হয়রানির অভিযোগ, টাকা দিলে সব জায়েজ মো.ফজলে রাব্বি,
- আপডেট টাইম : ১২:৫৩:০৯ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ১২০ ৫০০০.০ বার পাঠক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে কাস্টমস কর্মকর্তারদের বিরুদ্ধে ভারতগামী যাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এতে করে পাসপোর্টধারী যাত্রীরা এ বন্দর ব্যবহারে অনাগ্রহী হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যাত্রীরা।
এই স্থলবন্দরের সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের ৭টি অঙ্গরাজ্যের সহজ যোগাযোগ মাধ্যম হওয়ায় ভারতে ভ্রমণকারী পর্যটকদের কাছে অন্যতম আখাউড়া স্থলবন্দর। এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী পারাপার হয়ে থাকে। আর পারাপার হওয়া যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর আদায়ের মাধ্যমে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে।
জানা যায়, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে এই স্থলবন্দর থেকে শুধু মাত্র ভ্রমণ কর আদায় হয়েছে ২ কোটি ৮২ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে আদায় হয়েছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা। আর চলতি অর্থ বছরের (২০২৩-২০২৪) প্রথম মাস জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই ৪ মাসেই ভ্রমণ কর বাবদ আদায় হয়েছে ৫ কোটি ১৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এই স্থলবন্দর থেকে সরকার বছরে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করলেও কাস্টমস কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা ও নানা ধরনের হয়রানির কারণে অনেক যাত্রী এইপথ ব্যবহারে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে জানা গেছে। এতে করে সরকারের রাজস্ব কমে আসবে বলে মনে করছেন অনেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক যাত্রী কাস্টমসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ভারতের আগরতলায় বিমানবন্দর থাকার সুবাদে ও আখাউড়া স্থলবন্দরের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় আমরা এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এখানে এসে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে বিভিন্ন হয়রানির শিকার হতে হয়। ভারত থেকে নিয়ম মেনে বৈধ জিনিসপত্র নিয়ে আসলেও তাদেরকে টাকা দিতে হয়। চিকিৎসা নিতে যাওয়া যাত্রীদের কাছ থেকেও কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে হয়রানি হতে হয়।
akhaura-3
ভারতীয় নাগরিক মিলন দাস অভিযোগ করে বলেন, আমি প্রায় ১৫ বছর পর বাংলাদেশে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছি। ইমিগ্রেশন সম্পূর্ণ করে কাস্টমস অফিসে যাওয়ার পর আমার ব্যাগ খুলে ৫টি শাড়িসহ ব্যবহারের বিভিন্ন মালামাল দেখতে পান কাস্টমস কর্মকর্তারা। এই শাড়িকাপড় আর মালামালের জন্য তারা আমার কাছে ৩ হাজার টাকা দাবি করে। আমি গরীব মানুষ। আত্মীয়ের বাড়িতে এখানে বেড়াতে এসেছি। তাদের কাছে হাতজোড় করে মালামালগুলো ফেরত চাইলে ১ হাজার টাকা ঘুষ নেয়।
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করা কুমিল্লার ইফতেখার আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, অনেক দিন পর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বেড়াতে যাই। আমার আত্মীয়দের জন্য কিছু কেনাকাটা করি। বৃহস্পতিবার বিকালে দেশে ফেরত এসে কাস্টমস করার সময় তারা আমাকে এই মালামালের জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। তখন আমি বললাম, আমি তো কোনো অবৈধ ব্যবসা করি না। এর জন্য আমাকে এত টাকা দিতে হবে কেন? পরবর্তীতে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা প্রধান মো. কামরুল পারভেজের সঙ্গে রফাদফা করে ৩ হাজার টাকা দিয়ে মালামালগুলো নিয়ে আসি। তখন ওই কর্মকর্তা এই ব্যাপারে বাইরে কাউকে যেন না বলি আমাকে সাবধান করে দেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে আখাউড়া কাস্টমস স্টেশনের ডেপুটি কমিশনার আবু হানিফ মোহাম্মদ আবদুল আহাদ বলেন, যাত্রীদের হয়রানি বা তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমি জানি না। এই বিষয়ে কোনো যাত্রী যদি অভিযোগ দেয়, তদন্ত করে প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।