ঢাকা ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

পিকে হালদারের মাসহ ২৫ নাগরিকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

  • সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৯:২৩:০৬ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারি ২০২১
  • ৩৫৬ ০.০০০ বার পাঠক

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পাচার করে কানাডায় পালিয়ে থাকা পিকে হালদারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ২৫ নাগরিকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।এছাড়া তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনে দুদক এসব নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।

পিপলস লিজিংয়ে অর্থ গচ্ছিত রেখে তা ফেরত না পেয়ে বিপর্যস্ত আমানতকারীরা। ঐ লিজিং থেকে শতশত কোটি টাকা বেহাত হয়ে যাওয়ার ঘটনায় পিকে হালদার ও তার ঘনিষ্ঠজনদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এমতাবস্থায় পাঁচ ভিকটিম ২৫ নাগরিকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। এতে সম্মতি দেয় দুদক ও রাষ্টপক্ষ। এরপরই হাইকোর্ট উপরোক্ত আদেশ দেন।

দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এই ২৫ নাগরিক হলেন- এস কে সুর (বাংলাদেশ ব্যংকের সাবেক গভর্নর), হারুনুর রশিদ ( ফাস ফাইনান্স), উজ্জ্বল কুমার নন্দী,সামি হুদা, অমিতাভ অধিকারী, অবন্তিকা বড়াল, শামীমা ( ইন্টারন্যাশনাল লিজিং), রুনাই (ইন্টারন্যাশনাল লিজিং), এনআই খান ( ইন্টারন্যাশনাল লিজিং), সুকুমার মৃধা (ইনকাম ট্রাক্স আইনজীবী), অনিন্দিতা মৃধা, স্বপন কুমার মিস্ত্রি, অভিজিৎ চৌধুরী, রাজিব সোম, ইরফান উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ( সাবেক এমডি ব্যাংক এশিয়া), অঙ্গন মোহন রায়, নঙ্গ চৌ মং, নিজামুল আহসান, মানিক লাল সমাদ্দার, সোহেল সামস, মাহবুব মুসা, এ কে সিদ্দিকী, মোয়াজ্জেম হোসেন, লিলাবতী হালদার (পিকে হালদারের মা)। গত ৩ জানুয়ারি সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামালের মেয়ে নাশিদ কামালসহ পাঁচ আমানতকারীর আবেদন গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে তার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারির আবেদন ফ্রান্সের ইন্টারপোল হেডকোয়ার্টারে পাঠানোর কথা জানান র‍্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ। যেকোনো সময় রেড অ্যালার্ট জারি হওয়ার কথাও বলেন তিনি।

এদিকে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে পিকে হালদারের দুর্নীতির অনুসন্ধানে শংখ ব্যাপারীকে দুদকের উপ-পরিচালক সালাউদ্দিন জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

প্রসঙ্গত, রিলায়েন্স ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকা অবস্থায় আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন পিকে হালদার। এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে থাকা ৮৩ জনের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে কৌশলে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি ও তার সহযোগীরা। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই ১৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একের পর এক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসব অর্থ নিয়ে তিনি পাড়ি জমান কানাডায়। পরে অক্টোবর মাসে দেশে ফিরতে চান তিনি। কিন্তু হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় দেশে ফিরলে যেন তাকে এয়ারপোর্টে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তিনি দুবাই থেকে আবারে কানাডায় ফিরে যান।

এদিকে পিকে হালদারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যারা অর্থ আমানত হিসাবে রেখেছিলেন তারা এখন বিভিন্নভাবে তথ্য দিয়ে দুদককে সহযোগিতা করছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ঊর্ধ্বতন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাসহ সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। এরা পিকে হালদারের পাচারকৃত টাকা কোথায় কোথায় রেখেছে তারা তা বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে জেনে দুদককে অবহিত করছেন বলে সূত্র জানিয়েছেন।

সর্বশেষ গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ধানমণ্ডির দুটি ফ্লাটসহ পিকে হালদারের স্থাবর সম্পদগুলো ক্রোকের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দিন এ আবেদন করেন।

আরো খবর.......

