সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনায় অভিযোগ, প্রশাসনের নিরবতার প্রেক্ষিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
- আপডেট টাইম : ০৪:৪২:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ০ ৫০০০.০ বার পাঠক
রাজধানীর মহাখালীর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের জোনাল অফিসে কয়েকজন সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ভয়াবহ মারধর ও অপমানের শিকার হওয়ার ঘটনায় অভিযোগ থাকা সত্বেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের রহস্যময় নিরবতার বিরুদ্ধে আজ সোমবার বেলা ১১টায় ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন পালিত হয়েছে।
ঘটনার বিবরণের প্রকাশ ,গত বৃহস্পতিবার আনুমানিক বেলা সাড়ে বারোটার দিকে সাপ্তাহিক রিপোর্টিং পত্রিকার সাংবাদিক মাহতাবুর রহমান তার অনুসন্ধানি টিমসহ রাজঊক কর্মকর্তাদের ঘুষ বাণিজ্য,অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কে বক্তব্য নিতে মহাখালী জোনাল অফিসের জোন ৩ এর পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট জোন ৩/২ অথরাইজড অফিসারের কাছে গেলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি। সুযোগ বুঝে ষড়যন্ত্রকারী ইমারত পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ চিৎকার চেঁচামেচি করে সোলায়মানসহ অন্যান্যদের জড়ো করে সাংবাদিকদের সোলায়মানের অফিসকক্ষে জোর করে নিয়ে আটকে রাখেন। ওই মুহূর্তে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন কেন এভাবে আমাদেরকে অপমান করা হচ্ছে? জবাবে তারা বলেন ,আমাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার নিউজ প্রকাশ করা যাবে না এবং সেই সাথে সাথে সম্পূর্ণ তথ্য প্রমাণ জোরপূর্বক ফেরত চান এবং সেই সাথে সাথে তাদেরকে ভুয়া ও চাঁদাবাজ সাংবাদিক হিসেবে অপবাদ বানিয়ে পুলিশে দেওয়ারও হুঁমকি দেন।একপর্যায়ে এই সোলাইমান তার ড্রয়ারে রাখা হাঁতুড়ি নিয়ে সাংবাদিকদের উল্টাপাল্টা মারা শুরু করলে ওই মুহূর্তে অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতায় সাংবাদিকরা কোন মতে সেদিনের মতো রেহাই পান বা বেঁচে যান! এই হেনস্তার শিকার সাংবাদিকরা হলেন সাপ্তাহিক রিপোর্টিং পত্রিকার ক্রাইম রিপোর্টার মাহতাবুর রহমান, দৈনিক আমার সময় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার শাহ আলম, দৈনিক নতুন দিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হান্নান ও সাপ্তাহিক রিপোর্টিং পত্রিকার রিপোর্টার মোঃ মহিবুল্লাহ।
সাংবাদিক মাহতাবুর রহমান বলেন,মুলত: সোলায়মান হোসেনের দুর্নীতি ও অপকর্ম নিয়ে একাধিক তথ্যমূলক ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ হওয়াতে তিনি ক্ষেপে গিয়েছিলেন। তাই এমন ভয়াবহতা ঘটিয়েছেন দুর্নীতিবাজ সোলাইমান। দৈনিক আমার সময় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার শাহ আলম বলেন, ৩০শে জানুয়ারি রাজউকের মহাখালী জোনাল অফিসের ৩/২ এর ইমারত পরিদর্শক সোলায়মান গংরা কর্মরত সাংবাদিকদের যেই ভয়াবহতার সাথে হেনস্তা করছে তা শুধুমাত্র বিগত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন,হেলমেট লীগ ও হাঁতুড়ি লীগেরই নিদর্শন বহন করে।এই বিচার যদি দ্রুতভাবে রাজউক কর্তৃপক্ষ না করে তবে আমরা সাংবাদিকরা দেশের সর্বোচ্চ আদালতমুখী হতে বাধ্য হবো।
দৈনিক নতুন দিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হান্নান বলেন, সোলায়মান হোসেন সেদিন যেভাবে আমাদের উপর আক্রমণ করেছিল তাতে অনেক ভয়াবহ দুর্ঘটনার সমুহ সম্ভবনা ছিল। আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং যথাযথ বিচার দাবি করি।সাংবাদিক মোঃ মহিবুল্লাহ বলেন, আমরা রিপোর্টিং টিম অফিস এসাইনমেন্ট নিয়ে মহাখালী জোনাল অফিসের পরিচালকের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে সোলায়মান ও তার সহযোগী আবুল কালাম আজাদ হাঁতুড়ি দিয়ে যেভাবে আমাদের উপর হামলা করেন আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং সেই সাথে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি দাবি করি ।
উল্লেখ্য যে, ইমারত পরিদর্শক সোলায়মান হোসেনের বিরুদ্ধে নোটিশ বাণিজ্য, ভবন মালিকদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন, দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ উপার্জন ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে যা নিয়ে সাপ্তাহিক রিপোর্টিং পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। সাপ্তাহিক রিপোর্টিং পত্রিকা ছাড়াও একাধিক পত্রিকাতে দুর্নীতি নিয়ে তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশ করা সত্বেও এই বিষয়ে রাজঊকের চেয়ারম্যান কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তাই হয়তো সোলায়মান আজ সাংবাদিকের অপমান ও মারধর করতে দু:সাহস দেখাতে পেরেছে।উক্ত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে পরিদর্শক সোলেমানের বিরুদ্ধে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারি পরোয়ানা সহ উচিত বিচারের দাবি জানানো হয়েছে ।