ঢাকা ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
ভৈরবে সুইচ গিয়ার এক ছিনতাইকারী কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১৪ ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের বিশুদ্ধানন্দ – শুভানন্দ অডিটোরিয়াম অনুষ্ঠিত ২০২৫ সাজেকে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে একাধিক কটেজ ও রেস্টুরেন্টে রমজানে সরকারি অফিসের সময়সূচি ঘোষণা মুসলিম ‘গণহত্যা’র জন্য ক্ষমা চাইলেন সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী সাবেক আইজিপিসহ ১০৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিপিএম-পিপিএম পদক প্রত্যাহার এবার বিপ্লব কুমার সরকার ও মেহেদি হাসান বরখাস্ত ছাত্রীনিবাস থেকে ঢাবি ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার আজমিরীগঞ্জে সিএনজি স্ট্যান্ড দখল নিয় সংঘর্ষ। আহত অর্ধ শতাধিক টঙ্গীতে ডেভিল হান্ট এর অভিযানে আ.লীগের নেত্রী ও তার পাঁচ সহযোগীকে ১৭৫১ পিস ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার

সাংবাদিককে হয়রানির অভিযোগ: বিএমএসএফ ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি নিন্দা জানিয়েছেন

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৪:০৪:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০২২
  • / ২১২ ৫০০০.০ বার পাঠক

