নাজিরপুরে ভাসমান নৌকার হাটে জমজমাট বেঁচা কেনা
- আপডেট টাইম : ০৭:৫২:০০ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩
- / ২০৯ ৫০০০.০ বার পাঠক
গ্রীষ্মের তাপদাহ প্রকৃতিকে সজল বষর্ণে সিক্ত করে দিয়ে সগৌরবে প্রকৃতিতে এসেছে বর্ষা। গ্রীষ্মের দাবদাহে যখন অতিষ্ঠ প্রাণিকুল, চাতক জল চায় মেঘের কাছে, তখনই বর্ষা-কন্যা আসে বৃষ্টির নূপুর পায়ে, ঝুমুর ঝুমুর মল বাজিয়ে। সজল বর্ষণে রুক্ষ প্রকৃতিকে স্নান করিয়ে পূত-পবিত্র করে দেয় বর্ষা। প্রকৃতি যেন বর্ষার ছোঁয়া পেয়ে সজল হয়ে ওঠে। মেঘ-বালিকাদের অবাধ বিচরণ আকাশকে যেন মাটির কাছে টেনে আনে। বর্ষার সমাগমে খাল-বিল, নদী-নালা, পুকুর-ডোবা পানিতে থৈ থৈ করে, গ্রামগুলো দ্বীপের মতো পানির বুকে ভাসে। আর এ বর্ষাকে কেন্দ্র করে পিরোজপুরের নাজিরপুরের বিলাঞ্চলের মনোহরপুর গ্রামে জমজমাট ভাসমান নৌকায় সবজির বাজার, সাপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই দুই দিন এ ভাসমান নৌকায় সবজির হাট বসে। এছাড়া নাজিরপুরে বৈঠাকাঠা বেলুয়া নদীতে ও জমে উঠেছে বৈঠাকাঠা ভাসমান সবজি বাজার। জেলা শহর থেকে ৪৩ কিলোমিটার উত্তর দিকে এ ভাসমান সবজি বাজার অবস্থিত।
কৃষি প্রধান এ উপজেলায় বেশির ভাগ কৃষিপণ্য এ অঞ্চলে উৎপাদন হয়ে থাকে। ভাসমান এ সবজি উৎপাদনে এ অঞ্চলের কৃষকরা সারা দেশে সুনাম অর্জন করেছে। উৎপাদিত কৃষিপণ্য নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানী করা হয়। তাছাড়া ভাসমান বাজারটি বহুল প্রচারিত বিধায় দেশের চিতলমারী ,মোড়েলগঞ্জ,বাগেরহাট টুংঙ্গিপাড়া সহ অন্যান্য জেলার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য এ বাজারে নিয়ে এসে পাইকারী বিক্রয় করে।
বর্তমানে এ হাটে সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার এ ভাসমান বাজারে বরবটি, কুমরা, পুইঁশাক, করলা, পটল, কাঁচকলা, বিভিন্ন গাছের চারা ইত্যাদি কৃষি পণ্যের ব্যাপক সমারোহ ঘটে। এ বাজার থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কৃষি পণ্য পাইকারী ক্রয় করে বিভিন্ন বাজাারে বিক্রয় করে। আষাঢ় মাস মানে বর্ষা কালেই বাজারটি জমে উঠে।
নদীর মধ্যে প্রতিটি সবজি ভরা নৌকাই যেন মনে হয় এক একটি দোকান ঘর। বাজারের দিনে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার লোকজন দৃষ্টি নন্দন এ ভাসমান বাজার দেখতে আসে। ধান, নদী ও খাল কৃষি এ তিন নিয়ে নাজিরপুর উপজেলা গঠিত। উপজেলার চারদিকে নদী আর খাল জালের মতো ছড়িয়ে আছে। অনুন্নত সড়কের কারনে প্রায় ১’শ বছর পূর্বে এলাকাবাসীর প্রয়োজনের তাগিদে এ ভাসমান বাজারের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে রাস্তাঘাট উন্নত হলে ও ভাসমান বাজারটি এখন ও কালের স্বাক্ষী হয়ে চলমান রয়েছে।
বৈঠাকাঠা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা তালুকদার জানান, বাজারটি শতবর্ষ পূর্বে সৃষ্টি হয়ে আজও ভাসমান বাজারটি কালের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। এ বাজারে বিভিন্ন জেলা থেকে কাচাঁমাল ট্রলার এবং নৌকা যোগে আসে আবার ভোলা, পাথরঘাটা, বামনা জেলা থেকে পাইকার এসে মাল ক্রয় করে নিয়ে যায়।