ঢাকা ০৩:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
ভোক্তা অধিকারের জব্বারকে ‘মারধর’, ছড়িয়ে পড়া ভিডিও নিয়ে যা জানা গেল মোংলায় সাবেক মেয়র জুলফিকার ও যুবদল নেতা আলাউদ্দিনসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলায় সংবাদ সম্মেলন ঢাকা অচলের হুমকি ইশরাক সমর্থকদের অনিয়মে জর্জরিত ‘ওয়ান এশিয়া অ্যালায়েন্স’, ঝুঁকিতে ব্যান্ডউইথ নিরাপত্তা আগুলিয়ার জিরানী বাজার মাজার রোড কলতাসূতী নামাপাড়া থেকে বাচ্চা সহ কিটনাপার আটক আ.লীগের দোসর’ আমলা-কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ ভাঙ্গুড়ায় বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা কারাগারে মানবিক করিডোর’ বিতর্ক, খোলাসা করছে না সরকার বিতর্কিত উপদেষ্টাদের’ পদত্যাগে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ইশরাকের নগর ভবনের সামনে ৬ষ্ঠ দিনের মতো বিক্ষোভে ইশরাকের সমর্থকেরা

ঢাকা অচলের হুমকি ইশরাক সমর্থকদের

নিজস্ব সংবাদদাতা:
  • আপডেট টাইম : ০৫:৫৫:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
  • / ১ ১৫০.০০০ বার পাঠক

ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে শপথের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বুধবার (২১ মে) সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এ সময়ের মধ্যে শপথের ঘোষণা না এলে ঢাকা অচলের হুমকি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ডিএসসিসির পাঁচটি কর্মচারী ইউনিয়নের তরফ থেকে বর্জ্য অপসারণ কাজসহ নাগরিক সেবা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি এসেছে।

ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবিতে গত ১৪ মে থেকে ‘আমরা ঢাকাবাসী’র ব্যানারে শত শত মানুষ নগর ভবন অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এতে যোগ দিয়েছেন সংস্থাটির অধিকাংশ কর্মচারীও। এ নিয়ে আদালতে করা রিটের রায় আজ ঘোষণার কথা রয়েছে।

আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসির সব সেবা কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। কয়েক দিনের মতো মঙ্গলবারও নগর ভবনের ফটকগুলো ছিল তালাবদ্ধ। গুলিস্তানে গোলাপশাহ মাজার থেকে বঙ্গবাজার মোড়ে শত শত ইশরাক সমর্থক অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করতে থাকেন। এ সময় আশপাশে তীব্র যানজট দেখা দেয়। রাজধানীর একাংশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে। সকালের দিকে অতিরিক্ত গরমের কারণে আন্দোলনকারীর ওপর পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করে ডিএসসিসি।

সকাল ১০টা থেকে নগর ভবনের সামনের সড়কে বসে পড়েন ইশরাক সমর্থকরা। ভবনের প্রধান ফটকের সামনে একটি অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। সেই মঞ্চ থেকে সংগীত পরিবেশন করে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন বিভিন্ন শিল্পী।

এদিকে ইশরাক হোসেন সকালে ফেসবুক পোস্টে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসর ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার অসম্মান হয়, এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকতে আন্দোলনকারীদের অনুরোধ জানান।

ইশরাক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমরা সমালোচনা করি, রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তাদের সতর্ক করি, তাদের ভুল ধরিয়ে দিই কিন্তু অবশ্যই ভাষাগত শিষ্টাচার মেনে। অনেক তো দেখে আসছি আর পেছনের দিকে দেশটিকে নিতে চাই না। অবশ্যই আমরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করব, দেশের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেব, নির্বাচনী স্পষ্ট রোডম্যাপ আদায়ের মাধ্যমে আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য পদক্ষেপ নেব। এমনকি বর্তমানে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগে কঠোর গণতান্ত্রিক আন্দোলনও করব। কিন্তু ভাষা ও ব্যবহারে শত্রুও যাতে সমালোচনা করতে না পারে।’

তবে ইশরাকের এই অনুরোধ রাখেননি তার সমর্থক আর বিএনপি নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে নগর ভবনের সামনে থেকে তারা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে দায়ী করে তার পদত্যাগ চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। দুপুরের দিকে মাইক হাতে নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন ‘দফা এক দাবি এক, আসিফের পদত্যাগ’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

বিকাল ৫টার দিকে ষষ্ঠ দিনের অবস্থান কর্মসূচি থেকে আন্দোলনের সমন্বয়কারী সাবেক সচিব মশিউর রহমান বলেন, আমরা বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করব, এর মধ্যে ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না এলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেব। প্রয়োজনে ঢাকা অচল করে দেওয়া হবে।

