রাজনৈতিক আনুগত্যের ছায়ায় প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে যাওয়ায় কর্মকর্তাদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ। প্রশাসনে ফের উত্তাপ বেড়েছে আমলাদের রাজনৈতিক আনুগত্যের প্রশ্নে।
বিএনপিপন্থী বলে পরিচিত কর্মকর্তারা দিন দিন কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। গুরুত্বপূর্ণ পদে এখন বসে আছে ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ কিংবা তাঁদের আস্থাভাজন ফ্যাসিস্ট সরকারের কর্মকর্তারা। এর ফলে পদায়ন, পদোন্নতি এবং নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় বৈষম্য তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, যেসব কর্মকর্তার পরিচয় বিএনপিপন্থী হিসেবে জানা যায়, তাদের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে না। আবার যারা দায়িত্ব পালন করছেন তাদের দায়িত্ব কমিয়ে আনা হচ্ছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত বিরোধী কর্মকর্তাদের কৌশলে কোণঠাসা করে রাখা হচ্ছে। একেবারেই ভালো পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ। জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড.মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রশাসনের জন্য সবচেয়ে বড় শক্তি হলো এর নিরপেক্ষতা। রাজনৈতিক বিবেচনায় কর্মকর্তাদের বিভাজন করলে তা শুধু প্রশাসনকেই দুর্বল করে না, রাষ্ট্রেরও অপূরণীয় ক্ষতি করে। সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব, সমন্বয়ের অভাব এবং জনসেবার মান নিম্নগামী হওয়ায় প্রশাসন গতিশীল হচ্ছে না।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনে-মন্ত্রণালয়ে এখনো শৃঙ্খলা ও গতি ফেরেনি। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে প্রশাসনের একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে জামায়াতপন্থী আমলারা। আর একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে ফ্যাসিস্ট হাসিনার অলিগার্ক দিল্লির চেতনাধারী আমলারা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগ, স্বাস্থ্য, পরিকল্পনা কমিশন, পিএসসিসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বর্তমান জামায়াতের দখলে। একারণে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে প্রশাসনে বিএনপিপন্থী কর্মকর্তারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। এতে সমন্বয়হীনতায় ভুগছে রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম। তবে বর্তমান প্রশাসনের কর্মকর্তারা রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম নিরপেক্ষ ভাবে চালাতে চান। কিন্তু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনে ছাত্রশিবির জয়ের কারণে জামায়াত মনে করছে প্রশাসন তাদের দখলে চলে এসেছে। সে কারণে এবার জামায়াত বিরোধী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাঝে একটি ঐক্য তৈরি হচ্ছে। যদিও তারা মনে করছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর প্রশাসন এক নয়।
অন্যদিকে তুলনামূলকভাবে কম অভিজ্ঞ কিংবা অযোগ্য কর্মকর্তারাও দ্রুত পদোন্নতি পাচ্ছেন, যদি তারা রাজনৈতিকভাবে সঠিক শিবিরে থাকেন। দুই সপ্তাহ আগে পদোন্নতি দিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহমান তরফদারকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে পদায়ন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু গত ১৪ দিনেও কাক্সিক্ষত সচিব পদে যোগদান করতে পারেননি বিসিএস ১৫তম ব্যাচের এই কর্মকর্তা। যোগ দিতে গেলে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা তাকে পরে যোগ দিতে বলেন। দুই দিন পরে গেলেও উপদেষ্টার অনুমতি মেলেনি। জানা গেছে, মো.আব্দুর রহমান বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা হওয়ার কারণে তাঁর যোগদানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জামায়াতপন্থী আমলারা। তাদের সঙ্গে রয়েছে কিছু উপদেষ্টা। বর্তমান সরকারের তের মাস পেরিয়ে গেলেও, প্রশাসনে বিএনপিপন্থী কর্মকর্তাদের নিয়োগের জন্য চেষ্টা করেনি বিএনপি। এদিকে সচিবসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখলের পাশাপাশি এবার ৪৫ জন ডিসি ও ২৫০ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ১৫০ জন থানা ওসিকে নিয়োগ দেয়ার জন্য কাজ করছে জামায়াতপন্থী আমলারা। এজন্য তারা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে তাদের অনুকূলে নেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপির ভেতরেও সংকট কম নয়। অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বর্তমান কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী সব স্তরে বিভক্তি এখনো রয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিএনপি যদি নিজেদের ভেতর সংস্কার না করে তবে বিএনপির ভেতরেই সংকট তৈরি হবে।
নিয়োগে গড়িমসি, কাজে স্থবিরতা : ফ্যাসিস্ট হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে প্রায় সবই দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ হয়েছে। এই সময়ে প্রশাসনে সাড়ে ১০ লাখ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দলীয় এমপিদের দেওয়া আধা-সরকারি পত্র ছাড়া প্রাথমিকে কারোরই চাকরি হয়নি। শূন্য পদ বাদে বর্তমানে ১২ লাখ ৩১ হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে গত ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত নতুন নিয়োগ ছয় লাখ ৪৮ হাজার ৯৯৯ জন। গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে পদোন্নতি দেওয়া শুরু হয়। গত বছরের ৮ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৪ আগস্ট পর্যন্ত উপসচিব পদে ১৪১ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৪২৪ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ১৪৯ জন, গ্রেড-১ পদে ২৬ জন এবং সচিব বা সিনিয়র সচিব পদে ৪৫ জনসহ মোট ৭৮৫ জন কর্মকর্তাকে নিয়মিত পদোন্নতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে সচিব পদে ১১৯ জন, গ্রেড-১ পদে ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন এবং উপসচিব পদে চারজনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে সচিব বা সিনিয়র সচিব নয়জন, গ্রেড-১ পদে একজন এবং অতিরিক্ত সচিব পদে ১৯ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত ১৬৪ জন কর্মকর্তা কর্মকাল শেষে স্বাভাবিক অবসরে গেছেন।
সম্প্রতি অন্যান্য ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৮ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতির সুপারিশ করেছে পর্যালোচনা কমিটি। তাদের কোথাও পদায়ন করা হচ্ছে না। আবার গত ১৭ বছর ধরে যারা বঞ্চিত ছিলো তারা পদোন্নতির জন্য উপদেষ্টা কমিটি থেকে শুরু করে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। তারা পাচ্ছেন না কোনো পদায়ন। আবার হতে পাচ্ছেন না সচিব। আবার অনেক কর্মকর্তাকে যোগদান করতে দেয়া হচ্ছে না। তাদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার একান্ত সহকারী সচিব নবম ব্যাচের কর্মকর্তা মো. শামসুল আলম, নবম ব্যাচের কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান, মো. কামরুজ্জামান, ১১ তম ব্যাচের কর্মকর্তা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এ পি এস ড. ফরিদ উদ্দিন, ১১ তম ব্যাচের কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান, বাবুল মিঞা, মো. দেলোয়ার হোসেন, সায়মা শাহীন সুলতানা, খন্দকার মো. আব্দুল হাই এবং মো. নজরুল ইসলাম, ১০ম ব্যাচের কর্মকর্তা মাহবুব কবীর মিলন, ১৫ তম ব্যাচের কর্মকর্তা মো. শেখাবুর রহমান, মো. এ কে এম তারিকুল ইসলাম, মো. আফজালুর রহমান, মো. আবদুল হাকিম, মো. রকিবুল হাসান, মো. ইউনুছ আলী, মো. শাহজাহান মিঞা, মো. গোলাম সারওয়ার ভুঁইয়া, মো. সাইদুর রহমান খান, এবং ৮২ তম ব্যাচের ড. মো. নাজমুল আমীন মজুমদার, ড. এহসান, খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব সুরতুজ্জামান প্রমুখ। এসব কর্মকর্তার পদায়নের জন্য প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জামায়াতপন্থী অফিসাররা।
