কি রয়েছে।

সর্বনিম্ন ধাপের সিগারেটের অর্থাৎ ১০ শলাকার মূল্য ৪৫ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৫৮ শতাংশ ধার্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে,

মধ্যম মানের অর্থাৎ ১০ শলাকার মূল্য ৬৭ টাকা, উচ্চ মানের ১০ শলাকার মূল্য ১১৩ টাকা ও অতি-উচ্চ স্তরের অর্থাৎ ১০ শলাকার মূল্য ১৫০ টাকা এবং এই ৩ মানের সিগারেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৬৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

দেশে বর্তমানে সর্বনিম্ন ধাপে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৩৯ টাকা ও এর সঙ্গে ৫৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, মাঝারি ধাপের অর্থাৎ ১০ শলাকার দাম ৬৩ টাকা এবং উচ্চ ধাপের অর্থাৎ ১০ শলাকার দাম ১০২ টাকা ছিল।

প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে হাতে তৈরি ফিল্টার ছাড়া বিড়ির ২৫ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৮ টাকা, ১২ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৯ টাকা ও ৮ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করাছেন।
সেই সাথে ফিল্টারযুক্ত বিড়ির ২০ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৯ টাকা ও ১০ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৪০ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়।

অন্যদিকে, প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৪৫ টাকা এবং প্রতি ১০ গ্রাম গুলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২৩ টাকা নির্ধারণ করে সম্পূরক শুল্ক ৫৫ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে জনমনে যতটা না সংশয় সৃষ্টি হয়েছে তার চেয়ে বেশি ক্ষুদ্ধ হয়েছেন নানান শ্রেণী পেশার মানুষ, বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ৯৫ ভাগ পুরুষ ধূমপান করে থাকেন, কেউ প্রকাশ্যে কেউ ভাগ গোপনে, বাংলাদেশের প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ হলেও, এই আইনের কেউ ধার ধারে না, এমনকি দেশের আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও এই আইনকে তক্তা করে না।

সিগারেটের সিগারেটের বিষয় করা মন্তব্য গুলো লেখার উপযোগী নয়,
প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে, নানান শ্রেণী পেশার মানুষ, অকথ্যভাবে সবচেয়ে বেশি গালিগালাজ করেছেন, মানুষকে দেখা গিয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্ব গতিতে যতটা না ক্ষুব্ধ হয়েছে তার চেয়ে অধিক পরিমাণ ক্ষুদ্র এই সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধিতে, সংসদে বাজেট পেশ করার আগে থেকেই দেশের নানান জায়গায় সুবিধাভোগী মানুষগুলো প্রতি সলা সিগেরেট এ দুই থেকে তিন টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করছেন, অনেকে বলছেন, মুনাফা খোর যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তবে এই সরকারের কোন অধিকার নেই ফোনে পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক ধার্য করা, আর এই ধরনের কথা বলতে গিয়ে অনেকে বেফাস কথা বলে ফেলেন, সেই সময় আমরা দেখেছি আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মীদেরও এ বিষয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে নানান ধরনের গালাগাল প্রদান করতে, অনেকে বলছেন সিগ্রেটের উপর যেভাবে কর আরো হয় সেই ধরনের কর কেন মদে উপর আরোপ করা হয় না,
আওয়ামী লীগের অনেক কর্মী বলেছেন বঙ্গবন্ধু ধূমপান করতেন,
প্রস্তাব প্রস্তাবিত বাজেটে শেখ হাসিনা সরকার বঙ্গবন্ধুর ধূমপানের বিপক্ষে চলে গিয়েছেন, অনেকে মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘের ভাষণ দেয়ার প্রাক্কালে দেখা গেছে ধূমপান করতে,
আসলে নিজেদের পছন্দমত এবং মনগড়া বিষয়গুলোকে যদি আমাদের সামনে দলীয় আদর্শ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, তবে আমরা সেটা কিভাবে গ্রহণ করব,
বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসতে হলে বঙ্গবন্ধুর ভালো-মন্দ দুটোকে ভালবাসতে হবে,
নয়তো এমন ফ্যাটিক ভালোবাসা দেখানোটা কেবল নিজেদের স্বার্থ হাসিলের ফন্দি বলে অনেকে মন্তব্য করেন।
এর থেকে বোঝা যায় আওয়ামী লীগ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কতটুকু আদর্শ নিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছে। এ ধরনের মন্তব্যগুলো ছিল আওয়ামী লীগের ক্ষুদ্র কর্মীদের।
বিএনপি কর্মী জামাত ইসলামের কর্মী এবং সাধারণ জনগণের কথা নাইবা বললাম।

