ঢাকা ১১:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
জুলাই বিপ্লবে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. বাবুকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ড আজমিরীগঞ্জে  বিয়ের ছয় মাস পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা রায়পুরে দেশীয় শিল্প ও পণ্য মেলায় ভ্রাম্যমান আদালত, নগদ অর্থদণ্ড কালিয়াকৈরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের উঠান বৈঠক ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত  মোংলায় জলবায়ু ন্যায্যতার গণসংলাপে বক্তারা : সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষা দিন অভিনব কায়দায় কুমড়া শাকের আড়ালে গাঁজা পাচারকালে ডিএনসি- কুমিল্লার হাতে ১৩ কেজি গাঁজাসহ আটক ০২ নারী মঠবাড়ীয়া সাফলেজা কচুবাড়ীয়া বসত ঘর ভাঙচুর লুটপাট ও যখম এর অভিযোগ আঃ খালেক হাওলাদার গংদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির আখড়া বরগুনার পাসপোর্ট অফিস, দালাল ছাড়া মিলছে না পাসপোর্ট কাশেমপুর থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে বিট্টিমরাই স্কুল ছাত্র মোঃ রাব্বি নিজ খালাকে আটকিয়ে ? ওসি সাইফুল ইসলাম মোটা অংকের টাকার বিনিময় তাদের আসামি করে গ্রেফতার দেখান আনন্দবাজারকে ডা. শফিকুর রহমান কোনও রাজনৈতিক দলকে খারিজ বা সরিয়ে দেয়ার ইচ্ছা জামায়াতের নেই

ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নাই

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ১২:০৯:১৭ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২১
  • / ৩১২ ৫০০০.০ বার পাঠক

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

রাজস্ব তথা কর আদায় বাড়াতে অর্থমন্ত্রী দেশে সর্বপ্রথম ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি। মঙ্গলবার রাজস্ব ভবনের সভাকক্ষে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবসে তিনি এই আহ্বান জানান। দেশে কর আদায় পদ্ধতিতে কিছু জটিলতা ও ত্রুটিবিচ্যুতি আছে বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, সব শ্রেণী-পেশার ব্যবসায়ীরা যাতে ভয়-ভীতির উর্ধে থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে ব্যবসায়ীদের সহায়তা ও সেবা দিতে হবে। এর পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে, যাতে উভয়পক্ষের উইন-উইন পরিস্থিতি বজায় থাকে। কেবল ব্যবসায়ীরা জিতবেন আর এনবিআর ঠকবে তা কাম্য নায়। অর্থমন্ত্রী এও বলেন, গত পাঁচ বছরে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ১৪-১৫ শতাংশ। তবে এটি আরও দশ শতাংশ বাড়ানো যায়। এর পাশাপাশি তিনি শুল্ক পদ্ধতিকে আরও আধুনিক করাসহ অটোমেশন এবং বন্দরগুলোতে আরও স্ক্যানার মেশিন স্থাপনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

