ঢাকা ১২:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকের হেলপার গুরুতর আহত কুরআনে যাদেরকে আল্লাহর ওলি বলা হয়েছে। দুধরচকী। পাকুন্দিয়া উপজেলার পাটুয়াবাঙ্গা দর্গাবাজারে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজী মো: মকবুল হোসেনের পথসভা ও গণসংযোগ জামালপুরে হাত পাখা শিল্পের প্রসার পুলিশ স্ত্রীর দাপটে বেপরোয়া জালাল উদ্দিন সাগর, সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা মোংলায় মহান মে দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিশাল শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত পাকুন্দিয়া থানা পুলিশের অভিযানে ৪০০ গ্রাম গাঁজা সহ ১ আসামী গ্রেফতার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার-১ ফুলবাড়ীতে মহান মে দিবস পালিত মহান মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন

অবরুদ্ধ রাজধানী শ্রমিকদের

সম্পাদক।।

রাজধানী ঢাকা এখন কার্যত বিচ্ছিন্ন সারাদেশ থেকে। চারপাশের সাত জেলায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক কঠোর লকডাউন আরোপ করায় ঢাকার সঙ্গে বর্তমানে প্রায় সব রকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে স্থলপথ, নৌপথ ও রেলপথে। আকাশযান বিমান চলাচল করলেও সেখানেও রয়েছে কঠোর বিধিনিষেধসহ স্বাস্থ্যবিধি পালনের শর্তাদি। দূরপাল্লার বাস-মিনিবাস চলছে না। লঞ্চ-স্টিমারের চলাচল বন্ধ। বন্ধ ঘোষিত হয়েছে রেলপথও। এতে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। তবে পণ্যবাহী ট্রাক, নৌযান, চিকিৎসা সামগ্রী, এ্যাম্বুলেন্স এবং বিদেশে রফতানিজাত পণ্যের জরুরী চলাচলে বাধা নেই। এই অবস্থা কতদিন বহাল থাকে সময়ই তা বলে দেবে। কেননা, বর্তমানে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু হার বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। এভাবে চলতে থাকলে লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে আগামীতে। অন্যদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা আমদানি এবং প্রাপ্তি নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, কম-বেশি সব দেশেই টিকা দেয়া নিয়ে মুলা ঝোলাচ্ছে। কবে নাগাদ পাওয়া যাবে টিকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। সেক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষকে টিকা দিয়ে করোনার বিরুদ্ধে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তোলার বিষয়টি সুদূরপরাহত। সামনেই আসছে ঈদ-উল-আজহা-কোরবানির ঈদ। ঢাকাসহ নানা স্থানে বসবে গবাদিপশুর হাটবাজার। বাড়বে মানুষের চলাচল। অর্থনৈতিক লেনদেনও বাড়বে। তখন পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে এই মুহ‚র্তে বলা মুশকিল।

দেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ছে দিন দিন। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে প্রায় প্রতিদিনই নতুন সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর পাশাপাশি নতুন আতঙ্ক ও ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে বø্যাক ফাঙ্গাস, হোয়াইট ফাঙ্গাস, ইয়োলো ফাঙ্গাস নিয়েও, যা করোনা আক্রান্ত রোগীর চোখকে আক্রান্ত করে এবং দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেয়াসহ রোগীকে ঠেলে দেয় মৃত্যুর মুখে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের কয়েকজন রোগী রাজধানীর বারডেম হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যুর খবরও আছে। এসব আক্রান্ত রোগীর ভারত ভ্রমণ করে দেশে ফেরার রেকর্ড রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন সীমান্ত বন্ধ থাকার পরও, যা বহাল আছে অদ্যাবধি, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি রীতিমতো উদ্বেগজনক ও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা, আক্রান্ত রোগীদের ভারতে যাওয়া-আসার কোন খবর নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, সামাজিক সংক্রমণের কারণেই ছড়িয়ে পড়েছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট। যা প্রতিরোধ করতে হবে সর্বত্রভাবে, সর্বাত্মক উপায়ে। এর জন্য সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে এবং ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে অঞ্চলভিত্তিক কঠোর লকডাউন এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে এর জন্য যাতে কোন ভীতিকর পরিবেশ বা আতঙ্ক সৃষ্টি না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এক্ষেত্রে বরং পাস্পরিক সহযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টি ও আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ বেড, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অক্সিজেন সরবরাহ জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি সমধিক গুরুত্ব আরোপ করতে হবে করোনার টিকাদান কর্মসূচীর ওপর।