আসুন তাহলে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সিগারেটের বিষয় আলোচনা করা যাক,
শরীয়তের বিধানের সকল কিছুর স্পষ্ট দলীল নেই। আর না থাকলে কোন জিনিস যে হালাল, তা নয়। শরীয়তের স্পষ্ট উক্তিসমুহ থেকে ফকীহগন এমন কিছু নীতি নির্ণয় করেন, যার দ্বারা বলা যায় কোনটা হালাল, আর কোনটা হারাম।

যে সকল নীতির মাধ্যমে বিড়ি-সিগারেটকে আমাদের আলেমসমাজ হারাম বলে উল্লেখ করেছেন বা-তার মন্তব্য করেছেন,
তার কিছু নিম্নরুপঃ- এবং আমাদের সমাজে থাকা সাধারণ মানুষ তাদের নিকট প্রশ্ন ছুড়ে মন্তব্য করেছেন।

(ক) এতে রয়েছে অনর্থক অর্থ অপচয়। আর ইসলামে অপচয় হারাম।

বর্তমানে গরুর মাংস খাওয়াটা আর অর্থ অপচয় করাটা এক সমান কথা,
যদি তেমনটি হয়ে থাকে তবে বর্তমানে গরুর মাংস খাওয়াটাও হারাম।
আর গরু কোরবানিটা কোরবানি দেওয়াটাও এক অর্থে অর্থের অপচয়,
আলিম সমাজে কথার রক্ষার জন্য কি মানুষ কুরবানী দেয়াটা বন্ধ করে দেবে?
কিছু মানুষ আলেমদের টিস্যু ব্যবহার করা নিয়ে মন্তব্য করেন, ঢিলা বা উলুবের জন্য বর্তমানে আলেম সমাজ টিস্যু ব্যবহার করে থাকেন, এখানেও অর্থের অপচয় বলে উল্লেখ করেন অনেকে।

(খ) এতে রয়েছে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি।
আর যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, ইসলামে তা হারাম।

আমাদের আলেম সমাজের মধ্যে বেশিরভাগ আলেমরাই পান খেয়ে থাকেন, পানে থাকা চুন সুগন্ধি যুক্ত জর্দার জন্য কিডনি ও পাকস্থলীতে পাথর হয় বলে বৈজ্ঞানিকভাবে তা প্রমাণিত।
কেন তবে পান কে কেন হারামের আওতায় আনা যাবে না?

(গ) বেশি পরিমাণ পান করলে, তাতে জ্ঞানশূন্যতা আসতে পারে। আর যাতে নেশা, মাদকতা ও জ্ঞানশূন্যতা আসে, ইসলামে তা হারাম।

এই মন্তব্যটি নিছক একটি মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়, সিগারেট মাদকের আওতায় আসেনা, সিগারেট পান করলে মানুষ জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়েন না,
এমন মন্তব্য করে আলিম সমাজ, সাধারণ মানুষের কাছে তারা ছোট হয়ে গেলে।
একসাথে ২০ টি সিগারেট পান করলেও কোন প্রকার নেশা হয় না।

(ঘ) এতে দুর্গন্ধ আছে। এর দুর্গন্ধে অধূমপায়ীরা কষ্ট পায়। সুতরাং তা পবিত্র জিনিস নয়। আর ইসলাম পবিত্র জিনিস খাওয়াকে হালাল এবং অপবিত্র জিনিস খাওয়াকে হারাম ঘোষণা করেছে।

রমজান মাসে রোজা থাকার পর মানুষের মুখে যে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়, সেই দুর্গন্ধ কে আল্লাহ পছন্দ করে করেন বলে উল্লেখ করেছেন, এখানে নিজেদের মনগড়া কথাকে ইসলামিক দলিল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

