ঢাকা ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রধান নাজিরের বদলী নিয়ে চরম অসন্তোষ Logo মহম্মদপুরে বিএনপি’র নির্বাচনী পথ সভা অনুষ্ঠিত Logo পীরগঞ্জে বিএনপির উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত Logo দেশের ধন্যাঢ্য ব্যক্তিরাও প্রতারণার শিকার অনিক ও সোহেলের ভুয়া “প্রাচীন পিলার ও কয়েন” চক্র Logo দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই প্রায় অর্ধশত বদলি বানিজ্য পিএইচডি জালিয়াতি-বদলি বানিজ্য-ঠিকাদারি সিন্ডিকেটের মূলহোতা খালেকুজ্জামান চৌধুরী Logo কাচিঘাটা রেঞ্জে গাছকাটা সিন্ডিকেটের তাণ্ডব রাতে চার–পাঁচশ গাছ উজাড়—বন রক্ষাকারীরাই অভিযুক্ত!** স্থানীয়দের অভিযোগ: “৫ আগস্টের পর এলাকা একেবারে মগের মুল্লুক—বন কেটে লুটে খাচ্ছে সবাই Logo চীনে ট্রেন দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত Logo ১২ ঘণ্টায় দ্বিতীয়বার ভূমিকম্পে কাঁপল ইন্দোনেশিয়া Logo প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলা জয় ও পুতুলের ৫ বছরের কারাদণ্ড Logo তিন মামলায় হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড

সঞ্চয়পত্রে সুদ কমানোর কথা ভাবছে সরকার

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:০৫:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
  • ৭১ ১৮৪৪.০০০ বার পড়া হয়েছে

ছবি: সংগৃহীত

সঞ্চয়পত্র নির্ভরতা থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছে সরকার। উচ্চ সুদের বোঝা কমাতে আগামী বছর আরও সুদহার কমানোর পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারের এ উদ্যোগকে ইতিবাচক বলছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো, তবে বিনিয়োগকারীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ স্পষ্ট।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাস্তবতায় অনেক পরিবার টিকে আছে সঞ্চয়পত্রের আয়ের ওপর। কেউ কেউ বলছেন, ব্যাংকের অনিশ্চয়তা থাকলেও সঞ্চয়পত্র সরকারি হওয়ায় কিছুটা ভরসা ছিল। এখন সেটিও সংকুচিত হলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বহু মানুষ।

বাজেট ঘাটতি পূরণ ও উন্নয়ন খাতে অর্থায়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে সরকার নির্ভর করে আসছে সঞ্চয়পত্র বিক্রির ওপর। তবে এই মাধ্যমটি ধীরে ধীরে নিরুৎসাহিত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রের সর্বোচ্চ সুদহার কমিয়ে ১১.৯৮ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৯.৭২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘মানুষ যেন ট্রেজারি বন্ড বা বিলে বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকে, সে দিকেই সরকার ভাবছে এবং সে অনুযায়ী কাজও করছে।’

এদিকে উচ্চ সুদে নেওয়া সরকারের ঋণের চাপ কমাতে সুদহার কমানোর পক্ষে মত দিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোও। অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ বলেন, ‘যেহেতু এখন মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কে নেমেছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই সঞ্চয়পত্রের সুদ কমানো উচিত। তা না হলে সরকার ঋণ পরিশোধে হিমশিম খাবে।’

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিনিয়োগে মন্দাভাব, কর্মসংস্থানের অভাব ও আয় কমে যাওয়ার এই সময় সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর জন্য বিকল্প নিরাপদ বিনিয়োগ ব্যবস্থা তৈরি করা জরুরি।

বিআইবিএম-এর সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘যারা দীর্ঘদিন সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করতেন, তাদের বলা উচিত—বিকল্প বিনিয়োগ উৎসের কথাও ভাবতে হবে। কারণ সঞ্চয়পত্রে এককভাবে ভরসা করাটা এখন আর বাস্তবসম্মত নয়।’ তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও প্রশ্ন তুলছে।

গত অর্থবছরের হিসাব বলছে, সঞ্চয়পত্রে নিট বিক্রি হয়েছে ঋণাত্মক—প্রায় ৬ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সরকারের যতো টাকা বিক্রি হয়েছে, তার চেয়ে বেশি টাকা খরচ হয়েছে পূর্ববর্তী সঞ্চয়পত্রের সুদ ও আসল পরিশোধে।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রধান নাজিরের বদলী নিয়ে চরম অসন্তোষ

সঞ্চয়পত্রে সুদ কমানোর কথা ভাবছে সরকার

আপডেট সময় ১১:০৫:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

সঞ্চয়পত্র নির্ভরতা থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছে সরকার। উচ্চ সুদের বোঝা কমাতে আগামী বছর আরও সুদহার কমানোর পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারের এ উদ্যোগকে ইতিবাচক বলছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো, তবে বিনিয়োগকারীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ স্পষ্ট।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাস্তবতায় অনেক পরিবার টিকে আছে সঞ্চয়পত্রের আয়ের ওপর। কেউ কেউ বলছেন, ব্যাংকের অনিশ্চয়তা থাকলেও সঞ্চয়পত্র সরকারি হওয়ায় কিছুটা ভরসা ছিল। এখন সেটিও সংকুচিত হলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বহু মানুষ।

বাজেট ঘাটতি পূরণ ও উন্নয়ন খাতে অর্থায়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে সরকার নির্ভর করে আসছে সঞ্চয়পত্র বিক্রির ওপর। তবে এই মাধ্যমটি ধীরে ধীরে নিরুৎসাহিত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রের সর্বোচ্চ সুদহার কমিয়ে ১১.৯৮ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৯.৭২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘মানুষ যেন ট্রেজারি বন্ড বা বিলে বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকে, সে দিকেই সরকার ভাবছে এবং সে অনুযায়ী কাজও করছে।’

এদিকে উচ্চ সুদে নেওয়া সরকারের ঋণের চাপ কমাতে সুদহার কমানোর পক্ষে মত দিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোও। অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ বলেন, ‘যেহেতু এখন মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কে নেমেছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই সঞ্চয়পত্রের সুদ কমানো উচিত। তা না হলে সরকার ঋণ পরিশোধে হিমশিম খাবে।’

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিনিয়োগে মন্দাভাব, কর্মসংস্থানের অভাব ও আয় কমে যাওয়ার এই সময় সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর জন্য বিকল্প নিরাপদ বিনিয়োগ ব্যবস্থা তৈরি করা জরুরি।

বিআইবিএম-এর সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘যারা দীর্ঘদিন সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করতেন, তাদের বলা উচিত—বিকল্প বিনিয়োগ উৎসের কথাও ভাবতে হবে। কারণ সঞ্চয়পত্রে এককভাবে ভরসা করাটা এখন আর বাস্তবসম্মত নয়।’ তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও প্রশ্ন তুলছে।

গত অর্থবছরের হিসাব বলছে, সঞ্চয়পত্রে নিট বিক্রি হয়েছে ঋণাত্মক—প্রায় ৬ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সরকারের যতো টাকা বিক্রি হয়েছে, তার চেয়ে বেশি টাকা খরচ হয়েছে পূর্ববর্তী সঞ্চয়পত্রের সুদ ও আসল পরিশোধে।


প্রিন্ট