ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসর ডি:এস:সি:সি: সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া এখন সিন্ডিকেট জাতীয়তাবাদী চেতনার নেতা
- আপডেট টাইম : ০৬:৫১:৩৩ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৩৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সময়ের সুবিধা ভোগী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া ৫ ই আগস্টে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর রাতারাতি বোল পাল্টে জাতীয়তাবাদী চেতনার ধারক-বাহক সেজে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ভিতরে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট।বিতর্কিত এই সহকারী প্রকৌশলীর অনিয়ম দুর্নীতির সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে সূত্রাপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক মেহেদী হাসান লিটু,ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদল নেতা সৈয়দ মুকিতুল হাসান রঞ্জু,ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ন আহ্বায়ক নূরে আলম,কবি নজরুল সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়ার সহ-সভাপতি আহসান মানদুদ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের শ্রমিক দল নেতা পরিচ্ছদনকারী আরিফুজ্জামান প্রিন্স গংরা।সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া ও তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নাম ভাঙ্গিয়ে দাপট ও তদবিরে পুরো নগর ভবনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা এখন অতিষ্ঠ। জাতীয়তাবাদী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদকের পরিচয়ে তিনি এখন নগর ভবন নিয়ন্ত্রণ করছেন।এই বিষয়ে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন,আমার নাম ভাঙ্গিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে যারা চাঁদাবাজি,দখলদারিত্ব সহ নানান ধরনের অপকর্ম করে আসছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন,বিগত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমাকে জড়িয়ে নানাভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে,রাজধানীর বিভিন্ন আমি একটি গোষ্ঠী বা কোটিবার দুর্বৃত্ত আমার নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি,দখলদারিত্ব সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নগর ভবন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার বিভিন্ন মার্কেট,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল,চাঁদাবাজি ও নগর ভবনের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীকে ভয় ভীতি দেখিয়ে আসছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হলো।বিবৃতিতে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক আরো বলেন এই বিষয়ে আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই,এই ধরনের অপকর্মে আমার ন্যূনতম কোন সম্পৃক্ততা নেই।যারা আমার নাম ভাঙ্গিয়ে এইসব অপরাধ কর্মকাণ্ড করে আসছে,আমি যাদেরকে চিনি না।পাশাপাশি,দখলদারিত্ব, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয় ভীতি ও টেন্ডারবাজি সহ যারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করছে,আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন প্রশাসনকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।বিএনপির নাম পরিচয় দিয়ে কোন নেতাকর্মী এইসব কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। ইতিমধ্যে সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া নগর ভবনের সহকারী প্রকৌশলীদের থেকে কোন বাছাই কমিটির অনমোদন বা ছাড়পত্রের অপেক্ষা না করে নিজে নিজেই বাজার সার্কেল মাকেট নির্মাণ সেলের নির্বাহী প্রকৌশলী পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। বলা যায় তিনি এবং তার সিন্ডিকেট সদস্যরা নিজেরাই যেন পুরো নগর ভবনেরই অধিকর্তা। তাদের কথায় পদোন্নতি, বদলি টেন্ডার সহবসব কিছু হচ্ছে। সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে সর্বশেষ অভিযোগ উঠেছে যে আগস্ট মাসের শেষের দিকে সাবেক ছাত্রলীগের এক নেতাকে অনৈতিক লেনদেনের বিনিময়ে রাজস্ব কর্মকর্তা থেকে উপ-প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে তারই সুপারিশে। যে রাজস্ব কর্মকর্তা সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে দুদককে সকল তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করেছে এবং নিজে দুদকের সে মামলায় সাক্ষী হয়েছে।
অথচ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের অন্যতম নায়ক শেখ পরিবারের সদস্য মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের স্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে এতোদিন ব্যাপক সুবিধা ভোগ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া। আওয়ামী লীগের আমলে যেখানে বিএনপির সাথে সামান্যতম সংশ্লিষ্ট পেলেই তাকে নানাভাবে হয়রানি এবং চাকরিচ্যুত পর্যন্ত করা হয়েছে। সেখানে তিনি ওই সময় দিব্যি দাপটের সাথে চাকরি করেছেন, প্রমোশন পেয়েছেন। আর গত ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর তিনি রাতারাতি বোল পাল্টে আবার জাতীয়তাবাদী লেবাস ধারণ করেছেন। তার এই কর্মকাণ্ডে প্রকৃত জাতীয়তাবাদী যারা এতোদিন সুবিধা বঞ্চিত ছিলেন তাদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম নিচ্ছে।
গোলাম কিবরিয়া মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সময়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। সেই সময়ের নিয়োগের বিষয়টিকে এখন তিনি তার স্বার্থ হাসিলের কাজে লাগাচ্ছেন। সবাইকে বলে রেড়াচ্ছেন তিনি বিএনপির লোক। সাদেক হোসেন খোকা তাকে নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি কখনো বিএনপির নেতা মির্জা আব্বাসের নাম ভাঙাচ্ছেন। কখনো তিনি মজনুর লোক বলে পরিচয় দিচ্ছেন। তিনি সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের নাম ভাঙিয়েও সিটি কর্পোরেশনে দাপট দেখাচ্ছেন। বিএনপির নেতাদের কথা বলে এবং সে সময়ের নিয়োগ প্রাপ্ত এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশনের নেতার পরিচয় দিয়ে তিনি বর্তমান প্রশাসনকে পর্যন্ত তোড়াই কেয়ার করছেন। বর্তমানে তিনি কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছে না। ধানমন্ডি এলাকায় ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের একাধিক রেস্টুরেন্ট যেমন ডিঙ্গি, পানসি, সাম্পান এগুলো তিনি বেনামে নিয়ে পরিচালনা করছেন এমন অভিযোগ রয়েছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, তার বিরুদ্ধে যে সব কথা বলা হচ্ছে এগুলো ষড়যন্ত্রমূলক। তিনি জাতীয়তাবদী আদর্শের একজন সৈনিক বলে দাবি করেন। তিনি সূত্রাপুর থানা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। আওয়ামী লীগের সময় তাকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল। এরপর তিনি আইনী লড়াই করে আবার স্বপদে ফিরেছেন। তিনি বর্তমানে জাতীয়তাবাদী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বলেও জানান। বিএনপির গন্ধ থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকার যেখানে অন্যদের বরখাস্ত এবং নানাভাবে হয়রানি করেছে, সেখানে তিনি বিএনপির আদর্শের এতো বড় নেতা হয়েও কীভাবে এতোদিন চাকরি করলেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার মতো আরো অনেকেই চাকরি করেছেন। নগর ভবনে যারা চাকরি করেন তাদের আশি শতাংশই বিএনপি পন্থী। তাই সবাইকে কি বাদ দেয়া সম্ভব?
বিএনপি ও বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বললে তারা এই প্রতিবেদককে বলেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার দোসর সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া সুকৌশলে বিএনপির নামধারী তথাকথিত দুষ্কৃতিকারীদের সঙ্গে নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করে নগর ভবনে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে যাহা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান,দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বাংলাদেশের জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক জনাব তারেক রহমানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।আমাদের নেতা তারেক রহমান ও বিএনপির নীতি নির্ধারকদের কাছে আহব্বান জানাবো অচিরেই যেন নগর ভবনের ভিতরে গড়ে ওঠা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর নব্য জাতীয়তাবাদী চেতনার নেতা সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া ও তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়ে দলীয় ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখার দাবী জানান।