ঢাকা ০২:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০২ মার্চ ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রথম তারাবিতে মসজিদে-মসজিদে মুসল্লিদের ঢল কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ২১ মামলার আসামী আল মামুন মাদকসহ গ্রেফতার গাইবান্ধার পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ মঠবাড়ীয়া বৈষম্য বিরোধী শিক্ষক ফোরাম মঠবাড়ীয়া উপজেলা কতৃক জাতীয় প্রেস ক্লাবে বে সরকারি শিক্ষা জাতীয় করন,শতভাগ উৎসব ভাতা, সরকার নিয়মে বাড়ি ভাড়া পাওয়ার দাবিতে আন্দোলন রত শিক্ষক কর্মচারীদের উপর হামলার প্রতিবাদ,তীব্র নিন্দা ও হামলা কারীদের দৃষ্টাত মুলক শাস্তির দাবি পবিত্র রমজান উপলক্ষে ডিবির অলআউট অ্যাকশন শুরু: রেজাউল করিম ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইবো না, তারই আমার কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ সীমান্তে ফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত, লাশ নিয়ে গেল বিএসএফ রোববার চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ বাংলাদেশে ভারত ও পাকিস্তানপন্থী রাজনীতির ঠাঁই হবে না: নাহিদ রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় সরকারকে আপসহীন হতে হবে

শিক্ষক দম্পতির লাশ উদ্ধারের প্রায় আড়াই মাস পর মৃত্যুর কারণ উদঘাটন

গাজীপুর টঙ্গী থেকে।।
  • আপডেট টাইম : ০২:৪০:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ নভেম্বর ২০২২
  • / ১৭৮ ৫০০০.০ বার পাঠক

গাজীপুরে প্রাইভেটকার থেকে শিক্ষক দম্পতির লাশ উদ্ধারের প্রায় আড়াই মাস পর মৃত্যুর কারণ উদঘাটন হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। সম্প্রতি প্রাইভেটকারটির ভেতরে একটি বিড়াল রেখে পরীক্ষা করা হয়। এরপর পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির এসির বিষাক্ত গ্যাসেই ওই দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। লাশ উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজীপুর মহানগরের গাছা থানার উপ—পরিদর্শক (এসআই) নাদির উজ্জ—জামান বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষক দম্পতি যে প্রাইভেটকারটি ব্যবহার করেছিলেন সেই গাড়িতে একটি বিড়াল রেখে এসি ছেড়ে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে বিড়ালটি দুর্বল হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে নড়চড়া বন্ধ করে দেয়। ২৬ মিনিটের মাথায় বিড়ালটি মারা যায়। শিক্ষক দম্পতিও বিদ্যালয় থেকে রওনা হওয়ার পর যে স্থান থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়, সেই দূরত্বও ছিল প্রায় একই সময়ের। তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মৃত্যু বিষাক্ত গ্যাস থেকেই হয়েছে। এখন জব্দ করা আলামতের পরীক্ষা—নিরীক্ষা চলছে।
এসআই আরও বলেন, ‘থানা পুলিশ, গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টগেশন (পিবিআই), সিআইডি, র‌্যাব—১ সহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দুই মাসের বেশি সময় ধরে ঘটনাটি তদন্ত করে আসছে। বিভিন্ন তথ্য—উপাত্ত ও আলামত সংগ্রহ করেও ঘটনার কোনও ক্লু খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি আজ পর্যন্ত নিহতদের ভিসেরা ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনও পাওয়া যায়নি।
গাজীপুরের কামারজুরী এলাকার বাসিন্দা টঙ্গীর শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন এ কে এম জিয়াউর রহমান (৫১)। তার স্ত্রী টঙ্গীর আমজাদ আলী সরকার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহমুদা আক্তার (৩৫)। গত ১৭ আগস্ট কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হন তারা। পরদিন ভোরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের খাইলকুর এলাকায় প্রাইভেটবার থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৯ আগস্ট জিয়াউর রহমানের বড় ভাই আতিকুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে গাছা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি দুই লাশের ময়নাতদন্তের ও ভিসেরা প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়নি।
মামলার বাদী আতিকুর রহমান বলেন, ‘পুলিশের এই বিড়াল ব্যাখ্যার কোনও ভিত্তি নেই। আমরা তাদের যুক্তি কোনোভাবেই মানতে পারছি না। পুলিশ তাদের তদন্ত সঠিকভাবে করতে না পারায় এমন ব্যখ্যা দিচ্ছে। গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান শাফি মোহাইমেন বলেন, ‘নিহতদের ভিসেরা প্রতিবেদন না পাওয়ায় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনও দেওয়া হয়নি। তবে এসব পরীক্ষার জন্য তিন মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।
গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইব্রাহীম হোসেন জানান, শিক্ষক দম্পতির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় কোনও ক্লু খুঁজে পাওয়া যায়নি। জিয়াউর রহমানের সহকর্মী ও একাধিক আইনৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু দিন আগে গাড়িতে একটি বিড়াল রেখে পরীক্ষা করা হয়। গাড়ি ও গাড়ির ভেতরে থাকা বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করে পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), বিআরটিএ, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সসহ আরও কয়েকটি সংস্থায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। আরও পরীক্ষা নিরীক্ষার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে বিষয়টি প্রকাশ করা হবে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

