ঢাকা ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
জানাযায় প্রধান উপদেষ্টার কাতার সফরে গুরুত্ব পাবে কতটুকু নার্সিং ডিপ্লোমাকে ডিগ্রী সমমান করার দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থান কর্মসূচি ঠাকুরগাঁওয়ে কবরের ওপর থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় নারীর মরদেহ উদ্ধার ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক খামার তৈরি করায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী দেশে তিন স্তরে কমছে ইন্টারনেটের দাম নবীনগরে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও মহড়া অনুষ্ঠিত ১৯ দিনে এলো ২১ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সম্মিলিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রয়োজন: প্রধান উপদেষ্টা

গাজীপুরে স্কুল ছাত্র ইসমাইল হোসেন হত্যার রহস্য উদঘাটন

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৪:২৬:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ২৫৫ ৫০০০.০ বার পাঠক

নাসির উদ্দীন  গাজীপুর।।

গাজীপুরের টঙ্গীতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহায়তায় উত্তরা মডেল স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ইসমাইল হোসেন (১২) হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শাহ আলম জানান, লোভ আর বিবেকহীনতা মানুষকে করে তোলে পশুর চাইতে বর্বর। মহান পেশা পুলিশে দায়িত্ব পালনে যতই দিন যাচ্ছে অপরাধ তদন্তে অপরাধীদের নিত্য নতুন কৌশল ও বর্বরতা শরীরের রক্ত কে হিম করে দিচ্ছে। ১২ বৎসরের বালক ইসমাইল হোসেন লেখাপড়া করে উত্তরা মডেল স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীতে। ১৬/৩/২০২১ ইং তারিখে নিখোঁজ হয়। অনেক খোজাঁখুজি করে ছেলের সন্ধান না পেয়ে দরিদ্র মুদি দোকানদার বাবা নূরনবী আশ্রয় নেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তুরাগ থানায় ১৮/৩/২১ ইং তারিখে করেন একটি নিখোঁজ জিডি। ১৯/৩/২১ তারিখে গাজীপুর মেট্রোপলিটন টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন গুটিয়ায় তুরাগ নদীর শাখা নদীর কিনারায় একটি লাশ ভাসমান অবস্থায় আছে মর্মে খবর পেয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ এসআই সাব্বির হোসেন এর আন্তরিকতায় (মামলার বাদী) অজ্ঞাতনামা লাশটি উদ্ধারপূর্বক সুহরতহাল রিপোর্ট লিখে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। পরে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আশেপাশের থানায় লাশটির পরিচয়ের জন্য বার্তা প্রেরন করি। পূর্বের জিডির তথ্যানুসারে ওসি, তুরাগ থানা ডিএমপির সাথে আলোচনা করে জিডির বাদী নিখোঁজ ইসমাইলের বাবা নুরনবীর নিকট একাধিকবার গিয়ে এবং থানায় নিয়ে এসে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল ইসলাম এর আন্তরিক সহযোগিতায় বিস্তারিত আলোচনা করি। খুনীরা হত্যা করেই ক্ষান্ত হয় নাই তারা যাতে কেউ লাশটি না চিনে তাই লাশের মুখটি বিকৃত করে ফেলে। বাবা নুরনবী