ঢাকা ১২:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo বাঞ্ছারামপুরে এমপি পদে লড়বেন যারা ১৩ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল Logo টেন্ডারবাণিজ্যে শতকোটি টাকার মালিক গণপূর্তের আহসান হাবীব Logo ফ্যাসিবাদের দোসর ঠিকাদার সাইদুলের দাপটে অসহায় গণপূর্তের প্রকৌশলী ও ঠিকাদাররা Logo শোক সংবাদ Logo খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় Logo তার কৃতিত্ব কেউ কেড়ে নিতে পারবে না Logo বাংলাদেশের মানুষের কি মনে আছে ইনক্লাব মঞ্চের থেকে কি বলেছিল শহীদ হাদী ওয়াকারকে চ‍্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছিলো—সাহস থাকলে ক‍্যু করে দেখান, জনগন আর্মি ক‍্যান্টনমেন্টের ইটসহ খুলে নিয়ে আসবে Logo আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে পাবনার পাঁচটি আসনে ৩২ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন Logo ভাঙ্গুড়ায় বিএনপি অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ মামলায় আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার Logo দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, তীব্র শীতে কাঁপছে সারা দেশ

টেন্ডারবাণিজ্যে শতকোটি টাকার মালিক গণপূর্তের আহসান হাবীব

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় ০৩:১৩:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৭ ১৮৪৪.০০০ বার পড়া হয়েছে

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে টেন্ডারবাণিজ্যে শতকোটি টাকার মালিক বনে গেছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব। নারায়ণগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হাবীবের অসংখ্য দুর্নীতির তথ্য একাধিক গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রুখতে অর্থের জোগান দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। একাধিক হত্যা মামলারও আসামি হাবীব।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব গণপূর্ত বিভাগ নারায়ণগঞ্জে যোগদান করেন ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর। গণপূর্তে চাকরি পাওয়ার পর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। চাকরিতে যোগদানের পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অধিকাংশ দরপত্র তার পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছেন। এভাবে প্রচুর অবৈধ অর্থ কামিয়েছেন তিনি। দুর্নীতি-অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে দেশের বাইরে শতকোটি টাকা পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। আহসান হাবীবের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছিল গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণপূর্তের এক কর্মচারী জানান, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দুর্নীতির মাধ্যমে গড়েছেন নামে-বেনামে অঢেল সম্পদ। গণপূর্তে রয়েছে তার নিজস্ব সিন্ডিকেট বাহিনী। তার বিরুদ্ধে কোনো নিউজ হলে তিনি তা দ্রুত ম্যানেজ করে ফেলেন।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সমর্থনে রসদ জুগিয়েছেন আওয়ামী লীগ আমলের সুবিধাভোগী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আহসান হাবীব। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও তার অন্যতম দোসর ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড মো. আহসান হাবীব বহাল তবিয়তে আছেন, হত্যা মামলার আসামি হয়েও এখনো কর্মস্থলে আছেন দাপটের সঙ্গে। রাজধানীর পল্টন থানার মামলা নং-৮৭৪’র ৭০ নম্বর আসামি মো. আহসান হাবীব।
আহসান হাবীবের বিরুদ্ধে কে এম শাহরিয়ার শুভ বাদী হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৩১ অক্টোবর হত্যা মামলা করার আবেদন করেন। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পল্টন মডেল থানাকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একই রকম আরো হত্যা মামলা আছে কি না, তা কোর্টকে গত ৪ নভেম্বরের মধ্যে জানানোর আদেশ দেন। আদেশ দিয়ে ৮৭৪/২০২০ (পল্টন) নম্বরে আবেদনটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করেন কোর্ট।
আদেশ অনুযায়ী, পল্টন মডেল থানা থেকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। যাতে উল্লেখ করা হয়, পল্টন মডেল থানায় গত ২৯ অক্টোবর মো. জামাল মিয়া বাদী হয়ে একই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একই বিষয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন, যার মামলা নম্বর ৪৮ ধারা : ৩০২/৩৪।
এদিকে হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পর থেকেই বাদীকে চাপ দিয়ে ও টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মামলা থেকে নাম কাটার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন আহসান হাবীব। সূত্রে জানা যায়, হত্যা মামলাটি থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করার জন্য মামলার বাদীর সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা করছেন। এ মীমাংসা প্রক্রিয়ায় মুখ্য ভূমিকা পালন করছে প্রধান প্রকৌশলীর অফিস।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, আহসান হাবীব আওয়ামী লীগের অত্যন্ত কাছের লোক ছিলেন। ছাত্র-জনতা হত্যায় জড়িত থাকলেও তার কিছুই হবে না। যত টাকাই লাগুক না কেন, তিনি এ হত্যা মামলা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেবেন।
হত্যা মামলা ও মীমাংসার বিষয়ে কথা বলার জন্য আহসান হাবীবের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাঞ্ছারামপুরে এমপি পদে লড়বেন যারা ১৩ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল

