টাইটানিক জাহাজ নিয়ে-বিজ্ঞানের কথা
- আপডেট টাইম : ০৬:৪৯:১৬ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২
- / ৫৩২ ৫০০০.০ বার পাঠক
যখন টাইটানিক ডুবছিল তখন কাছাকাছি তিনটে জাহাজ ছিল।
একটির নাম ছিল স্যাম্পসন। মাত্র সাত মাইল দুরে ছিল সেই জাহাজ। ওরা দেখতে পেয়েছিল টাইটানিকের বিপদ সংকেত, কিন্তু বেআইনি সীল মাছ ধরছিল তারা। পাছে ধরা পড়ে যায় তাই তারা উল্টোদিকে জাহাজের মুখ ঘুরিয়ে বহুদুরে চলে যায়।
এই জাহাজটার কথা ভাবুন। দেখবেন আমাদের অনেকের সাথে মিল আছে এর। আমরা যাঁরা শুধু নিজেদের কথাই ভাবি। অন্যের জীবন কি এল কি গেল তা নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথাব্যাথা নেই আমাদের। তাঁরাই ছিলেন ঐ জাহাজটিতে।
দ্বিতীয় জাহাজটির নাম ক্যালিফোর্নিয়ান। মাত্র চোদ্দ মাইল দুরে ছিল টাইটানিকের থেকে সেই সময়। ঐ জাহাজের চারপাশে জমাট বরফ ছিল। ক্যাপ্টেন দেখেছিলেন টাইটানিকের বাঁচতে চাওয়ার আকুতি। কিন্তু পরিস্থিতি অনুকুল ছিল না এবং ঘন অন্ধকার ছিল চারপাশ তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন ঘুমোতে যাবেন। সকালে দেখবেন কিছু করা যায় কিনা। জাহাজটির অন্য সব ক্রিউএরা নিজেদের মনকে প্রবোধ দিয়েছিল এই বলে যে ব্যাপারটা এত গুরুতর নয়।
এই জাহাজটাও আমাদের অনেকের মনের কথা বলে। আমাদের মধ্যে যারা মনে করেন একটা ঘটনার পর, যে ঠিক সেই মুহুর্তে আমাদের কিছুই করার নেই। পরিস্থিতি অনুকুল হলে ঝাঁপিয়ে পড়বো।
শেষ জাহাজটির নাম ছিল কারপাথিয়ান্স।
এই জাহাজটি আসলে যাচ্ছিল উল্টোদিকে। ছিল প্রায় আটান্ন মাইল দুরে যখন ওরা রেডিওতে শুনতে পায় টাইটানিকের যাত্রীদের আর্ত চিৎকার।
জাহাজের ক্যাপ্টেন হাঁটুমুড়ে বসে পড়েন ডেকের ওপর। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন যাতে তিনি সঠিক পথ দেখান তাঁদের। তারপর পুর্ণশক্তিতে বরফ ভেঙ্গে এগিয়ে চলেন টাইটানিকের দিকে।
ঠিক এই জাহাজটির এই সিদ্ধান্তের জন্যেই টাইটানিকের সাতশো পাঁচজন যাত্রী প্রাণে বেঁচে যান।
মনে রাখা ভাল এক হাজার কারণ থাকবে আপনার কাছে দায়িত্ব এড়াবার কিন্তু তাঁরাই মানুষের মনে চিরস্থায়ী জায়গা করে নেবেন যাঁরা অন্যের বিপদের সময় কিছু না ভেবেই ঝাঁপিয়ে পড়েবেন । ইতিহাস হয়তো মনে রাখবেনা তাঁদের কিন্ত মানুষের মুখে মুখে গাওয়া লোকগাথায়
বন্দিত হবেন তাঁরাই যুগে যুগে।