লাশটি দেখে প্রথমে চিনতে না পারলেও পরে জামাকাপড় দেখে চিৎকার করে উঠে নিশ্চিত করে এটা তার সন্তান ইসমাইল এর লাশ। তথাপিও ভিকটিম ইসমাইল হোসেন যেই সেলুনে চুল কাটত সেই সেলুনের মালিক কে নিয়ে এসে মাথার চুলের কাটিং দেখে আমরা ভিকটিমের পরিচয় অধিকতর নিশ্চিত হয়। লাশটির পরিচয় নিশ্চিত হবার পর গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির—পিপিএম, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অপরাধ (দক্ষিণ) ইলতুৎ মিশ মামলাটি অধিকতর গুরুত্ব বিবেচনায় রহস্য উদঘাটনে আমাদেরকে ধারাবাহিক তদন্তের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
সার্বিক দিক নির্দেশনায় হত্যাকান্ডের শিকার ইসমাইলের পিতা নুরনবীর সাথে কথা বলে জানা যায় একটি নাম্বার থেকে একাধিকবার ফোন দিয়ে ১০/১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। এই তথ্যের উপড় মামলাটি নতুন মোড় নেয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব—ইন্সপেক্টর ইয়াসিন আরাফাত নাম্বারের রেজিষ্ট্রেশন বের করে দেখেন নাম্বারটি একজন মহিলার নামে রেজিষ্ট্রেশন করা এমতাবস্থায় সে দীর্ঘ কললিস্ট সিডিআর সংগ্রহ করে। মোবাইলের সিডিআরের তথ্যানুযায়ী এক মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে মহিলা জানায় তার মোবাইলটি একমাস পূর্বে হারিয়ে যায়। কোথায় হারিয়েছে জানতে চাইলে মহিলা জানায় সে হামীম গ্রুপের গার্মেন্টসে চাকরি করে এই তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা হামীম গ্রুপের সিসি ক্যামেরা রেকর্ড সংগ্রহ করেন এবং দেখতে পারেন এক মহিলা মোবাইলটি নিয়েছে। ঐ মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে জানায় সে মোবাইলটি তার স্বামী আতাউল কে দিয়েছে।এই সুত্র ধরেই এসআই/আরাফাত গ্রেফতার করে আতাউল কে। আতাউল হত্যার কথা স্বীকার করে জানায় টাকার লোভে তার বন্ধু রবিউল ইসলাম রবু ও নেয়ামুলের সহযোগিতায় তারা ইসমাইল কে অপহরণ ও হত্যা করে। তার তথ্যামতে গ্রেফতার হয় নেয়ামুল।কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে যায় রবিউল ইসলাম রবু।
উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিক—নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শুভ মন্ডল সঙ্গীয় এস আই অরবিন্দ বিশ্বাস তুরাগ থানাধীন, ডিএমপির এলাকা হতে সারা রাত অভিযান পরিচালনা করে ভোর ৬টার দিকে আসামী রবিউল ইসলাম রবু (২২) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আসামি রবিউল ইসলাম রবু (২২) ইংরেজি ১০/০৯/২০২১ তারিখ বিজ্ঞ আদালতে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত আছে মর্মে দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ সিএমএম আদালত, গাজীপুরে কা:বি: ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি প্রদান করেন। অপরাধীদেরকে বিচারের আওতায় এনে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তির প্রত্যাশা করে নিহতের পরিবার।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