জনপ্রিয় সংবাদ

পিকে হালদারের মাসহ ২৫ নাগরিকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

আপডেট টাইম : ০৯:২৩:০৬ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারি ২০২১

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পাচার করে কানাডায় পালিয়ে থাকা পিকে হালদারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ২৫ নাগরিকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।এছাড়া তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনে দুদক এসব নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।

পিপলস লিজিংয়ে অর্থ গচ্ছিত রেখে তা ফেরত না পেয়ে বিপর্যস্ত আমানতকারীরা। ঐ লিজিং থেকে শতশত কোটি টাকা বেহাত হয়ে যাওয়ার ঘটনায় পিকে হালদার ও তার ঘনিষ্ঠজনদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এমতাবস্থায় পাঁচ ভিকটিম ২৫ নাগরিকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। এতে সম্মতি দেয় দুদক ও রাষ্টপক্ষ। এরপরই হাইকোর্ট উপরোক্ত আদেশ দেন।

দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এই ২৫ নাগরিক হলেন- এস কে সুর (বাংলাদেশ ব্যংকের সাবেক গভর্নর), হারুনুর রশিদ ( ফাস ফাইনান্স), উজ্জ্বল কুমার নন্দী,সামি হুদা, অমিতাভ অধিকারী, অবন্তিকা বড়াল, শামীমা ( ইন্টারন্যাশনাল লিজিং), রুনাই (ইন্টারন্যাশনাল লিজিং), এনআই খান ( ইন্টারন্যাশনাল লিজিং), সুকুমার মৃধা (ইনকাম ট্রাক্স আইনজীবী), অনিন্দিতা মৃধা, স্বপন কুমার মিস্ত্রি, অভিজিৎ চৌধুরী, রাজিব সোম, ইরফান উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ( সাবেক এমডি ব্যাংক এশিয়া), অঙ্গন মোহন রায়, নঙ্গ চৌ মং, নিজামুল আহসান, মানিক লাল সমাদ্দার, সোহেল সামস, মাহবুব মুসা, এ কে সিদ্দিকী, মোয়াজ্জেম হোসেন, লিলাবতী হালদার (পিকে হালদারের মা)। গত ৩ জানুয়ারি সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামালের মেয়ে নাশিদ কামালসহ পাঁচ আমানতকারীর আবেদন গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে তার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারির আবেদন ফ্রান্সের ইন্টারপোল হেডকোয়ার্টারে পাঠানোর কথা জানান র‍্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ। যেকোনো সময় রেড অ্যালার্ট জারি হওয়ার কথাও বলেন তিনি।

এদিকে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে পিকে হালদারের দুর্নীতির অনুসন্ধানে শংখ ব্যাপারীকে দুদকের উপ-পরিচালক সালাউদ্দিন জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

প্রসঙ্গত, রিলায়েন্স ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকা অবস্থায় আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন পিকে হালদার। এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে থাকা ৮৩ জনের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে কৌশলে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি ও তার সহযোগীরা। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই ১৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একের পর এক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসব অর্থ নিয়ে তিনি পাড়ি জমান কানাডায়। পরে অক্টোবর মাসে দেশে ফিরতে চান তিনি। কিন্তু হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় দেশে ফিরলে যেন তাকে এয়ারপোর্টে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তিনি দুবাই থেকে আবারে কানাডায় ফিরে যান।

এদিকে পিকে হালদারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যারা অর্থ আমানত হিসাবে রেখেছিলেন তারা এখন বিভিন্নভাবে তথ্য দিয়ে দুদককে সহযোগিতা করছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ঊর্ধ্বতন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাসহ সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। এরা পিকে হালদারের পাচারকৃত টাকা কোথায় কোথায় রেখেছে তারা তা বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে জেনে দুদককে অবহিত করছেন বলে সূত্র জানিয়েছেন।

সর্বশেষ গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ধানমণ্ডির দুটি ফ্লাটসহ পিকে হালদারের স্থাবর সম্পদগুলো ক্রোকের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দিন এ আবেদন করেন।