ঢাকা ১১:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
আওয়ামীলীগ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে গেছে/ দেশে নতুন ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের সৃষ্টি হয়েছে,মির্জা ফখরুল ইসলাম অভিযোগের স্তুপ বেরিয়ে এলেও আখলাক উল জামিল এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী রসুলাবাদ ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে শীত বস্ত্র বিতরণ ভৈরবে মেঘনায় নদীর পারে ভারতীয় কাপড় জব্দ, আটক ৪ পীরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত আহত চার রাজধানী বনশ্রীর সি ব্লক দিয়ে রামপুরার দিকে হেঁটে বৃষ্টি ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে নতুন বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস ব্ল্যাকমেইল হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা, ধরাছোঁয়ার বাইরে চক্র আওয়ামী লীগ দেশে নেই, এখন দখল করে কারা। এবি পার্টি লক্ষ্মীপুর জেলার গণসমাবেশে ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ একথা বলেন চান্দিনায় উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে অবৈধ ভেকু জব্দ, ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা

সীমান্তের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা সবসময় প্রস্তুত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

টেকনাফ সংবাদদাতা ও কক্সবাজার প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : ০১:০৯:৫৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৯ ৫০০০.০ বার পাঠক

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্ত ও দেশবাসীকে জানাতে চাই, আপনাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। সীমান্ত সম্পূর্ণভাবে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এসব কথা বলেছেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মায়ানমার সীমান্তের বাংলাদেশ অংশের সকল বিওপিতে ইতোমধ্যে জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে অন্যান্য বাহিনীর জনবলও। টহল তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে নাফ নদীতে। সীমান্তের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বৃদ্ধি করা হয়েছে গোয়েন্দা কার্যক্রমও। বিজিবি রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা সার্বক্ষণিক টহল জারি রেখেছেন। একইভাবে কাজ করছে কোস্টগার্ড, আনসার ও পুলিশও।

টেকনাফের দমদমিয়া বিওপি’র নিকটবর্তী এলাকায় তাৎক্ষনিক ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে মায়ানমারে গৃহযুদ্ধ ও দাঙ্গা চলছে। আরাকান আর্মি সর্বশেষ ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে মংডু টাউনশিপ দখলের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ২৭১ কিলোমিটার এলাকা আরাকান আর্মির দখলে। এছাড়া সীমান্তের ওপারে প্রায় গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন সময় ক্ষুদ্র ও ভারী অস্ত্রের ফায়ারের গোলা এপারে এসে পতিত হয়। আমাদের দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে আমাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমরা প্রথম থেকেই মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি।

উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন সময় জীবন রক্ষার্থে এবং যুদ্ধাহত কিছু মায়ানমার নাগরিক বাংলাদেশে আগমন করলে নিতান্ত মানবিক কারণে তাদের গ্রহণ করা হয়। এছাড়া আরাকান আর্মির তীব্র আক্রমণে মায়ানমার জান্তা সরকারের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৮৭৬ জন সদস্য বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করে। তাদের বিজিবি আটক করে হেফাজতে রেখে তাদের আবার ফেরত পাঠানো হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সীমান্তবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে বিজিবি ও অন্যান্য বাহিনী সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্বপালন করছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ২০১৭ সালে ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দেয়। এরপর ২০২৪ সাল পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর অগোচরে আরও ৫০-৬০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। যাদের রেজিস্ট্রেশন এখনো হয়নি। প্রতিবেশী দেশের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন সময়ে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী প্রতিনিয়ত আসতে চেষ্টা চালায়। কিন্তু সব বাহিনীর আন্তরিক অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলে বাঁধা পেয়ে, মরিয়া হয়ে অসাধু দালাল চক্রের সহায়তায় কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। যেভাবে হউক দালাল চক্রকে প্রতিহত করতে হবে। সবার আন্তরিক সহায়তা ছাড়া এটা অসম্ভব। কারণ স্থানীয়রাই জানবেন কোন দালাল কোন পথে হাঁটছে।

উপদেষ্টা বলেন, পরিস্থিতি যা-ই হউক, অবৈধভাবে আর কোনো মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে দেয়া হবে না। সীমান্তে উদ্ভব যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা সবসময় প্রস্তুত রয়েছি। আপনারা অবগত আছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা গত জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন এবং মিশরের কায়রোতে ১১ তম জি-৮ সম্মেলনে যোগ দিয়ে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