গাজীপুরে স্কুল ছাত্র ইসমাইল হোসেন হত্যার রহস্য উদঘাটন

আপডেট টাইম : ০৪:২৬:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১

নাসির উদ্দীন  গাজীপুর।।

গাজীপুরের টঙ্গীতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহায়তায় উত্তরা মডেল স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ইসমাইল হোসেন (১২) হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শাহ আলম জানান, লোভ আর বিবেকহীনতা মানুষকে করে তোলে পশুর চাইতে বর্বর। মহান পেশা পুলিশে দায়িত্ব পালনে যতই দিন যাচ্ছে অপরাধ তদন্তে অপরাধীদের নিত্য নতুন কৌশল ও বর্বরতা শরীরের রক্ত কে হিম করে দিচ্ছে। ১২ বৎসরের বালক ইসমাইল হোসেন লেখাপড়া করে উত্তরা মডেল স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীতে। ১৬/৩/২০২১ ইং তারিখে নিখোঁজ হয়। অনেক খোজাঁখুজি করে ছেলের সন্ধান না পেয়ে দরিদ্র মুদি দোকানদার বাবা নূরনবী আশ্রয় নেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তুরাগ থানায় ১৮/৩/২১ ইং তারিখে করেন একটি নিখোঁজ জিডি। ১৯/৩/২১ তারিখে গাজীপুর মেট্রোপলিটন টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন গুটিয়ায় তুরাগ নদীর শাখা নদীর কিনারায় একটি লাশ ভাসমান অবস্থায় আছে মর্মে খবর পেয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ এসআই সাব্বির হোসেন এর আন্তরিকতায় (মামলার বাদী) অজ্ঞাতনামা লাশটি উদ্ধারপূর্বক সুহরতহাল রিপোর্ট লিখে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। পরে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আশেপাশের থানায় লাশটির পরিচয়ের জন্য বার্তা প্রেরন করি। পূর্বের জিডির তথ্যানুসারে ওসি, তুরাগ থানা ডিএমপির সাথে আলোচনা করে জিডির বাদী নিখোঁজ ইসমাইলের বাবা নুরনবীর নিকট একাধিকবার গিয়ে এবং থানায় নিয়ে এসে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল ইসলাম এর আন্তরিক সহযোগিতায় বিস্তারিত আলোচনা করি। খুনীরা হত্যা করেই ক্ষান্ত হয় নাই তারা যাতে কেউ লাশটি না চিনে তাই লাশের মুখটি বিকৃত করে ফেলে। বাবা নুরনবী লাশটি দেখে প্রথমে চিনতে না পারলেও পরে জামাকাপড় দেখে চিৎকার করে উঠে নিশ্চিত করে এটা তার সন্তান ইসমাইল এর লাশ। তথাপিও ভিকটিম ইসমাইল হোসেন যেই সেলুনে চুল কাটত সেই সেলুনের মালিক কে নিয়ে এসে মাথার চুলের কাটিং দেখে আমরা ভিকটিমের পরিচয় অধিকতর নিশ্চিত হয়। লাশটির পরিচয় নিশ্চিত হবার পর গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির—পিপিএম, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অপরাধ (দক্ষিণ) ইলতুৎ মিশ মামলাটি অধিকতর গুরুত্ব বিবেচনায় রহস্য উদঘাটনে আমাদেরকে ধারাবাহিক তদন্তের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
সার্বিক দিক নির্দেশনায় হত্যাকান্ডের শিকার ইসমাইলের পিতা নুরনবীর সাথে কথা বলে জানা যায় একটি নাম্বার থেকে একাধিকবার ফোন দিয়ে ১০/১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। এই তথ্যের উপড় মামলাটি নতুন মোড় নেয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব—ইন্সপেক্টর ইয়াসিন আরাফাত নাম্বারের রেজিষ্ট্রেশন বের করে দেখেন নাম্বারটি একজন মহিলার নামে রেজিষ্ট্রেশন করা এমতাবস্থায় সে দীর্ঘ কললিস্ট সিডিআর সংগ্রহ করে। মোবাইলের সিডিআরের তথ্যানুযায়ী এক মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে মহিলা জানায় তার মোবাইলটি একমাস পূর্বে হারিয়ে যায়। কোথায় হারিয়েছে জানতে চাইলে মহিলা জানায় সে হামীম গ্রুপের গার্মেন্টসে চাকরি করে এই তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা হামীম গ্রুপের সিসি ক্যামেরা রেকর্ড সংগ্রহ করেন এবং দেখতে পারেন এক মহিলা মোবাইলটি নিয়েছে। ঐ মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে জানায় সে মোবাইলটি তার স্বামী আতাউল কে দিয়েছে।এই সুত্র ধরেই এসআই/আরাফাত গ্রেফতার করে আতাউল কে। আতাউল হত্যার কথা স্বীকার করে জানায় টাকার লোভে তার বন্ধু রবিউল ইসলাম রবু ও নেয়ামুলের সহযোগিতায় তারা ইসমাইল কে অপহরণ ও হত্যা করে। তার তথ্যামতে গ্রেফতার হয় নেয়ামুল।কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে যায় রবিউল ইসলাম রবু।
উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিক—নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শুভ মন্ডল সঙ্গীয় এস আই অরবিন্দ বিশ্বাস তুরাগ থানাধীন, ডিএমপির এলাকা হতে সারা রাত অভিযান পরিচালনা করে ভোর ৬টার দিকে আসামী রবিউল ইসলাম রবু (২২) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আসামি রবিউল ইসলাম রবু (২২) ইংরেজি ১০/০৯/২০২১ তারিখ বিজ্ঞ আদালতে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত আছে মর্মে দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ সিএমএম আদালত, গাজীপুরে কা:বি: ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি প্রদান করেন। অপরাধীদেরকে বিচারের আওতায় এনে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তির প্রত্যাশা করে নিহতের পরিবার।