এ সময় সিটি করপোরেশনের পাঁচটি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত হয়ে ঢাকাবাসীর এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, দাবি মানা না হলে সব ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া গেজেট স্থগিত চেয়ে রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। আজ এ বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার শুনানি শেষে এ দিন ধার্য করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন। ইশরাক হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

সরকার গায়ের জোরে ইশরাক হোসেনকে মেয়র হতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বয়স অনেক কম। হঠাৎ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়ে গেছেন। এজন্য তাঁর কথাবার্তায় ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। আদালতের রায় ঘোষণার পরও ইশরাককে শপথ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। চট্টগ্রামে ডা. শাহাদাত হোসেন মেয়র হতে পারলে ইশরাক কী দোষ করল।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ঢাকা অচলের হুমকি ইশরাক সমর্থকদের

আপডেট টাইম : ০৫:৫৫:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে শপথের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বুধবার (২১ মে) সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এ সময়ের মধ্যে শপথের ঘোষণা না এলে ঢাকা অচলের হুমকি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ডিএসসিসির পাঁচটি কর্মচারী ইউনিয়নের তরফ থেকে বর্জ্য অপসারণ কাজসহ নাগরিক সেবা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি এসেছে।

ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবিতে গত ১৪ মে থেকে ‘আমরা ঢাকাবাসী’র ব্যানারে শত শত মানুষ নগর ভবন অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এতে যোগ দিয়েছেন সংস্থাটির অধিকাংশ কর্মচারীও। এ নিয়ে আদালতে করা রিটের রায় আজ ঘোষণার কথা রয়েছে।

আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসির সব সেবা কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। কয়েক দিনের মতো মঙ্গলবারও নগর ভবনের ফটকগুলো ছিল তালাবদ্ধ। গুলিস্তানে গোলাপশাহ মাজার থেকে বঙ্গবাজার মোড়ে শত শত ইশরাক সমর্থক অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করতে থাকেন। এ সময় আশপাশে তীব্র যানজট দেখা দেয়। রাজধানীর একাংশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে। সকালের দিকে অতিরিক্ত গরমের কারণে আন্দোলনকারীর ওপর পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করে ডিএসসিসি।

সকাল ১০টা থেকে নগর ভবনের সামনের সড়কে বসে পড়েন ইশরাক সমর্থকরা। ভবনের প্রধান ফটকের সামনে একটি অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। সেই মঞ্চ থেকে সংগীত পরিবেশন করে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন বিভিন্ন শিল্পী।

এদিকে ইশরাক হোসেন সকালে ফেসবুক পোস্টে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসর ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার অসম্মান হয়, এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকতে আন্দোলনকারীদের অনুরোধ জানান।

ইশরাক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমরা সমালোচনা করি, রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তাদের সতর্ক করি, তাদের ভুল ধরিয়ে দিই কিন্তু অবশ্যই ভাষাগত শিষ্টাচার মেনে। অনেক তো দেখে আসছি আর পেছনের দিকে দেশটিকে নিতে চাই না। অবশ্যই আমরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করব, দেশের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেব, নির্বাচনী স্পষ্ট রোডম্যাপ আদায়ের মাধ্যমে আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য পদক্ষেপ নেব। এমনকি বর্তমানে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগে কঠোর গণতান্ত্রিক আন্দোলনও করব। কিন্তু ভাষা ও ব্যবহারে শত্রুও যাতে সমালোচনা করতে না পারে।’

তবে ইশরাকের এই অনুরোধ রাখেননি তার সমর্থক আর বিএনপি নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে নগর ভবনের সামনে থেকে তারা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে দায়ী করে তার পদত্যাগ চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। দুপুরের দিকে মাইক হাতে নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন ‘দফা এক দাবি এক, আসিফের পদত্যাগ’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

বিকাল ৫টার দিকে ষষ্ঠ দিনের অবস্থান কর্মসূচি থেকে আন্দোলনের সমন্বয়কারী সাবেক সচিব মশিউর রহমান বলেন, আমরা বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করব, এর মধ্যে ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না এলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেব। প্রয়োজনে ঢাকা অচল করে দেওয়া হবে।

এ সময় সিটি করপোরেশনের পাঁচটি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত হয়ে ঢাকাবাসীর এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, দাবি মানা না হলে সব ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া গেজেট স্থগিত চেয়ে রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। আজ এ বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার শুনানি শেষে এ দিন ধার্য করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন। ইশরাক হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

সরকার গায়ের জোরে ইশরাক হোসেনকে মেয়র হতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বয়স অনেক কম। হঠাৎ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়ে গেছেন। এজন্য তাঁর কথাবার্তায় ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। আদালতের রায় ঘোষণার পরও ইশরাককে শপথ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। চট্টগ্রামে ডা. শাহাদাত হোসেন মেয়র হতে পারলে ইশরাক কী দোষ করল।