করোনা মহামারীর প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দেশে মূল্য সংযোজন কর তথা ভ্যাট আদায় বেড়েছে-এটি নিঃসন্দেহে একটি সুসংবাদ। দেশে করদাতারা আয়কর এবং ব্যবসায়ীরা সহজে ভ্যাট দিতে চান না-এই তথ্যটি প্রায়ই উচ্চারিত হয়ে থাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরসহ বিভিন্ন মহলে। প্রকৃতপক্ষে এই বক্তব্যটি সর্বাংশে সত্য নয়। তবে দেশে কর ও ভ্যাট আদায় যে কিছু জটিলতা রয়েছে-এ কথা এনবিআরের চেয়ারম্যানও স্বীকার করেন। যে কারণে এর আদায় পদ্ধতি যথাসম্ভব সহজ সরল করার প্রচেষ্টা চলমান। করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় রেখে এবার কর প্রদানের সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে, যাতে করদাতাদের স্বস্তি মিলেছে কিছুটা হলেও। পালিত হচ্ছে ভ্যাট সমাপ্ত।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্যোগে দেশব্যাপী সীমিত পরিসরে প্রধানত ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়কর মেলার পরই হয়েছে ভ্যাট দিবস তথা সপ্তাহ। এই উপলক্ষে সরকারী প্রতিষ্ঠানটি নানা উদ্যোগ-আয়োজন করেছে- যার অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য দেশের সর্বস্তরের নাগরিককে ভ্যাটদানে উৎসাহিত করা। বাস্তবতা হলো, দেশের সক্ষম শ্রেণীর অধিকাংশ যেমন আয়কর দিতে চান না, তেমনি ভ্যাট দিতে অনীহা প্রকাশ করেন একশ্রেণীর ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী এবং দোকানদার। অথচ ভ্যাটের দায় গিয়ে বর্তায় সাধারণ নাগরিকের ওপর। যথাযথ ভ্যাট প্রদান নাগরিক দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। রাষ্ট্রীয় কোষাগার সমৃদ্ধকরণ তথা দেশের সার্বিক উন্নয়নে মূসক বা ভ্যাটের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দেন, এটা যেমন সত্যি, তেমনি আপনি-আমি সবাই কম বেশি ভ্যাট দিয়ে থাকি, এটাও বাস্তব। এ জন্যই ভ্যাটের অপর নাম ভোক্তা কর। ব্যবসায়ীরা এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে ভূমিকা পালন করে থাকে ভ্যাট সংগ্রাহকের। এর পাশাপাশি এও সত্যি যে, অনেক দোকানদার কিছুটা ঝামেলা ও প্রধানত ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা থেকে ভোক্তা প্রদত্ত ভ্যাট জমা দেন না রাষ্ট্রীয় কোষাগারে। অথচ ভ্যাট ঠিকই আদায় করেন ভোক্তার কাছ থেকে। সেক্ষেত্রে ভোক্তার অবশ্য কর্তব্য হবে বিক্রেতার কাছ থেকে পাকা রশিদ আদায় করা, যা অবশ্যই দিতে হবে ইএফডি মেশিনে প্রিন্ট করে। এতে ভোক্তা কর সরাসরি জমা হবে এনবিআরের এ্যাকাউন্টে। আর দোকানদার যদি ইএফডি মেশিন ব্যবহার না করে অথবা ভুয়া চালান দেয়, তাহলে বুঝতে হবে সে ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে সরকার ভ্যাট নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে। যদিও তা সর্বত্র সম্ভব হয়নি অদ্যাবধি।

আয়কর মেলা ও ভ্যাট সপ্তাহের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের সীমানা বাড়িয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য সরকারের আয় বৃদ্ধি করা। গত কয়েক বছরে সরকারের আয় যেমন বেড়েছে, তেমনি অর্থ ব্যয়ের সক্ষমতায় এগিয়ে গেছে দেশ। জাতীয় আয় বাড়ায় নিজস্ব অর্থায়নে বিশাল বাজেট প্রণয়ন, পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। স্বীকার করতেই হবে, নাগরিকদের মধ্যে আয়কর দেয়ার প্রবণতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। সেক্ষেত্রে আয়কর বাড়ানোর জন্য এনবিআর এবং আয়কর দাতাদের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক জরুরী।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নাই

আপডেট টাইম : ১২:০৯:১৭ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২১

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

রাজস্ব তথা কর আদায় বাড়াতে অর্থমন্ত্রী দেশে সর্বপ্রথম ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি। মঙ্গলবার রাজস্ব ভবনের সভাকক্ষে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবসে তিনি এই আহ্বান জানান। দেশে কর আদায় পদ্ধতিতে কিছু জটিলতা ও ত্রুটিবিচ্যুতি আছে বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, সব শ্রেণী-পেশার ব্যবসায়ীরা যাতে ভয়-ভীতির উর্ধে থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে ব্যবসায়ীদের সহায়তা ও সেবা দিতে হবে। এর পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে, যাতে উভয়পক্ষের উইন-উইন পরিস্থিতি বজায় থাকে। কেবল ব্যবসায়ীরা জিতবেন আর এনবিআর ঠকবে তা কাম্য নায়। অর্থমন্ত্রী এও বলেন, গত পাঁচ বছরে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ১৪-১৫ শতাংশ। তবে এটি আরও দশ শতাংশ বাড়ানো যায়। এর পাশাপাশি তিনি শুল্ক পদ্ধতিকে আরও আধুনিক করাসহ অটোমেশন এবং বন্দরগুলোতে আরও স্ক্যানার মেশিন স্থাপনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

করোনা মহামারীর প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দেশে মূল্য সংযোজন কর তথা ভ্যাট আদায় বেড়েছে-এটি নিঃসন্দেহে একটি সুসংবাদ। দেশে করদাতারা আয়কর এবং ব্যবসায়ীরা সহজে ভ্যাট দিতে চান না-এই তথ্যটি প্রায়ই উচ্চারিত হয়ে থাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরসহ বিভিন্ন মহলে। প্রকৃতপক্ষে এই বক্তব্যটি সর্বাংশে সত্য নয়। তবে দেশে কর ও ভ্যাট আদায় যে কিছু জটিলতা রয়েছে-এ কথা এনবিআরের চেয়ারম্যানও স্বীকার করেন। যে কারণে এর আদায় পদ্ধতি যথাসম্ভব সহজ সরল করার প্রচেষ্টা চলমান। করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় রেখে এবার কর প্রদানের সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে, যাতে করদাতাদের স্বস্তি মিলেছে কিছুটা হলেও। পালিত হচ্ছে ভ্যাট সমাপ্ত।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্যোগে দেশব্যাপী সীমিত পরিসরে প্রধানত ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়কর মেলার পরই হয়েছে ভ্যাট দিবস তথা সপ্তাহ। এই উপলক্ষে সরকারী প্রতিষ্ঠানটি নানা উদ্যোগ-আয়োজন করেছে- যার অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য দেশের সর্বস্তরের নাগরিককে ভ্যাটদানে উৎসাহিত করা। বাস্তবতা হলো, দেশের সক্ষম শ্রেণীর অধিকাংশ যেমন আয়কর দিতে চান না, তেমনি ভ্যাট দিতে অনীহা প্রকাশ করেন একশ্রেণীর ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী এবং দোকানদার। অথচ ভ্যাটের দায় গিয়ে বর্তায় সাধারণ নাগরিকের ওপর। যথাযথ ভ্যাট প্রদান নাগরিক দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। রাষ্ট্রীয় কোষাগার সমৃদ্ধকরণ তথা দেশের সার্বিক উন্নয়নে মূসক বা ভ্যাটের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দেন, এটা যেমন সত্যি, তেমনি আপনি-আমি সবাই কম বেশি ভ্যাট দিয়ে থাকি, এটাও বাস্তব। এ জন্যই ভ্যাটের অপর নাম ভোক্তা কর। ব্যবসায়ীরা এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে ভূমিকা পালন করে থাকে ভ্যাট সংগ্রাহকের। এর পাশাপাশি এও সত্যি যে, অনেক দোকানদার কিছুটা ঝামেলা ও প্রধানত ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা থেকে ভোক্তা প্রদত্ত ভ্যাট জমা দেন না রাষ্ট্রীয় কোষাগারে। অথচ ভ্যাট ঠিকই আদায় করেন ভোক্তার কাছ থেকে। সেক্ষেত্রে ভোক্তার অবশ্য কর্তব্য হবে বিক্রেতার কাছ থেকে পাকা রশিদ আদায় করা, যা অবশ্যই দিতে হবে ইএফডি মেশিনে প্রিন্ট করে। এতে ভোক্তা কর সরাসরি জমা হবে এনবিআরের এ্যাকাউন্টে। আর দোকানদার যদি ইএফডি মেশিন ব্যবহার না করে অথবা ভুয়া চালান দেয়, তাহলে বুঝতে হবে সে ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে সরকার ভ্যাট নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে। যদিও তা সর্বত্র সম্ভব হয়নি অদ্যাবধি।

আয়কর মেলা ও ভ্যাট সপ্তাহের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের সীমানা বাড়িয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য সরকারের আয় বৃদ্ধি করা। গত কয়েক বছরে সরকারের আয় যেমন বেড়েছে, তেমনি অর্থ ব্যয়ের সক্ষমতায় এগিয়ে গেছে দেশ। জাতীয় আয় বাড়ায় নিজস্ব অর্থায়নে বিশাল বাজেট প্রণয়ন, পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। স্বীকার করতেই হবে, নাগরিকদের মধ্যে আয়কর দেয়ার প্রবণতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। সেক্ষেত্রে আয়কর বাড়ানোর জন্য এনবিআর এবং আয়কর দাতাদের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক জরুরী।