জানা গেছে, রাজনৈতিক এমন টানাপোড়েন প্রশাসনিক কাজে সরাসরি প্রভাব ফেলছে। একাধিক মন্ত্রণালয়ে সচিব পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। কর্মকর্তাদের দাবি, ক্ষমতাসীনরা ‘নিজেদের মানুষ’ বসাতে চাইছেন বলে সচিব নিয়োগে ইচ্ছাকৃত বিলম্ব হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কাজ করার পরিবেশ প্রতিদিনই কঠিন হয়ে উঠছে। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঝুলে আছে কেবল এ কারণে যে, কাকে বসানো হবে-এটা এখন প্রশাসনিক দক্ষতার চেয়ে রাজনৈতিক আনুগত্যের ওপর নির্ভর করছে। ফলে প্রকল্প অনুমোদন, উন্নয়ন খরচ ছাড়, এমনকি সাধারণ প্রশাসনিক ফাইলও অনিশ্চয়তায় ঝুলে যাচ্ছে।
কর্মকর্তাদের ভেতরে জমছে ক্ষোভ : প্রশাসনের অভ্যন্তরে অসন্তোষ দিন দিন বাড়ছে। কর্মকর্তা সমাজে আলোচনার মূল বিষয় রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে যোগ্য কর্মকর্তাদের বদলী বা পদোন্নতি আটকে দেওয়ার ঘটনা। তরুণ কর্মকর্তাদের অনেকেই মনে করছেন, এতে প্রশাসনের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, মাঠ প্রশাসনের ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা কোনো ব্যক্তি বা দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করলে তাকে প্রত্যাহার করে প্রচলিত আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা থেকে পদোন্নতি পাওয়া ডিসিদের তুলে এনে সেখানে নতুন ডিসি পদায়ন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। হোমওয়ার্ক ভালো থাকলে যে দিনটাকে কেন্দ্র করে কাজটা করা হচ্ছে, সেই দিনটা ভালো হবে, কোনও সমস্যা হবে না।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট- গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাস্তবতা : চলতি বছরের ৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বড় ধরনের পালাবদল ঘটিয়েছে। বিএনপি ক্ষণস্থায়ী গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের চাপের মুখে ফেললেও সেটি টেকসই রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করতে পারেনি। এর ফলে প্রশাসনে বিএনপিপন্থী কর্মকর্তাদের অবস্থান আরো দুর্বল হয়ে পড়েছে। একজন অবসরপ্রাপ্ত সচিব মনে করেন, ২০০১ থেকে ২০২৫ এই সময়ে প্রশাসনে একাধিক প্রজন্ম তৈরি হয়েছে। নতুন প্রজন্ম রাজনৈতিকভাবে তেমন ‘আস্তানা কেন্দ্রিক’ নয়। তারা চাকরিকে ক্যারিয়ার হিসেবে দেখে, রাজনৈতিক আনুগত্য হিসেবে নয়। কিন্তু প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে এখনো পুরোনো ধারা কাজ করছে। সেই কারণে বিএনপিপন্থী পরিচিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি আটকে দেওয়া হচ্ছে। ভারতের ভূমিকা ও নতুন প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গি : বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব দীর্ঘদিনের। তবে নতুন প্রজন্মের কর্মকর্তাদের মধ্যে এ নিয়ে অস্বস্তি স্পষ্ট। তাঁরা মনে করছেন, দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একতরফা নির্ভরশীলতা বাংলাদেশের স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
নাম প্রকশে অনিচ্ছুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন গবেষক ইনকিলাবকে বলেন, প্রশাসনের তরুণ প্রজন্ম রাজনীতির প্রতি আগ্রহ কম দেখালেও, ভারতের ভূমিকাকে তারা সমালোচনামূলকভাবে দেখে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রশাসনের শীর্ষ পদগুলো এখনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন প্রজন্মের কর্মকর্তারা চাকরিকে পেশা হিসেবে দেখলেও, রাজনৈতিক ক্ষমতার টানাপোড়েন তাঁদের কাজের উদ্যম কমিয়ে দিচ্ছে।
রাষ্ট্রে সমন্বয়হীনতা বাড়ছে : রাজনৈতিক আনুগত্যকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণে সমন্বয়ের ঘাটতি প্রকট আকার ধারণ করেছে। এক মন্ত্রণালয়ের সচিব পদ শূন্য, অন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবিত সিদ্ধান্ত ঝুলে আছে, আবার কোথাও অনুমোদনের জন্য ফাইল আটকে আছে মাসের পর মাস। একজন নীতিনির্ধারক বিশ্লেষক বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যখন রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠে পরিণত হয়, তখন নীতিগত ধারাবাহিকতা হারিয়ে যায়। বর্তমানে যা ঘটছে, তা বাংলাদেশের প্রশাসনের জন্য একটি বড় হুমকি। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব, বাজেট খরচে সমস্যা এবং সাধারণ মানুষের সেবা প্রাপ্তিতে ভোগান্তি ক্রমেই বাড়ছে।
প্রিন্ট