টেন্ডারবাণিজ্যে শতকোটি টাকার মালিক গণপূর্তের আহসান হাবীব

আপডেট সময় ০৩:১৩:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে টেন্ডারবাণিজ্যে শতকোটি টাকার মালিক বনে গেছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব। নারায়ণগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হাবীবের অসংখ্য দুর্নীতির তথ্য একাধিক গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রুখতে অর্থের জোগান দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। একাধিক হত্যা মামলারও আসামি হাবীব।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব গণপূর্ত বিভাগ নারায়ণগঞ্জে যোগদান করেন ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর। গণপূর্তে চাকরি পাওয়ার পর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। চাকরিতে যোগদানের পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অধিকাংশ দরপত্র তার পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছেন। এভাবে প্রচুর অবৈধ অর্থ কামিয়েছেন তিনি। দুর্নীতি-অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে দেশের বাইরে শতকোটি টাকা পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। আহসান হাবীবের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছিল গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণপূর্তের এক কর্মচারী জানান, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দুর্নীতির মাধ্যমে গড়েছেন নামে-বেনামে অঢেল সম্পদ। গণপূর্তে রয়েছে তার নিজস্ব সিন্ডিকেট বাহিনী। তার বিরুদ্ধে কোনো নিউজ হলে তিনি তা দ্রুত ম্যানেজ করে ফেলেন।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সমর্থনে রসদ জুগিয়েছেন আওয়ামী লীগ আমলের সুবিধাভোগী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আহসান হাবীব। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও তার অন্যতম দোসর ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড মো. আহসান হাবীব বহাল তবিয়তে আছেন, হত্যা মামলার আসামি হয়েও এখনো কর্মস্থলে আছেন দাপটের সঙ্গে। রাজধানীর পল্টন থানার মামলা নং-৮৭৪’র ৭০ নম্বর আসামি মো. আহসান হাবীব।
আহসান হাবীবের বিরুদ্ধে কে এম শাহরিয়ার শুভ বাদী হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৩১ অক্টোবর হত্যা মামলা করার আবেদন করেন। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পল্টন মডেল থানাকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একই রকম আরো হত্যা মামলা আছে কি না, তা কোর্টকে গত ৪ নভেম্বরের মধ্যে জানানোর আদেশ দেন। আদেশ দিয়ে ৮৭৪/২০২০ (পল্টন) নম্বরে আবেদনটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করেন কোর্ট।
আদেশ অনুযায়ী, পল্টন মডেল থানা থেকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। যাতে উল্লেখ করা হয়, পল্টন মডেল থানায় গত ২৯ অক্টোবর মো. জামাল মিয়া বাদী হয়ে একই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একই বিষয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন, যার মামলা নম্বর ৪৮ ধারা : ৩০২/৩৪।
এদিকে হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পর থেকেই বাদীকে চাপ দিয়ে ও টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মামলা থেকে নাম কাটার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন আহসান হাবীব। সূত্রে জানা যায়, হত্যা মামলাটি থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করার জন্য মামলার বাদীর সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা করছেন। এ মীমাংসা প্রক্রিয়ায় মুখ্য ভূমিকা পালন করছে প্রধান প্রকৌশলীর অফিস।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, আহসান হাবীব আওয়ামী লীগের অত্যন্ত কাছের লোক ছিলেন। ছাত্র-জনতা হত্যায় জড়িত থাকলেও তার কিছুই হবে না। যত টাকাই লাগুক না কেন, তিনি এ হত্যা মামলা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেবেন।
হত্যা মামলা ও মীমাংসার বিষয়ে কথা বলার জন্য আহসান হাবীবের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।


প্রিন্ট