গণপরিবহন ও নৌযান চালুর দাবি নিয়ে ইতোমধ্যে রাজধানীরসহ সারাদেশে দফায় দফায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ-মিছিল-সমাবেশ হয়েছে। বাস্তবতা এই যে, পরিবহন খাতের সঙ্গে লাখ লাখ মালিক-শ্রমিক ড্রাইভার-হেলপার জড়িত-যাদের দৈনন্দিন জীবন-জীবিকার বিষয়টি মোটেও উপেক্ষণীয় নয়। গত ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে গ্রামগঞ্জ ও কর্মস্থলে চলাচলকারী অগণিত মানুষের অসহনীয় দুর্ভোগের বিষয়টিও সরকারের মাথায় রাখতে হবে। সামনেই আসছে পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। তখন যেন আবার নিয়মের ব্যত্যয় না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে সব পক্ষকে। এক্ষেত্রে সরকারের কঠোর নজরদারিও প্রত্যাশিত। স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেল-রেস্তরাঁ খুলে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ খাতেও কয়েক লাখ মালিক-বয়-বেয়ারা বাবুর্চির রুজি রোজগার জড়িত। তবে সবক্ষেত্রে সবাইকে কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। সর্বস্তরেও এক্ষেত্রে ব্যাপক জনসচেতনা সৃষ্টির কোন বিকল্প নেই। ইতোপূর্বে জনদুর্ভোগ বিবেচনায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা লঞ্চ-স্টিমার-ট্রেন-বাসসহ সব রকম যানবাহন খুলে দেয়ার কথা বলেছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে। তা না হলে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টসহ তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে। সরকার বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আমলে নেমে বলেই প্রত্যাশা। এখন অত্যাবশ্যক সর্বস্তরে টিকা দান কর্মসূচী জোরদারসহ সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলা।

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকের হেলপার গুরুতর আহত

অবরুদ্ধ রাজধানী শ্রমিকদের

আপডেট টাইম : ০৫:৩১:২৩ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন ২০২১

সম্পাদক।।

রাজধানী ঢাকা এখন কার্যত বিচ্ছিন্ন সারাদেশ থেকে। চারপাশের সাত জেলায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক কঠোর লকডাউন আরোপ করায় ঢাকার সঙ্গে বর্তমানে প্রায় সব রকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে স্থলপথ, নৌপথ ও রেলপথে। আকাশযান বিমান চলাচল করলেও সেখানেও রয়েছে কঠোর বিধিনিষেধসহ স্বাস্থ্যবিধি পালনের শর্তাদি। দূরপাল্লার বাস-মিনিবাস চলছে না। লঞ্চ-স্টিমারের চলাচল বন্ধ। বন্ধ ঘোষিত হয়েছে রেলপথও। এতে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। তবে পণ্যবাহী ট্রাক, নৌযান, চিকিৎসা সামগ্রী, এ্যাম্বুলেন্স এবং বিদেশে রফতানিজাত পণ্যের জরুরী চলাচলে বাধা নেই। এই অবস্থা কতদিন বহাল থাকে সময়ই তা বলে দেবে। কেননা, বর্তমানে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু হার বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। এভাবে চলতে থাকলে লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে আগামীতে। অন্যদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা আমদানি এবং প্রাপ্তি নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, কম-বেশি সব দেশেই টিকা দেয়া নিয়ে মুলা ঝোলাচ্ছে। কবে নাগাদ পাওয়া যাবে টিকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। সেক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষকে টিকা দিয়ে করোনার বিরুদ্ধে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তোলার বিষয়টি সুদূরপরাহত। সামনেই আসছে ঈদ-উল-আজহা-কোরবানির ঈদ। ঢাকাসহ নানা স্থানে বসবে গবাদিপশুর হাটবাজার। বাড়বে মানুষের চলাচল। অর্থনৈতিক লেনদেনও বাড়বে। তখন পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে এই মুহ‚র্তে বলা মুশকিল।

দেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ছে দিন দিন। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে প্রায় প্রতিদিনই নতুন সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর পাশাপাশি নতুন আতঙ্ক ও ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে বø্যাক ফাঙ্গাস, হোয়াইট ফাঙ্গাস, ইয়োলো ফাঙ্গাস নিয়েও, যা করোনা আক্রান্ত রোগীর চোখকে আক্রান্ত করে এবং দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেয়াসহ রোগীকে ঠেলে দেয় মৃত্যুর মুখে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের কয়েকজন রোগী রাজধানীর বারডেম হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যুর খবরও আছে। এসব আক্রান্ত রোগীর ভারত ভ্রমণ করে দেশে ফেরার রেকর্ড রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন সীমান্ত বন্ধ থাকার পরও, যা বহাল আছে অদ্যাবধি, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি রীতিমতো উদ্বেগজনক ও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা, আক্রান্ত রোগীদের ভারতে যাওয়া-আসার কোন খবর নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, সামাজিক সংক্রমণের কারণেই ছড়িয়ে পড়েছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট। যা প্রতিরোধ করতে হবে সর্বত্রভাবে, সর্বাত্মক উপায়ে। এর জন্য সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে এবং ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে অঞ্চলভিত্তিক কঠোর লকডাউন এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে এর জন্য যাতে কোন ভীতিকর পরিবেশ বা আতঙ্ক সৃষ্টি না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এক্ষেত্রে বরং পাস্পরিক সহযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টি ও আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ বেড, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অক্সিজেন সরবরাহ জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি সমধিক গুরুত্ব আরোপ করতে হবে করোনার টিকাদান কর্মসূচীর ওপর।

গণপরিবহন ও নৌযান চালুর দাবি নিয়ে ইতোমধ্যে রাজধানীরসহ সারাদেশে দফায় দফায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ-মিছিল-সমাবেশ হয়েছে। বাস্তবতা এই যে, পরিবহন খাতের সঙ্গে লাখ লাখ মালিক-শ্রমিক ড্রাইভার-হেলপার জড়িত-যাদের দৈনন্দিন জীবন-জীবিকার বিষয়টি মোটেও উপেক্ষণীয় নয়। গত ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে গ্রামগঞ্জ ও কর্মস্থলে চলাচলকারী অগণিত মানুষের অসহনীয় দুর্ভোগের বিষয়টিও সরকারের মাথায় রাখতে হবে। সামনেই আসছে পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। তখন যেন আবার নিয়মের ব্যত্যয় না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে সব পক্ষকে। এক্ষেত্রে সরকারের কঠোর নজরদারিও প্রত্যাশিত। স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেল-রেস্তরাঁ খুলে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ খাতেও কয়েক লাখ মালিক-বয়-বেয়ারা বাবুর্চির রুজি রোজগার জড়িত। তবে সবক্ষেত্রে সবাইকে কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। সর্বস্তরেও এক্ষেত্রে ব্যাপক জনসচেতনা সৃষ্টির কোন বিকল্প নেই। ইতোপূর্বে জনদুর্ভোগ বিবেচনায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা লঞ্চ-স্টিমার-ট্রেন-বাসসহ সব রকম যানবাহন খুলে দেয়ার কথা বলেছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে। তা না হলে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টসহ তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে। সরকার বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আমলে নেমে বলেই প্রত্যাশা। এখন অত্যাবশ্যক সর্বস্তরে টিকা দান কর্মসূচী জোরদারসহ সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলা।