বিরোধীদের আর্থিকভাবে পঙ্গু করে দিচ্ছেন মোদি: সোনিয়া গান্ধী
- আপডেট টাইম : ১১:৫৭:১৩ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪
- / ৯৯ ৫০০০.০ বার পাঠক
সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। ছবি: সংগৃহীত
সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস পার্টি অভিযোগ করেছে, আগামী মাসে শুরু হতে যাওয়া নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার করবিভাগকে ব্যবহার করে আর্থিক সংকট দেখিয়েছে। সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, দলকে আর্থিকভাবে পঙ্গু করার জন্য পরিকল্পিতভাবে চেষ্টা করা হয়েছে। দলটি বলেছে, ২১০ কোটি রুপির হিসাব জব্দ করা ‘নজিরবিহীন ও অগণতান্ত্রিক’। যদিও বিজেপি ও আয়কর বিভাগ এখনো এই অভিযোগের কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, শীর্ষ নেতা সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী এবং কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেনের উপস্থিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে কংগ্রেস।
এপ্রিল ও মে মাসে সাত ধাপে অনুষ্ঠিত হবে ভারতের সাধারণ নির্বাচন। জনমত জরিপগুলো মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও তার মিত্রদের জয়ের পূর্বাভাস দিয়েছে, যারা টানা তৃতীয় মেয়াদে রেকর্ড ক্ষমতায় আসার দিকে নজর রাখছে। গত মাসে কংগ্রেস জানিয়েছিল, আয়কর বিভাগ তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে।
অজয় মাকেন বলেন, ১১টি পক্ষের অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে এবং সেগুলোতে থাকা ২১০ কোটি রুপি লিয়েনের আওতায় আনা হয়েছে- যার অর্থ এগুলো প্রত্যাহার বা স্থানান্তর করা যাবে না।
রাহুল গান্ধী বলেন, এটা ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা নয়। এটাই ভারতীয় গণতন্ত্রের হিমশীতলতা।
অজয় মাকেনে বলেন, কর কর্তৃপক্ষের কাছে ১৪ লাখ রুপি পাওনা থাকায় এই ‘নজিরবিহীন পদক্ষেপ’ নেওয়া হয়েছে। সব রাজনৈতিক দলই আয়করের আওতামুক্ত। তাহলে শুধু কংগ্রেসকে কেনো শাস্তি দেওয়া হচ্ছে?
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ভারতের আয়কর বিভাগ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বিবিসি।
মিসেস গান্ধী বলছিলেন, দল জনগণ ও তার কর্মীদের কাছ থেকে যে তহবিল সংগ্রহ করেছিল, এখন তা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আমাদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা জোর করে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
খাড়গে বলেন, এই পদক্ষেপগুলো ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডকে প্রভাবিত করছে। এটি ভারতে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার সমান। আমরা আমাদের নির্বাচনী প্রচারণা, বিজ্ঞাপন ও প্রচার, দলীয় কর্মীদের বেতন ও প্রচারণাসামগ্রী ছাপানোর জন্য অর্থ ব্যয় করতে পারছি না।
রাহুল গান্ধী বলেন, দেশে এমন কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যাদের গণতান্ত্রিক কাঠামো রক্ষা করার কথা। কিন্তু আদালত কিছু বলছে না। নির্বাচন কমিশন নীরব, অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান মুখ খুলছে না, গণমাধ্যমও এ বিষয়ে মুখ খুলছে না।
কংগ্রেস দলের নেতারা আরও উল্লেখ করেন, তাদের দল এমন সময়ে আর্থিকভাবে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে যখন সবেমাত্র প্রকাশিত হয়েছে যে, বিজেপি এখন অবৈধ নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প থেকে অনেক লাভবান হয়েছে। মোদির সরকার ২০১৮ সালে নির্বাচনী বন্ড চালু করে এই বলে যে, এর ফলে রাজনৈতিক তহবিল আরও স্বচ্ছ হবে। তবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যক্তি এবং সংস্থাগুলো বেনামে দলগুলোকে অর্থ অনুদান দিতে পারে।
গত মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই প্রকল্পটিকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং নির্বাচন কমিশনকে অনুদানের বিস্তারিত জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করার নির্দেশ দেয়। এই তথ্যে দেখা গেছে, ক্ষমতাসীন বিজেপি প্রকল্পের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী ছিল। ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দান করা ১২০ বিলিয়ন রুপির প্রায় অর্ধেক বন্ড সুরক্ষিত করেছিল বিজেপি।