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ

মিথ্যা মামলায় জাতীয় দৈনিক দি নিউ নেশন ও প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার প্রতিনিধি সাংবাদিক নেতা মাসুদ রানাকে হয়রানী করায় বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা শাখার তিন ডিবি পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আইজিপি দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে। একইসাথে পরিবারসহ তার নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সোমবার (১৭ এপ্রিল) পুলিশ হেডকোয়াটার্সে উপস্থিত হয়ে ওই লিখিত অভিযোগ করেন। মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এজাহার সাজানো ও ঘুষ গ্রহণ করায় ডিবির এসআই মসরুদ উদ্দিন বিপি (৮৪১৩১৫৪১১১) এবং এএসআই মোঃ ইছহাক হোসেন’র বিরুদ্ধে মেট্রো পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দেয়ার জের ধরে নিজ সহকর্মিদেরকে বাঁচাতে অপর ডিবি সদস্য ফিরোজ আলম (বিপি-৮৬১৩১৫২৬৭১) অনৈতিকভাবে সাংবাদিককে ঘটনার মদদদাতা হিসেবে উল্লেখ করে ওই মামলার চার্জসীটে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই ভুক্তভোগি সাংবাদিক।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামির বাইরে অজ্ঞাত বা পলাতক আসামি নেই। পাশাপাশি আসামিদের রিমান্ড কিংবা ১৬৪ ধারায়ও জবানবন্দী নেই। বিশেষজ্ঞ আইনজীবীরা বিস্ময় প্রকাশ করে জানিয়েছেন, এধরনের ঘটনায় কাউকে চার্জসীটে অন্তর্ভুক্ত করলে সেটা ন্যায়সঙ্গত হয় না, হয়রানী করা হয়।
তথ্যসুত্রে জানা যায়, বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ বাসটার্মিনাল সংলগ্ন ইসলামিয়া হোসেনিয়া মাদ্রাসা রোডস্থ অভিযোগকারী সাংবাদিকের পরিবারের মালিকানাধীন “মেসার্স জীবন মেডিকেল হল” নামে একটি ফার্মেসি রয়েছে। ০৫/১১/২০২১ তারিখ বেলা ১১.২৩ মিনিটের সময় তার ছোট ভাই মোঃ মাহমুদুল হাসান জীবন ফার্মেসীতে বিক্রয় কাজে নিয়োজিত ছিল। সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা যায়, ঐ সময় একজন ক্রেতা তার ভাইয়ের নিকট হইতে ২/৩ পিছ ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানীর এএইচ-৪০০ এ্যালবেন্ডাজোল গ্রুপের কৃমির ঔষধ ক্রয় করে নিয়ে যায়। এর ১৩ মিনিট পরে ঠিক ১১.৩৬ মিনিটে ঐ ক্রেতা সহ বরিশাল মহানগর ডিবির মসরুদ উদ্দিন (বিপি-৮৪১৩১৫৪১১১) নীল বর্ণের পলিথিন ব্যাগে মোড়ানো কিছু ঔষধ নিয়ে আমার দোকানে প্রবেশ করে এবং দোকানের সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দেয় এবং নেশার ইঞ্জেকশন বিক্রি করছো বলে হুমকি দিয়ে দোকানের ক্যাশ বাক্সে থাকা নগদ আনুমানিক ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা তুলে নেয়। পাশাপাশি ডিবি পুলিশ ওষুধ প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা ছাড়াই দোকানে তল্লাশির নামে ওষুধপত্র এলোমেলো করতে থাকে। বিক্রেতা মাহমুদুল হাসান জীবন ডিবি পুলিশের এই কাজের প্রতিবাদ করায় তাকেসহ সোহেল নামে ক্রেতাকেও ডিবি অফিসে নিয়ে যায়। তবে ডিবি অফিসে চলে যাওয়ার ঠিক আগ মুহুর্তে সাংবাদিক মাসুদ রানা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি অফিসে দেখা করার কথা বলে চলে যান। পরে ডিবি অফিসে বসে ফার্মেসির বিক্রেতা মাহমুদুল হাসান জীবনের মোবাইল ফোন দিয়ে অভিযান টিমের সাথে থাকা ডিবির এএসআই মোঃ ইছহাক হোসেন সাংবাদিক মাসুদ রানাকে ডিবি অফিসে আসতে বলে। সেখানে যাওয়ার পর বিকাল ৩ টার সময় সাংবাদিকের কাছ থেকে এএসআই ইছাহাক নগরীর আমতলার মোড় পানির ট্যাংকি মডেল মসজিদের সামনে নিয়ে আসামি ছাড়ার কথা বলে ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা ঘুষ নেয়। কিন্তু টাকা নেওয়ার পরে আসামি না ছেড়ে অপারেশনের রোগীদের অপসোনিন ফার্মার ঘুমের ইজিয়াম ও ইনসেপটা কোম্পানির ব্যথার নেলবান ইঞ্জেকশন উদ্ধার দেখিয়ে মাহমুদুল হাসান জীবন ও সোহেল নামেও ওই ক্রেতাকে উল্টো চালান করে দেয়। মামলা নং-জিআর-৮৩৫/২০২১। পরে আমি ১৬ নভেম্বর ২০২১ ইংরেজি তারিখ ডিবি সদস্য এএসআই ইছহাক’র কাছে ফোন করে টাকা ফেরত চাইলে তিনি “এজাহারভুক্ত ২ নং আসামির কাছে কিছু না পেয়েও ৯ পিচ দিয়ে চালান দিয়েছে এবং ১নং আসামী আমার ভাইকে রিকভারী না দেখিয়ে দোকানের তাকের নিচে উদ্ধার দেখিয়েছি। দু’বছর পর আদালতের বিচারে সুফল পাওয়া যাবে, টাকা যা খেয়েছি হালাল করে খেয়েছি”। সিসি ফুটেজের দৃশ্য ও এএসআই ইছহাকের অডিও রেকর্ডিং কথা অনুযায়ী দোকান থেকে নিষিদ্ধ কোন কিছু উদ্ধার হয়নি পাশাপাশি ক্রেতার পকেট থেকে রিকভারি দেখানো সবই ছিলো নাটকীয়তা।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাসুদ রানা জানান, দুই ডিবি পুলিশের এই প্রতারণার শিকার হওয়ায় ০৭-১২-২০২১ ইংরেজি তারিখ বরিশাল মেট্রোপলিটন (বিএমপি) পুলিশ কমিশনারের কাছে বিচার চেয়ে আবেদন করি। আবেদনকৃত এই অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে প্রমাণস্বরুপ ভিডিও, অডিও রেকর্ডিং এবং লিখিত ও মৌখিক জবানবন্দী জমা দেই। কিন্তু অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কিনা তা জানা যায়নি। বরং পুলিশ কমিশনারের কাছে কেন এই অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তার জের ধরে আমার আবেদনের অভিযুক্ত এসআই মসরুদ উদ্দিন আহমেদ এবং এএসআই ইছহাক তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফিরোজ আলমের সাথে যোগসাজস করে চার্জসীটে অনৈতিকভাবে মদদদাতা ও মামলার গতিপথ পরিবর্তনের চেষ্টার তথ্য জুড়ে দিয়ে ৩৬(১) এর টেবিল ৮(গ)/১৪(ক)/৩৩(ক) দুটি ধারায় অপরাধ দেখিয়ে আসামি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অথচ মামলার কোথাও অজ্ঞাত/পলাতক আসামি নেই এবং এজাহারভুক্ত আসামিদের রিমান্ড কিংবা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেই।

