ঢাকা ০১:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
ধানমন্ডিতে র‌্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, গ্রেফতার ৬ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ জাতীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদ হতে প্রাপ্ত ২৯ জন কে অনুদানের অর্থ সহায়তার চেক বিতরণ কার্যক্রম ঈদ যাত্রায় বকশিশের নামে ৮৩২ কোটি টাকা বাড়তি ভাড়া আদায় জি কে শামীমের সাড়ে ৫ বছরের কারাদণ্ড, খালাস মা স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের জনগণকে ট্রাম্পের শুভেচ্ছা নাসিরনগরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত লক্ষ্মীপুর সাংবাদিকদের উপর হামলা। ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান মিসেস নয়নের নেতৃত্বে সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলা কুমিল্লা জেলা সাংবাদিক কল্যাণ ফোরামের উদ্যোগে ইফতার মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত মোংলায় ভূমিদস্যু মেম্বার জাহাঙ্গীর মল্লিকের প্রতারণায় সর্বস্বান্ত দুলাল বিশ্বাস

হারিয়ে যাওয়ার ১২ বছর পর বাড়ি ফিরল রিফাত

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ১১:১২:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৩২২ ৫০০০.০ বার পাঠক

নাটোর জেলা প্রতিনিধি।।

ছোট্ট ছেলে-মেয়েদের নানা ধরনের শখ থাকে। ট্রেন দেখার ইচ্ছে পূরণ করতে কাউকে না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ রিফাত। বাড়ি থেকে সাড়ে ৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে চড়ে আর ফিরেনি রিফাত।

নিখোঁজ হওয়ার ১২ বছর পর সোমবার রাতে বাবা-মায়ের কোলে ফিরে এসেছে রিফাত। ঘটনাটি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুর গ্রামের। রিফাত ও তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে শখের বসে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ট্রেন দেখতে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মালঞ্চি স্টেশনে যায় শিশু রিফাত। ওই সময় সে উপজেলার গালিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তো। স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা অজানা একটি ট্রেনে উঠে ট্রেনের ভেতর ঘুরে ঘুরে দেখার সময় ট্রেন ছেড়ে দিলে সে হারিয়ে যায়।

হারিয়ে যাওয়ার পর প্রথম ৭ বছর রাজশাহীর কয়েকটি বাড়িতে রাখালের কাজ করেই তার সময় কাটে। লেখাপড়া শেখার অনেক ইচ্ছা প্রকাশ করলেও কেউ তাকে সে সুযোগ দেয়নি। এক সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৌঁছে যায় রিফাত। পরে এক প্রবাসীর একটি মোবাইল চুরির মিথ্যা অভিযোগে তাকে পাঠানো হয় রাজশাহী কারাগারে। সেখান থেকে তার ঠাঁই হয় রাজশাহী বায়া কিশোর সংশোধনাগারের এতিমখানায়।

প্রায় ৫ বছর এতিমখানায় অবস্থানের পর বাবা-মাকে খুঁজে পাওয়ার আশায় সেখানকার এক বড়ভাইয়ের মাধ্যমে ঢাকায় গিয়ে অংশ নেয় আর জে কিবরিয়ার জীবন গল্পের অনুষ্ঠানে। গত ২৮ডিসেম্বর ভিডিওটি প্রচার হলে দুদিনের মধ্যেই পরিবারের খোঁজ পায় রিফাত।

এক সপ্তাহের মধ্যেই সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাবা-মায়ের কোলে ফিরে এসেছে সে। দুই মেয়ে আর এক ছেলের সংসারে বড় সন্তান রিফাতকে ১২ বছর পর ফিরে পেয়ে গালিমপুরের জাহাঙ্গীর হোসেন ও রুপালী বেগমের ঘরে এখন বইছে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস। হারিয়ে যাওয়া রিফাতকে দেখতে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে এলাকাবাসীদের ভিড় জমে। ১২ বছর পর ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত সহপাঠী গালিমপুর গ্রামের সজল আলী জানান, রিফাতের সঙ্গে একই ক্লাসে তিনি পড়তেন। সে সময় তিনি নিজেও ছোট ছিলেন। বন্ধুকে হারিয়ে তিনি ব্যথিত ছিলেন। সেই সহপাঠীকে ফিরে পেয়ে বেশ খুশি হয়েছেন তিনি।

মা রুপালী বেগম বলেন, হারিয়ে যাওয়া বুকের মানিককে খুঁজে পেয়ে সৃষ্টিকর্তার দরবারে শুকরিয়া জানাই।

