ঢাকা ০৫:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ, ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা Logo বলিউডের ১২ হাজার কোটির বছর: শীর্ষ ১০ সিনেমায় বক্স অফিস রেকর্ড Logo এবার ১৪ ঘণ্টায় এলো ২৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ডা. তাসনিম জারা Logo কপাল পুড়ল’ রুমিন ফারহানার, জুনায়েদকে সমর্থন বিএনপির Logo একনেকে ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন Logo পাবনার বাজারে বিক্রি হওয়া দুধে মিলল ডিটারজেন্ট Logo টঙ্গী রাজস্ব সার্কেলে ঘুষের উচ্চ রেট, এসিল্যান্ড বেপরোয়া টাকা না দিলে আবেদন নামঞ্জুর Logo ‎হযরত মাওলানা আব্দুল হালিম হুছাইনী (রহ.)-এর সংক্ষিপ্ত জীবনী Logo নতুন উপদেষ্টাদের শপথ ‘ধীরে চলতে’ বলেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ Logo গুমের মামলায় হাসিনা-কামালসহ ১৭ জনের বিচার শুরুর আদেশ

‎হযরত মাওলানা আব্দুল হালিম হুছাইনী (রহ.)-এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

জন্ম ও শৈশব
‎পীরে কামেল আলহাজ্ব হযরত মাওলানা আব্দুল হালিম হুছাইনী (রহ.) ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার তারাকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন শান্ত, সংযত ও মেধাবী শিশু। তাঁর মা বাড়িতে ৫০-৬০ জন মেয়েকে কুরআন শিক্ষা দিতেন এবং তাঁর কাছেই হুছাইনী (রহ.) প্রাথমিক কুরআন শরীফ শিক্ষা লাভ করেন।

‎শিক্ষাজীবন

‎তাঁর শিক্ষাযাত্রা শুরু হয় স্থানীয় মক্তবে। ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত তারাকান্দি সিনিয়র মাদ্রাসায় ১৯২৬ সাল পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন এবং কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে ফাইনাল পরীক্ষায় তৃতীয় স্থান লাভ করেন। ১৯২৭ সালে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকা মোহাম্মদিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। পরবর্তীতে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে এফ.এম পাশ করেন।

‎দেওবন্দে উচ্চশিক্ষা

‎১৯৩০ সালে তিনি উচ্চতর ইলমের সাধনায় ভারতের দেওবন্দ দারুল উলুম মাদ্রাসায় দাওরা-এ-হাদীসে ভর্তি হন। ১৯৩১ সালে দাওরায়ে হাদীস ও তাফসীরে প্রথম স্থান অধিকার করে পাঠ সমাপ্ত করেন। এরপর তিনি লাহোর ওরিয়েন্টাল কলেজে শিক্ষালাভ করেন এবং পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটি (লাহোর) থেকে ফাজেল উপাধি লাভ করেন।

‎শায়খুল ইসলাম হুসাইন আহমদ মাদানী (রহ.)-এর সোহবত

‎জ্ঞান পিপাসা নিবৃত্তির জন্য তিনি শায়খুল ইসলাম সাইয়্যেদ হুসাইন আহমদ মাদানী (রহ.)-এর দরবারে নিজেকে সমর্পণ করেন। তিনি মাদানী (রহ.)-এর নিকট পুনরায় বুখারী ও মুসলিম শরীফের দরসে শরিক হন এবং তাঁর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন। মাদানী (রহ.)-এর স্নেহ ও আধ্যাত্মিক দিক্ষায় তিনি গভীরভাবে প্রভাবিত হন।

‎পারিবারিক জীবন

‎১৯৩৭ সালে তিনি বৈবাহিক জীবনে আবদ্ধ হন। প্রথমা স্ত্রী মরহুমা বেগম ফাইজুন্নেছা কোরাইশীর গর্ভে সাহেবজাদা আছাদ হুছাইনী ও কন্যা বেগম ছাইদা আখতার জন্মগ্রহণ করেন। ফাইজুন্নেছার অকাল মৃত্যুর পর তিনি বেগম সুলতানা রাজিয়া সুলতানার সাথে দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর গর্ভে বেগম সাজেদা সুলতানা, মার্জিয়া সুলতানা ও জাকিয়া সুলতানা জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৬ সালে তিনি দামাদ ইসমাইল সাহেবসহ পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেন।

