ছবি: রয়টার্স
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) বুধবার (১২ নভেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের প্রতি ১০ পরিবারের ৯টিই বর্তমানে হয় খাদ্য সংকটে ভুগছে, নয়তো ঋণের বোঝায় জর্জরিত।
বিশেষ করে দারিদ্র্যপীড়িত পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলে পাকিস্তান ও ইরান থেকে ফিরে আসা লাখো শরণার্থীর চাপ দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। শরণার্থী প্রত্যাবর্তন, বৈদেশিক সহায়তা হ্রাস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দেশটি ক্রমেই এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
তালেবান ক্ষমতায় আসার আগেই আফগানিস্তান অর্থসংকটে ছিল। দেশটির মোট ব্যয়ের ৭৫ শতাংশই আসত বিদেশী ত্রাণ সহযোগিতা থেকে। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর সেই সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
অর্থের অভাবে বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে, পারিশ্রমিক দেওয়া যাচ্ছে না। কাজের অভাবে পথে বসেছেন লাখ লাখ আফগান, এবং অনাহার ও অপুষ্টির কারণে হাসপাতালগুলোতে অসুস্থ শিশুর সংখ্যা বাড়ছে।
ইউএনডিপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ও ইরান এই বছর আফগান শরণার্থীদের বহিষ্কারের প্রচেষ্টা জোরদার করায় প্রায় ১৫ লাখ মানুষকে জোরপূর্বক দেশে ফিরতে হয়েছে। ফিরে আসা এই আফগানরা তীব্র অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।
এরইমধ্যে সহায়তা হ্রাস, নিষেধাজ্ঞা এবং আগস্ট মাসের ভয়াবহ ভূমিকম্প সহ বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত আফগানিস্তান এই বিপুল সংখ্যক প্রত্যাবর্তনকারীদের জায়গা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ৪৮ হাজারের বেশি পরিবারের ওপর করা এক জরিপের ভিত্তিতে ইউএনডিপি এই তথ্য দিয়েছে।
জরিপে উঠে এসেছে, ৯০ শতাংশেরও বেশি প্রত্যাবর্তনকারী পরিবার ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছে। অর্ধেকেরও বেশি পরিবার খাবারের টাকা জোগাড় করার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা বাদ দিচ্ছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এসব পরিবারের গড় ঋণের পরিমাণ ৩৭৩ থেকে ৯০০ ডলার পর্যন্ত, অথচ এসব পরিবারের গড় মাসিক আয় মাত্র ১০০ ডলার।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের দারিদ্র্যপীড়িত এলাকাগুলোতে সম্পদের ওপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করেছে, যা দেশটির সামগ্রিক মানবিক সংকট আরও গভীর করছে।
সূত্র: রয়টার্স
প্রিন্ট
আন্তর্জাতিক রিপোর্ট 



