সিগারেটের বিষয়ে মতামত দিতে গিয়ে এক ধূমপায়ী বলেন, সিগারেট কারো কাছে প্রয়োজন, আবার কারো শখ। সিগারেটের দাম বাড়ালে ব্যবহার কমে যাবে, এমনটা ঠিক না। দাম বাড়লে অনেকে সিগারেট বাদ দিয়ে ই-সিগারেট বা ভেপ ব্যবহার করবেন। যার দীর্ঘমেয়াদি ফল এখনও অনিশ্চিত। তাই সিগারেটের দাম বাড়ানোর চেয়ে এর ব্যবহার কমানোর বিষয়ে জোর দেয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রাইহান বলেন, সিগারেট মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এর ব্যবহার অবশ্যই কমাতে হবে। তবে বর্তমানে যে হারে কর আরোপ হয়, এতে করে ব্র্যান্ডের সিগারেটগুলো ছেড়ে ধূমপায়ীরা কমদামি সিগারেটের দিকে ঝুঁকবে। তাই কমদামি সিগারেটেরও দাম বাড়াতে হবে। পাশাপাশি সঠিক ফল পেতে তামাকবিরোধী প্রচারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলে মনে করেন এ ঢাবি শিক্ষক।

শুধুমাত্র রাজস্ব আদায়ের জন্য সিগারেটের দাম বাড়ালে জনস্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি হবে না বলেও মনে করেন তিনি। অধ্যাপক সেলিম রাইহান বলেন, শুধু দাম বাড়ানোর পলিসি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সর্বোপরি ধূমপান যত সম্ভব কমানো যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে। এজন্য উচ্চ কর হার ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তামাক নিষিদ্ধ করার দাবি জানান তিনি।

সরকারের ২০৪০ সালের মধ্যে মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এর জন্য এখন থেকেই কাজ করতে হবে। হঠাৎ করে ২০৪০ সালে গিয়ে কাজ করলে হবে না। এখন থেকেই পরিকল্পনা ঠিক করে এগুতে হবে। এক্ষেত্রে পলিসি তৈরি করার পাশাপাশি তামাকবিরোধী ব্যাপক প্রচারণা চালানোর পরামর্শ দেন তিনি।

আরো খবর.......

জনপ্রিয় সংবাদ

সিএমপি ইপিজেড থানা পুলিশের অভিযানে সাজা ভুক্ত পলাতক আসামী জাকির হোসেন গ্রেফতার

সিগারেটের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে ক্ষুব্ধ-সাধারণ মানুষ সেই সাথে কর্মীরা

আপডেট টাইম : ০৮:০১:৪১ অপরাহ্ণ, শনিবার, ৩ জুন ২০২৩

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। বৃহস্পতিবার সংসদে বাজেট উত্থাপনের সময় তিনি এ প্রস্তাব করেন।

উল্লেখ্য যে তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমাতে এবং সেই সাথে রাজস্ব আদায় বাড়াতে তিনি বেশ কয়েকটি সুপারিশ প্রস্তাব করেন।

সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি আওয়ামী লীগ সরকার এটিকে রেওয়াজ প্রবর্তন করেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটের পর এমন মন্তব্য শোনা যায় দেশের নানান শ্রেণী পেশার মানুষের মুখ থেকে, আসুন জেনে নেই প্রস্তাবিত বাজেটে কি কি রয়েছে।

সর্বনিম্ন ধাপের সিগারেটের অর্থাৎ ১০ শলাকার মূল্য ৪৫ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৫৮ শতাংশ ধার্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে,

মধ্যম মানের অর্থাৎ ১০ শলাকার মূল্য ৬৭ টাকা, উচ্চ মানের ১০ শলাকার মূল্য ১১৩ টাকা ও অতি-উচ্চ স্তরের অর্থাৎ ১০ শলাকার মূল্য ১৫০ টাকা এবং এই ৩ মানের সিগারেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৬৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

দেশে বর্তমানে সর্বনিম্ন ধাপে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৩৯ টাকা ও এর সঙ্গে ৫৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, মাঝারি ধাপের অর্থাৎ ১০ শলাকার দাম ৬৩ টাকা এবং উচ্চ ধাপের অর্থাৎ ১০ শলাকার দাম ১০২ টাকা ছিল।

প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে হাতে তৈরি ফিল্টার ছাড়া বিড়ির ২৫ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৮ টাকা, ১২ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৯ টাকা ও ৮ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করাছেন।
সেই সাথে ফিল্টারযুক্ত বিড়ির ২০ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৯ টাকা ও ১০ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৪০ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়।

অন্যদিকে, প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৪৫ টাকা এবং প্রতি ১০ গ্রাম গুলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২৩ টাকা নির্ধারণ করে সম্পূরক শুল্ক ৫৫ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে জনমনে যতটা না সংশয় সৃষ্টি হয়েছে তার চেয়ে বেশি ক্ষুদ্ধ হয়েছেন নানান শ্রেণী পেশার মানুষ, বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ৯৫ ভাগ পুরুষ ধূমপান করে থাকেন, কেউ প্রকাশ্যে কেউ ভাগ গোপনে, বাংলাদেশের প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ হলেও, এই আইনের কেউ ধার ধারে না, এমনকি দেশের আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও এই আইনকে তক্তা করে না।