‎শিক্ষকতা ও প্রতিষ্ঠান গড়ার কাজ

‎তিনি তারাকান্দি সিনিয়র মাদ্রাসায় ৩-৪ বছর শিক্ষকতা করেন এবং এর সর্বাঙ্গীন উন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এরপর তিনি ঈশ্বরগঞ্জের ধনিয়াকান্দি হামিদিয়া মাদ্রাসায় ৪ বছর, কিশোরগঞ্জের আওলিয়াপাড়া মাদ্রাসায় ৬ বছর, নান্দাইলের জাহাঙ্গীরপুর সিনিয়র মাদ্রাসায় ৪ বছর অধ্যাপনা করেন। এছাড়াও তিনি ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট জেলার অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ, রাস্তা ও পুল নির্মাণ ও উন্নয়নে কঠোর পরিশ্রম করেন।

‎জনসেবা ও কর্মব্যস্ততা

‎জনাব হুছাইনী সাধারণ মানুষের দরদী বন্ধু ছিলেন। কারো কোনো আবদার তিনি উপেক্ষা করতে পারতেন না। একদিনে ১০০-১৫০ মাইল ভ্রমণ করে বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ, ধর্মীয় বক্তৃতা, রোগী দেখানো, তাবিজ-দোয়া ও জনসেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিতেন। তাঁর দৈনন্দিন কর্মসূচি ছিল অত্যন্ত ব্যস্ততাপূর্ণ, তবুও তিনি কখনো আলস্য বা অবহেলা প্রদর্শন করতেন না।

‎রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি

‎১৯৫৪ সালে তিনি ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে তিনি দুইবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি ছিলেন ইসলামী হুকুমাত কায়েমের পক্ষপাতী। ১৯৬৯ সালের নির্বাচনে তিনি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সমর্থন দেন। ১৯৭০ সালের কনফারেন্সে তিনি বলেন, “আপনারা জেনে রাখুন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেছে, এর বিরোধিতা করে কোনো লাভ নেই।”

‎মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকা

‎১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেন, তবে তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচারের তীব্র নিন্দা করেন এবং তাদের হুঁশিয়ারি দেন যে তাদের শাসন ধ্বংস হবে। মুক্তিবাহিনীর সদস্যরাও তাঁর কাছে দোয়া চাইতে আসতেন। বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধারা কিশোরগঞ্জ স্টেডিয়ামে তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।

‎কারামত

‎তাঁর জীবনে বেশ কিছু কারামত পরিলক্ষিত হয়:
‎১.একবার ঈদের মাঠে বৃষ্টি শুরু হলে তিনি মোনাজাত করেন এবং বৃষ্টি বন্ধ হয়।
‎২.এক হিন্দু বিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি বিবাহ পড়ান, পরবর্তীতে সেই দম্পতি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে।
‎৩.অনাবৃষ্টির সময় তিনি এস্তেসকার নামাজ পড়ে মোনাজাত করতেন এবং বৃষ্টি হত।
‎৪.এক ব্যক্তির লাউ চুরি রোধে তিনি একটি দোয়া শিখিয়ে দেন, যা ফলে চোর ধরা পড়ে।
‎৫.অনেক অসুস্থ ব্যক্তিকে তাঁর দোয়া ও তাবিজে নিরাময় লাভ করেছেন।

‎ইন্তেকাল ও দাফন

‎এই মহান সাধক ১৯৮৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর (৭ই মহররম, শুক্রবার) রাত্রে তারাকান্দিতে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। পরদিন পাকুন্দিয়া পাইলট স্কুল মাঠে লাখো মুসল্লির সমাগমে তাঁর জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেম আল্লামা সৈয়দ মুসলেহ উদ্দীন সাহেব স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে তাঁর জানাযার ইমামতি করেন। তাঁকে জামিয়া হুছাইনীয়া আছআদুল উলুম কওমী ইউনিভার্সিটির সামনে দাফন করা হয়।

