চিকিৎসকদের সমাবেশ: ‘আজকে চিকিৎসা দিতে গেলে আমার হাত কাঁপে’ ‘মুখে বলছি আমরা এ দেশের মালিক কিন্তু বাস্তবে অনুভব করি, আমরা এ দেশের দাস। আমাদের সঙ্গে ক্রীতদাসের মতো আচরণ করা হয়। আমাদের জীবনের কোনো মূল্য নেই
- আপডেট টাইম : ০৭:১৭:০৬ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ২ আগস্ট ২০২৪
- / ৬৮ ৫০০০.০ বার পাঠক
চিকিৎসকদের সমাবেশ: ‘আজকে চিকিৎসা দিতে গেলে আমার হাত কাঁপে’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে আজ শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করেন চিকিৎসকরা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া
শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে প্রতিবাদী সমাবেশ করেছেন চিকিৎসকরা।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে আজ শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন চিকিৎসক, মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীরা।
সর্বস্তরের চিকিৎসক, মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই সভার আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও অংশ নেন।
সমাবেশ থেকে কোটা আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় বিচার দাবি করা হয়।
ডাক্তার রাজীব বলেন, ‘আমি চাই একটা সুন্দর স্বাধীন দেশ। আজকে চিকিৎসা দিতে গেলে আমার হাত কাঁপে। গুলি বের করতে গেলে আমার হাত কাঁপে, আমি পারি না। আমার এই সাদা অ্যাপ্রোনে গুলি করে আমাকে মেরে ফেলেন। আমার টাকায় কেনা গুলিতে আমাকে মেরে ফেলেন। আমি চাই না এ রকম দেশ। আমি স্বাধীনতা চাই।’
ডাক্তার শারমিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা হাসপাতালে লড়ছি আহতদের নিয়ে, আমরা লড়ছি রাস্তায় আমাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা নিতে পারি না। আবু সাঈদকে আমি চিনতাম না কিন্তু তার মৃত্যুর কারণে আমি ঘুমাতে পারি না। আমি কোনো দল করি না, কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত নই।’
তিনি বলেন, ‘একটা বাচ্চাকে কেন গুলি করা হবে? হেলিকপ্টার থেকে কেন গুলি করা হবে?’
এসব ঘটনার আন্তর্জাতিক বিচার দাবি করেন তিনি। ডাক্তার শারমিন আরও বলেন, ‘আমার চাই, আমার ভাইয়ের রক্ত যেন বৃথা না যায়।’
এ সময় তারা স্লোগান দেন, ‘পুলিশে স্বৈরাচার মানি না, মানবো না’, ‘স্বৈরাচার নিপাক যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’।
ডাক্তার আব্দুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘মুখে বলছি আমরা এ দেশের মালিক কিন্তু বাস্তবে অনুভব করি, আমরা এ দেশের দাস। আমাদের সঙ্গে ক্রীতদাসের মতো আচরণ করা হয়। আমাদের জীবনের কোনো মূল্য নেই। ২০১৮ সালে আমি যখন প্রথম ভোট দিতে গিয়েছিলাম, নির্বাচনী কেন্দ্রে গিয়ে শুনেছিলাম আমার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। সেদিন আমার একটি উপলব্ধি হয়েছে; আমি এ দেশের নাগরিক, আমার সঙ্গে রোহিঙ্গার কীসের তফাৎ? আমার নাগরিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার যদি আমি প্রয়োগ না করতে পারি তাহলে তার সঙ্গে আমার কোনো তফাৎ নেই।
‘জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার, দায় নেওয়ার যে দাবি আমাদের রয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সেটি এড়িয়ে যাচ্ছেন। সব থেকে দুঃখজনক বিষয়, আরেকটি দাবি শিক্ষার্থীদের মিথ্যা মামলায় জড়ানো ও গ্রেপ্তার করা যাবে না—এই জিনিসটি আরও বেশি করে করা হচ্ছে। যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক তৈরি করা হয়েছে, যে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করা হয়েছে, আমি চাই বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনাকে রুখে দেবে,’ যোগ করেন তিনি।
সমাবেশ শেষে চিকিৎসক, মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীরা মিছিল করেন।