রিফাতের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভিডিওতে তার ছেলের খবর দেখার পর স্থানীয়রা তাকে খবর দেয়। এরপর রিফাতের বর্তমান ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে আইনি সব প্রক্রিয়া শেষে রিফাতকে বাড়িতে ফিরে এনেছেন। তবে প্রতি মাসে নাটোর সমাজসেবা অফিসে কর্মকর্তার নিকট রিফাতকে হাজির করতে হবে বলে তিনি জানান।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

হারিয়ে যাওয়ার ১২ বছর পর বাড়ি ফিরল রিফাত

আপডেট টাইম : ১১:১২:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০২১

নাটোর জেলা প্রতিনিধি।।

ছোট্ট ছেলে-মেয়েদের নানা ধরনের শখ থাকে। ট্রেন দেখার ইচ্ছে পূরণ করতে কাউকে না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ রিফাত। বাড়ি থেকে সাড়ে ৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে চড়ে আর ফিরেনি রিফাত।

নিখোঁজ হওয়ার ১২ বছর পর সোমবার রাতে বাবা-মায়ের কোলে ফিরে এসেছে রিফাত। ঘটনাটি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুর গ্রামের। রিফাত ও তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে শখের বসে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ট্রেন দেখতে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মালঞ্চি স্টেশনে যায় শিশু রিফাত। ওই সময় সে উপজেলার গালিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তো। স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা অজানা একটি ট্রেনে উঠে ট্রেনের ভেতর ঘুরে ঘুরে দেখার সময় ট্রেন ছেড়ে দিলে সে হারিয়ে যায়।

হারিয়ে যাওয়ার পর প্রথম ৭ বছর রাজশাহীর কয়েকটি বাড়িতে রাখালের কাজ করেই তার সময় কাটে। লেখাপড়া শেখার অনেক ইচ্ছা প্রকাশ করলেও কেউ তাকে সে সুযোগ দেয়নি। এক সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৌঁছে যায় রিফাত। পরে এক প্রবাসীর একটি মোবাইল চুরির মিথ্যা অভিযোগে তাকে পাঠানো হয় রাজশাহী কারাগারে। সেখান থেকে তার ঠাঁই হয় রাজশাহী বায়া কিশোর সংশোধনাগারের এতিমখানায়।

প্রায় ৫ বছর এতিমখানায় অবস্থানের পর বাবা-মাকে খুঁজে পাওয়ার আশায় সেখানকার এক বড়ভাইয়ের মাধ্যমে ঢাকায় গিয়ে অংশ নেয় আর জে কিবরিয়ার জীবন গল্পের অনুষ্ঠানে। গত ২৮ডিসেম্বর ভিডিওটি প্রচার হলে দুদিনের মধ্যেই পরিবারের খোঁজ পায় রিফাত।

এক সপ্তাহের মধ্যেই সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাবা-মায়ের কোলে ফিরে এসেছে সে। দুই মেয়ে আর এক ছেলের সংসারে বড় সন্তান রিফাতকে ১২ বছর পর ফিরে পেয়ে গালিমপুরের জাহাঙ্গীর হোসেন ও রুপালী বেগমের ঘরে এখন বইছে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস। হারিয়ে যাওয়া রিফাতকে দেখতে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে এলাকাবাসীদের ভিড় জমে। ১২ বছর পর ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত সহপাঠী গালিমপুর গ্রামের সজল আলী জানান, রিফাতের সঙ্গে একই ক্লাসে তিনি পড়তেন। সে সময় তিনি নিজেও ছোট ছিলেন। বন্ধুকে হারিয়ে তিনি ব্যথিত ছিলেন। সেই সহপাঠীকে ফিরে পেয়ে বেশ খুশি হয়েছেন তিনি।

মা রুপালী বেগম বলেন, হারিয়ে যাওয়া বুকের মানিককে খুঁজে পেয়ে সৃষ্টিকর্তার দরবারে শুকরিয়া জানাই।

রিফাতের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভিডিওতে তার ছেলের খবর দেখার পর স্থানীয়রা তাকে খবর দেয়। এরপর রিফাতের বর্তমান ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে আইনি সব প্রক্রিয়া শেষে রিফাতকে বাড়িতে ফিরে এনেছেন। তবে প্রতি মাসে নাটোর সমাজসেবা অফিসে কর্মকর্তার নিকট রিফাতকে হাজির করতে হবে বলে তিনি জানান।