সিগারেটের সিগারেটের বিষয় করা মন্তব্য গুলো লেখার উপযোগী নয়,
প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে, নানান শ্রেণী পেশার মানুষ, অকথ্যভাবে সবচেয়ে বেশি গালিগালাজ করেছেন, মানুষকে দেখা গিয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্ব গতিতে যতটা না ক্ষুব্ধ হয়েছে তার চেয়ে অধিক পরিমাণ ক্ষুদ্র এই সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধিতে, সংসদে বাজেট পেশ করার আগে থেকেই দেশের নানান জায়গায় সুবিধাভোগী মানুষগুলো প্রতি সলা সিগেরেট এ দুই থেকে তিন টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করছেন, অনেকে বলছেন, মুনাফা খোর যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তবে এই সরকারের কোন অধিকার নেই ফোনে পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক ধার্য করা, আর এই ধরনের কথা বলতে গিয়ে অনেকে বেফাস কথা বলে ফেলেন, সেই সময় আমরা দেখেছি আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মীদেরও এ বিষয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে নানান ধরনের গালাগাল প্রদান করতে, অনেকে বলছেন সিগ্রেটের উপর যেভাবে কর আরো হয় সেই ধরনের কর কেন মদে উপর আরোপ করা হয় না,
আওয়ামী লীগের অনেক কর্মী বলেছেন বঙ্গবন্ধু ধূমপান করতেন,
প্রস্তাব প্রস্তাবিত বাজেটে শেখ হাসিনা সরকার বঙ্গবন্ধুর ধূমপানের বিপক্ষে চলে গিয়েছেন, অনেকে মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘের ভাষণ দেয়ার প্রাক্কালে দেখা গেছে ধূমপান করতে,
আসলে নিজেদের পছন্দমত এবং মনগড়া বিষয়গুলোকে যদি আমাদের সামনে দলীয় আদর্শ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, তবে আমরা সেটা কিভাবে গ্রহণ করব,
বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসতে হলে বঙ্গবন্ধুর ভালো-মন্দ দুটোকে ভালবাসতে হবে,
নয়তো এমন ফ্যাটিক ভালোবাসা দেখানোটা কেবল নিজেদের স্বার্থ হাসিলের ফন্দি বলে অনেকে মন্তব্য করেন।
এর থেকে বোঝা যায় আওয়ামী লীগ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কতটুকু আদর্শ নিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছে। এ ধরনের মন্তব্যগুলো ছিল আওয়ামী লীগের ক্ষুদ্র কর্মীদের।
বিএনপি কর্মী জামাত ইসলামের কর্মী এবং সাধারণ জনগণের কথা নাইবা বললাম।

আসুন তাহলে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সিগারেটের বিষয় আলোচনা করা যাক,
শরীয়তের বিধানের সকল কিছুর স্পষ্ট দলীল নেই। আর না থাকলে কোন জিনিস যে হালাল, তা নয়। শরীয়তের স্পষ্ট উক্তিসমুহ থেকে ফকীহগন এমন কিছু নীতি নির্ণয় করেন, যার দ্বারা বলা যায় কোনটা হালাল, আর কোনটা হারাম।

যে সকল নীতির মাধ্যমে বিড়ি-সিগারেটকে আমাদের আলেমসমাজ হারাম বলে উল্লেখ করেছেন বা-তার মন্তব্য করেছেন,
তার কিছু নিম্নরুপঃ- এবং আমাদের সমাজে থাকা সাধারণ মানুষ তাদের নিকট প্রশ্ন ছুড়ে মন্তব্য করেছেন।

(ক) এতে রয়েছে অনর্থক অর্থ অপচয়। আর ইসলামে অপচয় হারাম।

বর্তমানে গরুর মাংস খাওয়াটা আর অর্থ অপচয় করাটা এক সমান কথা,
যদি তেমনটি হয়ে থাকে তবে বর্তমানে গরুর মাংস খাওয়াটাও হারাম।
আর গরু কোরবানিটা কোরবানি দেওয়াটাও এক অর্থে অর্থের অপচয়,
আলিম সমাজে কথার রক্ষার জন্য কি মানুষ কুরবানী দেয়াটা বন্ধ করে দেবে?
কিছু মানুষ আলেমদের টিস্যু ব্যবহার করা নিয়ে মন্তব্য করেন, ঢিলা বা উলুবের জন্য বর্তমানে আলেম সমাজ টিস্যু ব্যবহার করে থাকেন, এখানেও অর্থের অপচয় বলে উল্লেখ করেন অনেকে।

