সুজন’র সিলেট বিভাগীয় সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী আর নেই
নাগরিক সমাজের উজ্জ্বল নক্ষত্রের প্রয়াণ, শোকের ছায়া সিলেটজুড়ে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সিলেট বিভাগীয় সভাপতি, বিশিষ্ট সমাজসেবক, ব্যবসায়ী এবং সিলেটের নাগরিক সমাজের অন্যতম পরিচিত মুখ ফারুক মাহমুদ চৌধুরী (৬৭) আর নেই। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের এলমহার্স্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার (৯ অক্টোবর, ২০২৫) দুপুরে তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
তাঁর মৃত্যুতে সিলেট অঞ্চলের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও গণতান্ত্রিক মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কর্মময় জীবনে ফারুক মাহমুদ চৌধুরী ছিলেন সিলেট অঞ্চলের মানবিক উদ্যোগের একজন অগ্রদূত। তিনি শুধু সুজন-এর সভাপতির দায়িত্বেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না, দীর্ঘদিন ধরে সিলেটের সুশীল সমাজের একজন প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন এবং সকল গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলন-সংগ্রামের অন্যতম প্রতিনিধি ছিলেন।
এছাড়া তিনি সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর সাবেক প্রশাসক এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর সহযোগী সংগঠন সনাক-এর প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে গণমাধ্যমে তিনি প্রায়শই ভোট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকের ভূমিকা পালন করতেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন ফারুক মাহমুদ চৌধুরী। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত মাসে তিনি সস্ত্রীক নিউইয়র্কে তার দুই পুত্রের কাছে যান। সেখানে শারীরিক জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে এলমহার্স্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও দুই পুত্রসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহী এবং শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন। তাঁর দুই পুত্রই নিউইয়র্ক প্রবাসী।
মরহুমের মরদেহ নিউইয়র্কেই দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দাপ্তরিক আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরদেহ উডসাইডের আহলে বায়াত মসজিদ ফিউনারেল হোমে নেওয়া হবে এবং সেখানে জানাজা শেষে তাঁকে ওয়াশিংটন মেমোরিয়াল কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।
তাঁর মৃত্যুতে দেশের বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠন গভীর শোক প্রকাশ করেছে। শোকবার্তায় নেতৃবৃন্দ মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। সিলেটের নাগরিক জীবনে তাঁর অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রিন্ট