‎পরিশিষ্ট

‎মাওলানা আব্দুল হালিম হুছাইনী (রহ.) ছিলেন একজন পরিশ্রমী শিক্ষক, দক্ষ সংগঠক, আধ্যাত্মিক সাধক এবং জনদরদী নেতা। তাঁর জীবন ছিল ইসলামী শিক্ষা, আধ্যাত্মিকতা ও জনসেবার অনন্য দৃষ্টান্ত। আজও অত্র অঞ্চলের মানুষ শ্রদ্ধার সাথে তাঁর স্মরণ করেন।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ, ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা

‎হযরত মাওলানা আব্দুল হালিম হুছাইনী (রহ.)-এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

আপডেট সময় ০১:৪৯:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

জন্ম ও শৈশব
‎পীরে কামেল আলহাজ্ব হযরত মাওলানা আব্দুল হালিম হুছাইনী (রহ.) ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার তারাকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন শান্ত, সংযত ও মেধাবী শিশু। তাঁর মা বাড়িতে ৫০-৬০ জন মেয়েকে কুরআন শিক্ষা দিতেন এবং তাঁর কাছেই হুছাইনী (রহ.) প্রাথমিক কুরআন শরীফ শিক্ষা লাভ করেন।

‎শিক্ষাজীবন

‎তাঁর শিক্ষাযাত্রা শুরু হয় স্থানীয় মক্তবে। ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত তারাকান্দি সিনিয়র মাদ্রাসায় ১৯২৬ সাল পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন এবং কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে ফাইনাল পরীক্ষায় তৃতীয় স্থান লাভ করেন। ১৯২৭ সালে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকা মোহাম্মদিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। পরবর্তীতে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে এফ.এম পাশ করেন।

‎দেওবন্দে উচ্চশিক্ষা

‎১৯৩০ সালে তিনি উচ্চতর ইলমের সাধনায় ভারতের দেওবন্দ দারুল উলুম মাদ্রাসায় দাওরা-এ-হাদীসে ভর্তি হন। ১৯৩১ সালে দাওরায়ে হাদীস ও তাফসীরে প্রথম স্থান অধিকার করে পাঠ সমাপ্ত করেন। এরপর তিনি লাহোর ওরিয়েন্টাল কলেজে শিক্ষালাভ করেন এবং পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটি (লাহোর) থেকে ফাজেল উপাধি লাভ করেন।

‎শায়খুল ইসলাম হুসাইন আহমদ মাদানী (রহ.)-এর সোহবত

‎জ্ঞান পিপাসা নিবৃত্তির জন্য তিনি শায়খুল ইসলাম সাইয়্যেদ হুসাইন আহমদ মাদানী (রহ.)-এর দরবারে নিজেকে সমর্পণ করেন। তিনি মাদানী (রহ.)-এর নিকট পুনরায় বুখারী ও মুসলিম শরীফের দরসে শরিক হন এবং তাঁর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন। মাদানী (রহ.)-এর স্নেহ ও আধ্যাত্মিক দিক্ষায় তিনি গভীরভাবে প্রভাবিত হন।

‎পারিবারিক জীবন

‎১৯৩৭ সালে তিনি বৈবাহিক জীবনে আবদ্ধ হন। প্রথমা স্ত্রী মরহুমা বেগম ফাইজুন্নেছা কোরাইশীর গর্ভে সাহেবজাদা আছাদ হুছাইনী ও কন্যা বেগম ছাইদা আখতার জন্মগ্রহণ করেন। ফাইজুন্নেছার অকাল মৃত্যুর পর তিনি বেগম সুলতানা রাজিয়া সুলতানার সাথে দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর গর্ভে বেগম সাজেদা সুলতানা, মার্জিয়া সুলতানা ও জাকিয়া সুলতানা জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৬ সালে তিনি দামাদ ইসমাইল সাহেবসহ পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেন।