এর আগে বেলা ১১ টার দিকে হেলিকপ্টার যোগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা টেকনাফ পৌঁছান। এরপর সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে বিফ্রিং করেন তিনি। এ সময় বিজিবি, কোস্টগার্ড, পুলিশসহ নানা বাহিনীর ঊর্ধ্বতনরা উপদেষ্টার সাথে ছিলেন।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সীমান্তের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা সবসময় প্রস্তুত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেট টাইম : ০১:০৯:৫৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্ত ও দেশবাসীকে জানাতে চাই, আপনাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। সীমান্ত সম্পূর্ণভাবে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এসব কথা বলেছেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মায়ানমার সীমান্তের বাংলাদেশ অংশের সকল বিওপিতে ইতোমধ্যে জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে অন্যান্য বাহিনীর জনবলও। টহল তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে নাফ নদীতে। সীমান্তের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বৃদ্ধি করা হয়েছে গোয়েন্দা কার্যক্রমও। বিজিবি রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা সার্বক্ষণিক টহল জারি রেখেছেন। একইভাবে কাজ করছে কোস্টগার্ড, আনসার ও পুলিশও।

টেকনাফের দমদমিয়া বিওপি’র নিকটবর্তী এলাকায় তাৎক্ষনিক ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে মায়ানমারে গৃহযুদ্ধ ও দাঙ্গা চলছে। আরাকান আর্মি সর্বশেষ ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে মংডু টাউনশিপ দখলের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ২৭১ কিলোমিটার এলাকা আরাকান আর্মির দখলে। এছাড়া সীমান্তের ওপারে প্রায় গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন সময় ক্ষুদ্র ও ভারী অস্ত্রের ফায়ারের গোলা এপারে এসে পতিত হয়। আমাদের দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে আমাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমরা প্রথম থেকেই মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি।

উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন সময় জীবন রক্ষার্থে এবং যুদ্ধাহত কিছু মায়ানমার নাগরিক বাংলাদেশে আগমন করলে নিতান্ত মানবিক কারণে তাদের গ্রহণ করা হয়। এছাড়া আরাকান আর্মির তীব্র আক্রমণে মায়ানমার জান্তা সরকারের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৮৭৬ জন সদস্য বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করে। তাদের বিজিবি আটক করে হেফাজতে রেখে তাদের আবার ফেরত পাঠানো হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সীমান্তবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে বিজিবি ও অন্যান্য বাহিনী সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্বপালন করছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ২০১৭ সালে ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দেয়। এরপর ২০২৪ সাল পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর অগোচরে আরও ৫০-৬০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। যাদের রেজিস্ট্রেশন এখনো হয়নি। প্রতিবেশী দেশের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন সময়ে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী প্রতিনিয়ত আসতে চেষ্টা চালায়। কিন্তু সব বাহিনীর আন্তরিক অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলে বাঁধা পেয়ে, মরিয়া হয়ে অসাধু দালাল চক্রের সহায়তায় কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। যেভাবে হউক দালাল চক্রকে প্রতিহত করতে হবে। সবার আন্তরিক সহায়তা ছাড়া এটা অসম্ভব। কারণ স্থানীয়রাই জানবেন কোন দালাল কোন পথে হাঁটছে।

উপদেষ্টা বলেন, পরিস্থিতি যা-ই হউক, অবৈধভাবে আর কোনো মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে দেয়া হবে না। সীমান্তে উদ্ভব যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা সবসময় প্রস্তুত রয়েছি। আপনারা অবগত আছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা গত জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন এবং মিশরের কায়রোতে ১১ তম জি-৮ সম্মেলনে যোগ দিয়ে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

এর আগে বেলা ১১ টার দিকে হেলিকপ্টার যোগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা টেকনাফ পৌঁছান। এরপর সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে বিফ্রিং করেন তিনি। এ সময় বিজিবি, কোস্টগার্ড, পুলিশসহ নানা বাহিনীর ঊর্ধ্বতনরা উপদেষ্টার সাথে ছিলেন।