ভুক্তভোগি ওই সাংবাদিক মাসুদ রানা আরো বলেন, যদি এজাহারভূক্ত আসামিদের ভাষ্য বা জবানবন্দী অনুযায়ী অপরাধের মদদ দিয়ে থাকি একইসাথে মামলার গতিপথ পরিবর্তনের চেষ্টা করে থাকি তাহলে দোকানে অভিযানের দিন কিংবা মামলা এজাহারের সময় আমাকে কেন গ্রেফতার করেনি ডিবি পুলিশের এই টিম? মূলত ডিবি পুলিশ সদস্য এসআই মসরুদ উদ্দিন আহমেদ ও এএসআই ইছহাক হোসেনের বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনারের কাছে যে অভিযোগ দিয়েছি তার রেশ হিসেবে তদন্তকারি কর্মকর্তা ফিরোজ আলমের সাথে যোগসাজশ করে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে মামলার আসামি হিসেবে আমাকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
এছাড়াও তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মামলার ষড়যন্ত্র ও বিভিন্ন থানার মামলায় আসামি হিসেবে নাম ঢুকিয়ে দিয়ে হয়রানী করতে পারেন বলে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে তথ্য পেয়ে আইজিপির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান সাংবাদিক মাসুদ রানা।
এ বিষয়ে বারিশাল মেট্রো পুলিশ কমিশনার সাহাবুদ্দিন খান জানান, আমার কাছে অভিযোগ এসেছিলো আমি তদন্ত করতে একজনকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। কোন অন্যায় কাজ হয়ে থাকলে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

উল্লেখ্য, সাংবাদিক মাসুদ রানা বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির বরিশালের সভাপতি।

এদিকে, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি কেন্দ্রীয় ও বরিশালের নেতৃবৃন্দ সাংবাদিক মাসুদ রানাকে মিথ্যে ও হয়রানিমূলক আসামী করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অনতিবিলম্বে বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। অন্যথায় তারা এই মিথ্যে মামলার প্রতিবাদে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সাংবাদিককে হয়রানির অভিযোগ: বিএমএসএফ ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি নিন্দা জানিয়েছেন