(খ) এতে রয়েছে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি।
আর যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, ইসলামে তা হারাম।

আমাদের আলেম সমাজের মধ্যে বেশিরভাগ আলেমরাই পান খেয়ে থাকেন, পানে থাকা চুন সুগন্ধি যুক্ত জর্দার জন্য কিডনি ও পাকস্থলীতে পাথর হয় বলে বৈজ্ঞানিকভাবে তা প্রমাণিত।
কেন তবে পান কে কেন হারামের আওতায় আনা যাবে না?

(গ) বেশি পরিমাণ পান করলে, তাতে জ্ঞানশূন্যতা আসতে পারে। আর যাতে নেশা, মাদকতা ও জ্ঞানশূন্যতা আসে, ইসলামে তা হারাম।

এই মন্তব্যটি নিছক একটি মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়, সিগারেট মাদকের আওতায় আসেনা, সিগারেট পান করলে মানুষ জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়েন না,
এমন মন্তব্য করে আলিম সমাজ, সাধারণ মানুষের কাছে তারা ছোট হয়ে গেলে।
একসাথে ২০ টি সিগারেট পান করলেও কোন প্রকার নেশা হয় না।

(ঘ) এতে দুর্গন্ধ আছে। এর দুর্গন্ধে অধূমপায়ীরা কষ্ট পায়। সুতরাং তা পবিত্র জিনিস নয়। আর ইসলাম পবিত্র জিনিস খাওয়াকে হালাল এবং অপবিত্র জিনিস খাওয়াকে হারাম ঘোষণা করেছে।

রমজান মাসে রোজা থাকার পর মানুষের মুখে যে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়, সেই দুর্গন্ধ কে আল্লাহ পছন্দ করে করেন বলে উল্লেখ করেছেন, এখানে নিজেদের মনগড়া কথাকে ইসলামিক দলিল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

সিগারেটের বিষয়ে মতামত দিতে গিয়ে এক ধূমপায়ী বলেন, সিগারেট কারো কাছে প্রয়োজন, আবার কারো শখ। সিগারেটের দাম বাড়ালে ব্যবহার কমে যাবে, এমনটা ঠিক না। দাম বাড়লে অনেকে সিগারেট বাদ দিয়ে ই-সিগারেট বা ভেপ ব্যবহার করবেন। যার দীর্ঘমেয়াদি ফল এখনও অনিশ্চিত। তাই সিগারেটের দাম বাড়ানোর চেয়ে এর ব্যবহার কমানোর বিষয়ে জোর দেয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রাইহান বলেন, সিগারেট মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এর ব্যবহার অবশ্যই কমাতে হবে। তবে বর্তমানে যে হারে কর আরোপ হয়, এতে করে ব্র্যান্ডের সিগারেটগুলো ছেড়ে ধূমপায়ীরা কমদামি সিগারেটের দিকে ঝুঁকবে। তাই কমদামি সিগারেটেরও দাম বাড়াতে হবে। পাশাপাশি সঠিক ফল পেতে তামাকবিরোধী প্রচারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলে মনে করেন এ ঢাবি শিক্ষক।

শুধুমাত্র রাজস্ব আদায়ের জন্য সিগারেটের দাম বাড়ালে জনস্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি হবে না বলেও মনে করেন তিনি। অধ্যাপক সেলিম রাইহান বলেন, শুধু দাম বাড়ানোর পলিসি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সর্বোপরি ধূমপান যত সম্ভব কমানো যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে। এজন্য উচ্চ কর হার ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তামাক নিষিদ্ধ করার দাবি জানান তিনি।

সরকারের ২০৪০ সালের মধ্যে মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এর জন্য এখন থেকেই কাজ করতে হবে। হঠাৎ করে ২০৪০ সালে গিয়ে কাজ করলে হবে না। এখন থেকেই পরিকল্পনা ঠিক করে এগুতে হবে। এক্ষেত্রে পলিসি তৈরি করার পাশাপাশি তামাকবিরোধী ব্যাপক প্রচারণা চালানোর পরামর্শ দেন তিনি।