যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি দক্ষ কর্মী ভিসা বা এইচ-১বি ভিসার জন্য নতুন ফি আরোপ করেছে। এই ফি অনুযায়ী আবেদনকারীদের এককালীন ১ লাখ মার্কিন ডলার দিতে হবে। এই সিদ্ধান্তকে ভারতের পক্ষ থেকে উদ্বেগজনক হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ ভারতীয় নাগরিকরা এই ভিসার প্রধান সুবিধাভোগী। নতুন নিয়ম ২১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
মূলত, মার্কিন এইচ-১বি ভিসা কর্মীদের জন্য ভারত অন্যতম প্রধান উৎস। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত শুক্রবার এই নতুন ফি ঘোষণা করেছেন। বর্তমানে নেওয়া ফি-এর তুলনায় এটি প্রায় ৬০ গুণ বেশি। নতুন ফি প্রবর্তনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তি হলো, কিছু ক্ষেত্রে ভিসাগুলো অপব্যবহার করা হচ্ছে, যা মার্কিন কর্মীদের ক্ষতি করছে এবং স্থানীয় মজুরি কমাচ্ছে।
ভারতের পক্ষ থেকে এই ফি আরোপকে মানবিক এবং পারিবারিক সমস্যার কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নতুন ফি পরিবারগুলোর মধ্যে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে এবং এর ফলে মানবিক পরিণতি দেখা দিতে পারে। ভারতের ন্যাসকমও মন্তব্য করেছে, এত অল্প সময়ে এত বড় পরিবর্তন আনার ফলে বিশ্বজুড়ে ব্যবসা, পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের জন্য “চরম অনিশ্চয়তা” তৈরি হয়েছে।
বড় মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন মাইক্রোসফট, জে পি মরগান, অ্যামাজন ও গোল্ডম্যান স্যাকস, তাদের কর্মীদের সতর্ক করেছে। তারা বলেছেন, যারা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থাকবেন, তারা দ্রুত দেশে ফেরেন অথবা দেশে থাকলে বাইরে না যান। হোয়াইট হাউস নিশ্চিত করেছে, বর্তমান ভিসা বা নবায়ন আবেদনের ক্ষেত্রে এই ফি প্রযোজ্য হবে না। তবে জাতীয় স্বার্থে কেসভিত্তিক ছাড় দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় চার লাখ এইচ-১বি ভিসা অনুমোদন করেছে, যার মধ্যে দুই লাখ ৬০ হাজারটি ছিল নবায়ন। নতুন ফি মূলত পরবর্তী ভিসা আবেদনের লটারি প্রক্রিয়ায় প্রযোজ্য হবে।
এ পরিস্থিতি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের জন্যও প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল আগামী সোমবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন, যেখানে এই ইস্যুতে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। তথ্যসূত্র : বিবিসি
প্রিন্ট