আপডেট টাইম : ০৪:০৪:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০২২

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ

মিথ্যা মামলায় জাতীয় দৈনিক দি নিউ নেশন ও প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার প্রতিনিধি সাংবাদিক নেতা মাসুদ রানাকে হয়রানী করায় বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা শাখার তিন ডিবি পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আইজিপি দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে। একইসাথে পরিবারসহ তার নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সোমবার (১৭ এপ্রিল) পুলিশ হেডকোয়াটার্সে উপস্থিত হয়ে ওই লিখিত অভিযোগ করেন। মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এজাহার সাজানো ও ঘুষ গ্রহণ করায় ডিবির এসআই মসরুদ উদ্দিন বিপি (৮৪১৩১৫৪১১১) এবং এএসআই মোঃ ইছহাক হোসেন’র বিরুদ্ধে মেট্রো পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দেয়ার জের ধরে নিজ সহকর্মিদেরকে বাঁচাতে অপর ডিবি সদস্য ফিরোজ আলম (বিপি-৮৬১৩১৫২৬৭১) অনৈতিকভাবে সাংবাদিককে ঘটনার মদদদাতা হিসেবে উল্লেখ করে ওই মামলার চার্জসীটে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই ভুক্তভোগি সাংবাদিক।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামির বাইরে অজ্ঞাত বা পলাতক আসামি নেই। পাশাপাশি আসামিদের রিমান্ড কিংবা ১৬৪ ধারায়ও জবানবন্দী নেই। বিশেষজ্ঞ আইনজীবীরা বিস্ময় প্রকাশ করে জানিয়েছেন, এধরনের ঘটনায় কাউকে চার্জসীটে অন্তর্ভুক্ত করলে সেটা ন্যায়সঙ্গত হয় না, হয়রানী করা হয়।
তথ্যসুত্রে জানা যায়, বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ বাসটার্মিনাল সংলগ্ন ইসলামিয়া হোসেনিয়া মাদ্রাসা রোডস্থ অভিযোগকারী সাংবাদিকের পরিবারের মালিকানাধীন “মেসার্স জীবন মেডিকেল হল” নামে একটি ফার্মেসি রয়েছে। ০৫/১১/২০২১ তারিখ বেলা ১১.২৩ মিনিটের সময় তার ছোট ভাই মোঃ মাহমুদুল হাসান জীবন ফার্মেসীতে বিক্রয় কাজে নিয়োজিত ছিল। সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা যায়, ঐ সময় একজন ক্রেতা তার ভাইয়ের নিকট হইতে ২/৩ পিছ ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানীর এএইচ-৪০০ এ্যালবেন্ডাজোল গ্রুপের কৃমির ঔষধ ক্রয় করে নিয়ে যায়। এর ১৩ মিনিট পরে ঠিক ১১.৩৬ মিনিটে ঐ ক্রেতা সহ বরিশাল মহানগর ডিবির মসরুদ উদ্দিন (বিপি-৮৪১৩১৫৪১১১) নীল বর্ণের পলিথিন ব্যাগে মোড়ানো কিছু ঔষধ নিয়ে আমার দোকানে প্রবেশ করে এবং দোকানের সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দেয় এবং নেশার ইঞ্জেকশন বিক্রি করছো বলে হুমকি দিয়ে দোকানের ক্যাশ বাক্সে থাকা নগদ আনুমানিক ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা তুলে নেয়। পাশাপাশি ডিবি পুলিশ ওষুধ প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা ছাড়াই দোকানে তল্লাশির নামে ওষুধপত্র এলোমেলো করতে থাকে। বিক্রেতা মাহমুদুল হাসান জীবন ডিবি পুলিশের এই কাজের প্রতিবাদ করায় তাকেসহ সোহেল নামে ক্রেতাকেও ডিবি অফিসে নিয়ে যায়। তবে ডিবি অফিসে চলে যাওয়ার ঠিক আগ মুহুর্তে সাংবাদিক মাসুদ রানা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি অফিসে দেখা করার কথা বলে চলে যান। পরে ডিবি অফিসে বসে ফার্মেসির বিক্রেতা মাহমুদুল হাসান জীবনের মোবাইল ফোন দিয়ে অভিযান টিমের সাথে থাকা ডিবির এএসআই মোঃ ইছহাক হোসেন সাংবাদিক মাসুদ রানাকে ডিবি অফিসে আসতে বলে। সেখানে যাওয়ার পর বিকাল ৩ টার সময় সাংবাদিকের কাছ থেকে এএসআই ইছাহাক নগরীর আমতলার মোড় পানির ট্যাংকি মডেল মসজিদের সামনে নিয়ে আসামি ছাড়ার কথা বলে ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা ঘুষ নেয়। কিন্তু টাকা নেওয়ার পরে আসামি না ছেড়ে অপারেশনের রোগীদের অপসোনিন ফার্মার ঘুমের ইজিয়াম ও ইনসেপটা কোম্পানির ব্যথার নেলবান ইঞ্জেকশন উদ্ধার দেখিয়ে মাহমুদুল হাসান জীবন ও সোহেল নামেও ওই ক্রেতাকে উল্টো চালান করে দেয়। মামলা নং-জিআর-৮৩৫/২০২১। পরে আমি ১৬ নভেম্বর ২০২১ ইংরেজি তারিখ ডিবি সদস্য এএসআই ইছহাক’র কাছে ফোন করে টাকা ফেরত চাইলে তিনি “এজাহারভুক্ত ২ নং আসামির কাছে কিছু না পেয়েও ৯ পিচ দিয়ে চালান দিয়েছে এবং ১নং আসামী আমার ভাইকে রিকভারী না দেখিয়ে দোকানের তাকের নিচে উদ্ধার দেখিয়েছি। দু’বছর পর আদালতের বিচারে সুফল পাওয়া যাবে, টাকা যা খেয়েছি হালাল করে খেয়েছি”। সিসি ফুটেজের দৃশ্য ও এএসআই ইছহাকের অডিও রেকর্ডিং কথা অনুযায়ী দোকান থেকে নিষিদ্ধ কোন কিছু উদ্ধার হয়নি পাশাপাশি ক্রেতার পকেট থেকে রিকভারি দেখানো সবই ছিলো নাটকীয়তা।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাসুদ রানা জানান, দুই ডিবি পুলিশের এই প্রতারণার শিকার হওয়ায় ০৭-১২-২০২১ ইংরেজি তারিখ বরিশাল মেট্রোপলিটন (বিএমপি) পুলিশ কমিশনারের কাছে বিচার চেয়ে আবেদন করি। আবেদনকৃত এই অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে প্রমাণস্বরুপ ভিডিও, অডিও রেকর্ডিং এবং লিখিত ও মৌখিক জবানবন্দী জমা দেই। কিন্তু অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কিনা তা জানা যায়নি। বরং পুলিশ কমিশনারের কাছে কেন এই অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তার জের ধরে আমার আবেদনের অভিযুক্ত এসআই মসরুদ উদ্দিন আহমেদ এবং এএসআই ইছহাক তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফিরোজ আলমের সাথে যোগসাজস করে চার্জসীটে অনৈতিকভাবে মদদদাতা ও মামলার গতিপথ পরিবর্তনের চেষ্টার তথ্য জুড়ে দিয়ে ৩৬(১) এর টেবিল ৮(গ)/১৪(ক)/৩৩(ক) দুটি ধারায় অপরাধ দেখিয়ে আসামি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অথচ মামলার কোথাও অজ্ঞাত/পলাতক আসামি নেই এবং এজাহারভুক্ত আসামিদের রিমান্ড কিংবা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেই।