শিক্ষক দম্পতির লাশ উদ্ধারের প্রায় আড়াই মাস পর মৃত্যুর কারণ উদঘাটন

আপডেট টাইম : ০২:৪০:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ নভেম্বর ২০২২

গাজীপুরে প্রাইভেটকার থেকে শিক্ষক দম্পতির লাশ উদ্ধারের প্রায় আড়াই মাস পর মৃত্যুর কারণ উদঘাটন হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। সম্প্রতি প্রাইভেটকারটির ভেতরে একটি বিড়াল রেখে পরীক্ষা করা হয়। এরপর পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির এসির বিষাক্ত গ্যাসেই ওই দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। লাশ উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজীপুর মহানগরের গাছা থানার উপ—পরিদর্শক (এসআই) নাদির উজ্জ—জামান বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষক দম্পতি যে প্রাইভেটকারটি ব্যবহার করেছিলেন সেই গাড়িতে একটি বিড়াল রেখে এসি ছেড়ে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে বিড়ালটি দুর্বল হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে নড়চড়া বন্ধ করে দেয়। ২৬ মিনিটের মাথায় বিড়ালটি মারা যায়। শিক্ষক দম্পতিও বিদ্যালয় থেকে রওনা হওয়ার পর যে স্থান থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়, সেই দূরত্বও ছিল প্রায় একই সময়ের। তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মৃত্যু বিষাক্ত গ্যাস থেকেই হয়েছে। এখন জব্দ করা আলামতের পরীক্ষা—নিরীক্ষা চলছে।
এসআই আরও বলেন, ‘থানা পুলিশ, গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টগেশন (পিবিআই), সিআইডি, র‌্যাব—১ সহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দুই মাসের বেশি সময় ধরে ঘটনাটি তদন্ত করে আসছে। বিভিন্ন তথ্য—উপাত্ত ও আলামত সংগ্রহ করেও ঘটনার কোনও ক্লু খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি আজ পর্যন্ত নিহতদের ভিসেরা ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনও পাওয়া যায়নি।
গাজীপুরের কামারজুরী এলাকার বাসিন্দা টঙ্গীর শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন এ কে এম জিয়াউর রহমান (৫১)। তার স্ত্রী টঙ্গীর আমজাদ আলী সরকার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহমুদা আক্তার (৩৫)। গত ১৭ আগস্ট কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হন তারা। পরদিন ভোরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের খাইলকুর এলাকায় প্রাইভেটবার থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৯ আগস্ট জিয়াউর রহমানের বড় ভাই আতিকুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে গাছা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি দুই লাশের ময়নাতদন্তের ও ভিসেরা প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়নি।
মামলার বাদী আতিকুর রহমান বলেন, ‘পুলিশের এই বিড়াল ব্যাখ্যার কোনও ভিত্তি নেই। আমরা তাদের যুক্তি কোনোভাবেই মানতে পারছি না। পুলিশ তাদের তদন্ত সঠিকভাবে করতে না পারায় এমন ব্যখ্যা দিচ্ছে। গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান শাফি মোহাইমেন বলেন, ‘নিহতদের ভিসেরা প্রতিবেদন না পাওয়ায় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনও দেওয়া হয়নি। তবে এসব পরীক্ষার জন্য তিন মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।
গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইব্রাহীম হোসেন জানান, শিক্ষক দম্পতির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় কোনও ক্লু খুঁজে পাওয়া যায়নি। জিয়াউর রহমানের সহকর্মী ও একাধিক আইনৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু দিন আগে গাড়িতে একটি বিড়াল রেখে পরীক্ষা করা হয়। গাড়ি ও গাড়ির ভেতরে থাকা বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করে পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), বিআরটিএ, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সসহ আরও কয়েকটি সংস্থায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। আরও পরীক্ষা নিরীক্ষার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে বিষয়টি প্রকাশ করা হবে।