‎শিক্ষকতা ও প্রতিষ্ঠান গড়ার কাজ

‎তিনি তারাকান্দি সিনিয়র মাদ্রাসায় ৩-৪ বছর শিক্ষকতা করেন এবং এর সর্বাঙ্গীন উন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এরপর তিনি ঈশ্বরগঞ্জের ধনিয়াকান্দি হামিদিয়া মাদ্রাসায় ৪ বছর, কিশোরগঞ্জের আওলিয়াপাড়া মাদ্রাসায় ৬ বছর, নান্দাইলের জাহাঙ্গীরপুর সিনিয়র মাদ্রাসায় ৪ বছর অধ্যাপনা করেন। এছাড়াও তিনি ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট জেলার অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ, রাস্তা ও পুল নির্মাণ ও উন্নয়নে কঠোর পরিশ্রম করেন।

‎জনসেবা ও কর্মব্যস্ততা

‎জনাব হুছাইনী সাধারণ মানুষের দরদী বন্ধু ছিলেন। কারো কোনো আবদার তিনি উপেক্ষা করতে পারতেন না। একদিনে ১০০-১৫০ মাইল ভ্রমণ করে বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ, ধর্মীয় বক্তৃতা, রোগী দেখানো, তাবিজ-দোয়া ও জনসেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিতেন। তাঁর দৈনন্দিন কর্মসূচি ছিল অত্যন্ত ব্যস্ততাপূর্ণ, তবুও তিনি কখনো আলস্য বা অবহেলা প্রদর্শন করতেন না।

‎রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি

‎১৯৫৪ সালে তিনি ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে তিনি দুইবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি ছিলেন ইসলামী হুকুমাত কায়েমের পক্ষপাতী। ১৯৬৯ সালের নির্বাচনে তিনি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সমর্থন দেন। ১৯৭০ সালের কনফারেন্সে তিনি বলেন, “আপনারা জেনে রাখুন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেছে, এর বিরোধিতা করে কোনো লাভ নেই।”

‎মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকা

‎১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেন, তবে তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচারের তীব্র নিন্দা করেন এবং তাদের হুঁশিয়ারি দেন যে তাদের শাসন ধ্বংস হবে। মুক্তিবাহিনীর সদস্যরাও তাঁর কাছে দোয়া চাইতে আসতেন। বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধারা কিশোরগঞ্জ স্টেডিয়ামে তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।

‎কারামত

‎তাঁর জীবনে বেশ কিছু কারামত পরিলক্ষিত হয়:
‎১.একবার ঈদের মাঠে বৃষ্টি শুরু হলে তিনি মোনাজাত করেন এবং বৃষ্টি বন্ধ হয়।
‎২.এক হিন্দু বিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি বিবাহ পড়ান, পরবর্তীতে সেই দম্পতি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে।
‎৩.অনাবৃষ্টির সময় তিনি এস্তেসকার নামাজ পড়ে মোনাজাত করতেন এবং বৃষ্টি হত।
‎৪.এক ব্যক্তির লাউ চুরি রোধে তিনি একটি দোয়া শিখিয়ে দেন, যা ফলে চোর ধরা পড়ে।
‎৫.অনেক অসুস্থ ব্যক্তিকে তাঁর দোয়া ও তাবিজে নিরাময় লাভ করেছেন।

‎ইন্তেকাল ও দাফন

‎এই মহান সাধক ১৯৮৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর (৭ই মহররম, শুক্রবার) রাত্রে তারাকান্দিতে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। পরদিন পাকুন্দিয়া পাইলট স্কুল মাঠে লাখো মুসল্লির সমাগমে তাঁর জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেম আল্লামা সৈয়দ মুসলেহ উদ্দীন সাহেব স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে তাঁর জানাযার ইমামতি করেন। তাঁকে জামিয়া হুছাইনীয়া আছআদুল উলুম কওমী ইউনিভার্সিটির সামনে দাফন করা হয়।

‎পরিশিষ্ট

‎মাওলানা আব্দুল হালিম হুছাইনী (রহ.) ছিলেন একজন পরিশ্রমী শিক্ষক, দক্ষ সংগঠক, আধ্যাত্মিক সাধক এবং জনদরদী নেতা। তাঁর জীবন ছিল ইসলামী শিক্ষা, আধ্যাত্মিকতা ও জনসেবার অনন্য দৃষ্টান্ত। আজও অত্র অঞ্চলের মানুষ শ্রদ্ধার সাথে তাঁর স্মরণ করেন।


প্রিন্ট