ভুক্তভোগি ওই সাংবাদিক মাসুদ রানা আরো বলেন, যদি এজাহারভূক্ত আসামিদের ভাষ্য বা জবানবন্দী অনুযায়ী অপরাধের মদদ দিয়ে থাকি একইসাথে মামলার গতিপথ পরিবর্তনের চেষ্টা করে থাকি তাহলে দোকানে অভিযানের দিন কিংবা মামলা এজাহারের সময় আমাকে কেন গ্রেফতার করেনি ডিবি পুলিশের এই টিম? মূলত ডিবি পুলিশ সদস্য এসআই মসরুদ উদ্দিন আহমেদ ও এএসআই ইছহাক হোসেনের বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনারের কাছে যে অভিযোগ দিয়েছি তার রেশ হিসেবে তদন্তকারি কর্মকর্তা ফিরোজ আলমের সাথে যোগসাজশ করে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে মামলার আসামি হিসেবে আমাকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
এছাড়াও তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মামলার ষড়যন্ত্র ও বিভিন্ন থানার মামলায় আসামি হিসেবে নাম ঢুকিয়ে দিয়ে হয়রানী করতে পারেন বলে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে তথ্য পেয়ে আইজিপির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান সাংবাদিক মাসুদ রানা।
এ বিষয়ে বারিশাল মেট্রো পুলিশ কমিশনার সাহাবুদ্দিন খান জানান, আমার কাছে অভিযোগ এসেছিলো আমি তদন্ত করতে একজনকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। কোন অন্যায় কাজ হয়ে থাকলে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

উল্লেখ্য, সাংবাদিক মাসুদ রানা বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির বরিশালের সভাপতি।

এদিকে, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি কেন্দ্রীয় ও বরিশালের নেতৃবৃন্দ সাংবাদিক মাসুদ রানাকে মিথ্যে ও হয়রানিমূলক আসামী করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অনতিবিলম্বে বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। অন্যথায় তারা এই মিথ্যে মামলার প্রতিবাদে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন।