শান্তির জন্য ব্যবহার ॥ পরমাণু শক্তির অংশ হিসেবে স্থান পেল বাংলাদেশ
- আপডেট টাইম : ০৫:১৬:৫০ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১০ অক্টোবর ২০২১
- / ২৬১ ৫০০০.০ বার পাঠক
রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের রিএ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপন কাজ উদ্বোধনীতে প্রধানমন্ত্রী
দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা
বিশেষ প্রতিনিধি ॥
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আর যেন কখনও পিছিয়ে পড়তে না হয়, এদেশের ওপর আর কখনও যেন কোন ‘শকুনির থাবা’ না পড়ে, বাংলাদেশের এই উন্নতি এবং অগ্রগতি যেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যায় সেজন্য দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পরমাণু শক্তির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আজকে জায়গা করে নিতে পেরেছে। আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। পরমাণু শক্তির একটা অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আজকে স্থান করে নিল, সেটা শান্তির জন্য। পরমাণু শক্তি আমরা দেশের শান্তির জন্য ব্যবহার করব।
বিদ্যুতকে দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে তাঁর সরকারের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, তাঁর সরকার দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলেই আরেকটি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন করবে। আমরা জায়গা খুঁজছি এবং আশা করি এ ব্যাপারে খুব একটা অসুবিধা হবে না। এখানে যদি আরেকটি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট আমরা করতে পারি তাহলে বিদ্যুতের জন্য আমাদের আর অসুবিধা হবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের মূল যন্ত্র রিএ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল (আরএনপিপি-পারমাণবিক চুল্লিপাত্র) স্থাপনের কাজের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এটি উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশে অনেকে না জেনে সমালোচনা করেন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশে একটু কিছু করতে গেলে এত সমালোচনা হয়। নানাভাবে না জেনে, কেউ না বুঝে অনেক কথা বলে ফেলে, অনেকে অনেক কথা লিখে ফেলে। টকশোতে অনেক কথা এটা হচ্ছে বাংলাদেশের নিয়ম।’
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণে রাশিয়ার সহযোগিতার কথা স্মরণ করে তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ আমরা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আর এই পাওয়ার প্লান্টটা হয়ে যাওয়ার পর আমরা দক্ষিণাঞ্চলে জায়গা খুঁজছি। যদিও দক্ষিণাঞ্চলে শক্ত মাটিওয়ালা জায়গা পাওয়া খুবই কঠিন। বিভিন্ন দিক এবং বিভিন্ন জায়গা আমরা সার্ভে করছি, আরেকটি পাওয়ার প্লান্ট আমরা করব। কোথায় ভাল জায়গা পাই এবং আমরা সেটা করতে পারব। আমরা বহুমুখী বিদ্যুত উৎপাদন করে যাচ্ছি এই জন্য যে, এই বিদ্যুত সুবিধা যাতে মানুষ পায় এবং এটা যাতে অব্যাহত থাকে।
প্রকল্প সূত্র মতে, পারমাণবিক চুল্লিপাত্র বসানোর এ ঘটনা পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এর ফলে প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়েই এগিয়ে যাবে। ওই কেন্দ্রের যে যন্ত্রে নিউক্লিয়ার ফুয়েল (পারমাণবিক জ্বালানি) ইউরেনিয়াম থেকে বিদ্যুত উৎপাদন করা হয় তার মূল কাঠামো হচ্ছে এই বিশেষ যন্ত্র, পারমাণবিক চুল্লি)। এটিকে পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের হৃদপিন্ড বলা হয়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন রোসাটমের মহাপরিচালক এ্যালেক্সি লিখাচেভ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব জিয়াউল হাসান স্বাগত বক্তৃতা করেন। প্রকল্প পরিচালক ও পরমাণু বিজ্ঞানী ড. মোঃ শওকত আকবর বিদ্যুত কেন্দ্রের মূল যন্ত্র রিএ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের সময় আরএনপিপি থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন। অনুষ্ঠানে নির্মাণাধীন বিদ্যুত কেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয়। ঈশ্বরদী প্রান্তে শামসুল হক টুকু এমপি, নুরুজ্জামান বিশ্বাস এমপি, গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি, আহমেদ কবীর ফিরোজ এমপি, সংরক্ষিত আসনের এমপি নাদিরা ইয়াসমিন জলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের নিরাপত্তার বিষয়টিতে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে প্রায় ৩ থেকে ৪ স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা আমরা করেছি। পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই রিএ্যাক্টরের কাছে বা এর ভেতরে যারা কাজ করবেন তাদেরও অভিজ্ঞতা এবং প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে, তেমনি পুরো এলাকাটিরও নিরাপত্তার যে প্রয়োজন তা পূরণ করা হয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রতিষ্ঠানকে কাজে লাগানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকল্পের শুরুতেই রাশিয়ার সঙ্গে তাঁর সরকারের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চুক্তি করা হয়েছে। এখন নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টে পরিবেশ দূষণ আর হয় না। কারণ সেখানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। যে কারণে দুর্ঘটনা ঘটারও খুব একটা সুযোগ থাকে না।
শেখ হাসিনা বলেন, এই রিএ্যাক্টর বসানোর জন্য মাটি তৈরি করা থেকে নদী ড্রেজিং অর্থাৎ রাশিয়ার ভলগা থেকে পদ্মা আমরা পাড়ি দিয়েছি। কাজেই এটাও আমি মনে করি যে, ভবিষ্যত ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য আরও একটি আলোর দুয়ার খুলে গেল। তিনি বলেন, এই বিদ্যুত কেন্দ্রের বিদ্যুত মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে, ইতোমধ্যে আমরা সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছি। ২০২৩ সালে আমাদের প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ শুরু হয়ে যাবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি আরও ত্বরান্বিত হবে, সেটাই আমরা বিশ্বাস করি।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, এই সময়ে আমরা এই নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলাম, আমরা বিশেষ করে রিএ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল আমরা স্থাপন করলাম। যেটা সত্যিই আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। পাশাপাশি, ২০৪১ সালের মধ্যে এই উন্নয়নশীল বাংলাদেশকেই উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়তে চাই। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। কিন্তু, এখানেই থেমে গেলে চলবে না, ১৯৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ব।
দেশ ২০৭১ সালে স্বাধীনতার শতবর্ষ উদ্যাপন করবে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, সে সময়ে আগামী প্রজন্ম একটি সুন্দর, আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবেই সেটা উদ্যাপন করবে। তিনি বলেন, এই দেশকে আর যেন কোনদিন পিছিয়ে পড়তে না হয় সে জন্য শতবর্ষ মেয়াদী ডেল্টা প্ল্যানও তাঁর সরকার করে দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আর যেন কোন শকুনির থাবা না পড়ে বাংলাদেশের ওপর। বাংলাদেশের এই উন্নতি এবং অগ্রগতি যেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের অনেক পূর্বেই জাতির পিতা এখানে বিদ্যুতায়নের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে অনুধাবন করেছিলেন এবং পাকিস্তান সরকারের কাছে তাঁর দাবির প্রেক্ষিতেই ১৯৬১ সালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। জমি অধিগ্রহণসহ বেশ কিছু কাজ তখন সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু, ১৯৭০ সালে পাকিস্তান সরকার হঠাৎ করে কাজ বন্ধ করে দিয়ে প্রকল্পটি পশ্চিম পাকিস্তানে সরিয়ে নিয়ে বিরাজমান বৈষম্যমূলক আচরণের পুনর্প্রকাশ ঘটায়। আর স্বাধীনতার পর পরই যুদ্ধ বিধ্বস্তদেশ পুনর্গঠনকালেই বঙ্গবন্ধু ‘আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা’ ‘আইএইএ’র সঙ্গে চুক্তি করে ফেলেন। সে সময় দেশের পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের জন্য পরিচালক হিসেবে তাঁর প্রয়াত স্বামী বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ারও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতির পিতা বেঁচে থাকলে এই পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র বাংলাদেশ আরও আগেই নির্মাণ করতে পারত উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতির পিতা মাত্র নয় মাসেই একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন। ‘গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব’ শিরোনামে সেই সংবিধানের ১৬ নম্বর অনুচ্ছেদে যুক্ত করেছিলেন ‘নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবন যাত্রার মানের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করিবার উদ্দেশ্যে কৃষি বিপ্লবের বিকাশ, গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতিকরণের ব্যবস্থা, কুটিরশিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগ-ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল রূপান্তর সাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য ’৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পর মার্শাল ল দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী সরকারগুলো আর কোন উদ্যোগ না নেয়ায় দেশের এই কাক্সিক্ষত উন্নয়ন আর আলোর মুখ দেখেনি। ’৯৬ সালে ২১ বছর পর সরকারে এসেই আওয়ামী লীগ সরকার ২০২০ সালের মধ্যে ‘সবার জন্য বিদ্যুত’ সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে ‘ভিশন স্টেটমেন্ট ও পলিসি স্টেটমেন্ট অন পাওয়ার সেক্টর রিফর্মস’ প্রণয়ন ও অনুমোদন করে। পাশাপাশি জাতির পিতার স্বপ্নের ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প’ বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু পরবর্তীতে ২০০১ সালের পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসেই অন্যান্য জনবান্ধব প্রকল্পগুলোর মতো তাঁর সরকারের এই প্রকল্পের কাজও বন্ধ করে দেয়।
সরকারপ্রধান বলেন, বেসরকারী খাতে বিদ্যুতকে উন্মুক্ত করে দেয়াসহ ছোট ছোট বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দানের ফলে সে সময়ে দেশের বিদ্যুত উৎপাদনের সক্ষমতা ১৬শ’ মেগাওয়াট থেকে বেড়ে ৪ হাজার ৩শ’ মেগাওয়াট হয়। অথচ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর দেখা যায় সেই বিদ্যুত উৎপাদনের সক্ষমতা ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াটে নেমে গেছে। অর্থাৎ এক ইউনিট বিদ্যুত উৎপাদনও বিএনপির আমলে বৃদ্ধি করা হয়নি বরং এ খাতে অনেক দুর্নীতি, অনেক টাকা খাওয়া, এমন অনেক কিছুই পাওয়া গেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর তাঁর সরকার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান-২০১০’ প্রণয়ন করে এবং আবার রূপপুর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। বন্ধুরাষ্ট্র রাশিয়া এটি বাস্তবায়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় তাদের প্রতিও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাইন অপসারণে রাশিয়ার বলিষ্ঠ সহযোগিতাসহ দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে তাদের সহযোগিতার কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিদ্যুত কেন্দ্রটা নির্মাণের ফলে আমাদের দেশের যারা বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, এই নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বা দেশের পারমাণবিক শক্তি কমিশনে কর্মরত তাদের সকলেরই একটা নতুন অভিজ্ঞতা হলো। কারণ তারা এজন্য রাশিয়া এবং ভারতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, পারমাণবিক প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা-ইন্টারন্যাশনাল এ্যাটমিক এ্যানার্জি এ্যাসোসিয়েশনের (আইএইএ) গাইড লাইন অনুযায়ী এবং সংস্থাটির কড়া নজরদারির মধ্য দিয়েই রূপপুর প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র প্রকল্প (আরএনপিপি) বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন। সূত্র মতে, ইউনিট-১ এর ভৌত কাঠামোর ভেতরে রিএ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের মাধ্যমে প্রায় সব ধরনের পারমাণবিক যন্ত্রাংশ স্থাপন সম্পন্ন হবে। এর ফলে এই ইউনিটের রিএ্যাক্টর ভবনের ভেতরের কাজ প্রায় শেষ হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট থেকে ১২শ’ মেগাওয়াট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট থেকেও ১২শ’ মেগাওয়াট অর্থাৎ মোট ২ হাজার ৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করা হবে।