ঢাকা ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কালিয়াকৈরে জমির পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি দলিল জাল জালিয়াতির অভিযোগ Logo ভৈরব জেলা বাস্তবায়নের দাবীতে মানব বন্ধন Logo আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ-আল্লামা মামুনুল হক। Logo ভাঙ্গুড়ায় তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার প্রদর্শনী, নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস Logo ইলিশ রক্ষায় ব্যার্থ মৎস অধিদপ্তর সাংবাদিক দেখে দৌড়ে পালালেন ইলিশ বোঝায় ট্রলার Logo সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে নাগরিক প্লাটফর্ম ও যুব ফোরামের পরামর্শ সভা Logo মিরপুরে গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন Logo মার্চ টু সচিবালয়’ এ অংশ নিতে শহীদ মিনারে শিক্ষকদের ঢল Logo রাজধানীতে জামায়াতসহ সাত দলের মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু Logo আমরা কারাগারে নয়, ছিলাম এক কসাইখানায়

কাঠমান্ডু থেকে হেলিকপ্টারে কোথায় যাচ্ছেন ওলি

দুর্নীতিবিরোধী সহিংস বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন। আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রকাশ সিলওয়াল।

এনডিটিভির একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কে পি শর্মা অলি কাঠমান্ডুতে একটি হেলিকপ্টারে উঠেছেন। তবে এর গন্তব্য কোথায় তা পরিষ্কার নয়।

সোশাল মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে দুদিন আগে কাঠমান্ডুতে যে বিক্ষোভের সূচনা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত তা প্রধানমন্ত্রীর পতন ঘটাল।

এর আগে মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা নেপালের পার্লামেন্ট ভবন ও একাধিক রাজনীতিকের বাড়িতে ও দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেয়। বিক্ষোভ ক্রমশ কাঠমান্ডু এবং বড় বড় শহরের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছিল। রাজধানী পরিণত হয়েছিল রণক্ষেত্রে।

নিবন্ধনহীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপ বন্ধ করে দেওয়ায় রুষ্ট জেন-জি বিক্ষোভকারীরা সোমবার কাঠমান্ডুর রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখায়। তারা দুর্নীতি এবং ব্যবস্থার সংকট নিয়েও প্রশ্ন তোলে।

বিক্ষোভ পরে সহিংসতায় রূপ নিলে পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থীসহ ১৯ জন প্রাণ হারান। এরপরই আন্দোলন সরকারবিরোধী রূপ নেয়। বাধ্য হয়ে সরকার সোশাল মিডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুললেও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ মূল দাবিতে পরিণত হয়। বিভিন্ন দল এমনকি ওলির মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যও এই দাবিতে সংহতি জানান।

নেপালি কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে গত বছরের জুলাইয়ে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন কমিউনিস্ট নেতা ওলি। এর আগে ২০১৫-১৬, ২০১৮-২১ ও পরে ২০২১ সালে আরও একবার সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।

কাঠমান্ডু পোস্ট লিখেছে, দৃঢ়চেতা অবস্থান ও জাতীয়তাবাদী নীতির জন্য পরিচিত ওলি স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত অস্থিরতা এবং কর্তৃত্ববাদী চর্চার অভিযোগ নিয়ে দায়িত্ব ছাড়লেন। যার দরুন দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের পর নেপালেও প্রবল গণবিক্ষোভে সরকারপতনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো।

এর আগে নেপালজুড়ে চলমান বিক্ষোভের কারণে সৃষ্ট নিরাপত্তা উদ্বেগে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। কোটেশ্বরের কাছে ধোঁয়া দেখা যাওয়ার পর স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ১টার দিকে ত্রিভুবনে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের উড্ডয়ন ও অবতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে বিমানবন্দরে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা একের পর এক মন্ত্রী ও রাজনীতিকের বাড়িতে আগুন ও ভাঙচুর শুরু করলে মঙ্গলবার দুপুর থেকে সেনাবাহিনী সব মন্ত্রী ও বড় বড় দলের শীর্ষ নেতাদের তাদের বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্ট থেকে হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া শুরু করে। তাদেরকে অজ্ঞাত সেনাঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়।

মঙ্গলবার জেন-জি বিক্ষোভকারীরা নেপালের সচিবালয় সিংহ দুর্বার প্রাঙ্গণেও ঢুকে পড়ে।

ওলির পথ ধরে প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পুডেলও পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন বলে একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে এনডিটিভি।

নেপালে রাষ্ট্রপতি সরকার প্রধান, আর প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী প্রধান। প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করলেই সরকারের পতন ঘটবে।

তবে সেক্ষেত্রে কে দায়িত্ব নেবে, বা পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা এখনও অনিশ্চয়তায় ভরা।

পরিস্থিতি শান্ত এবং নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত সেনাবাহিনী দায়িত্বভার নেবে বলে এরইমধ্যে নেপালজুড়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কালিয়াকৈরে জমির পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি দলিল জাল জালিয়াতির অভিযোগ

কাঠমান্ডু থেকে হেলিকপ্টারে কোথায় যাচ্ছেন ওলি

আপডেট সময় ০৫:১৪:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দুর্নীতিবিরোধী সহিংস বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন। আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রকাশ সিলওয়াল।

এনডিটিভির একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কে পি শর্মা অলি কাঠমান্ডুতে একটি হেলিকপ্টারে উঠেছেন। তবে এর গন্তব্য কোথায় তা পরিষ্কার নয়।

সোশাল মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে দুদিন আগে কাঠমান্ডুতে যে বিক্ষোভের সূচনা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত তা প্রধানমন্ত্রীর পতন ঘটাল।

এর আগে মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা নেপালের পার্লামেন্ট ভবন ও একাধিক রাজনীতিকের বাড়িতে ও দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেয়। বিক্ষোভ ক্রমশ কাঠমান্ডু এবং বড় বড় শহরের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছিল। রাজধানী পরিণত হয়েছিল রণক্ষেত্রে।

নিবন্ধনহীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপ বন্ধ করে দেওয়ায় রুষ্ট জেন-জি বিক্ষোভকারীরা সোমবার কাঠমান্ডুর রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখায়। তারা দুর্নীতি এবং ব্যবস্থার সংকট নিয়েও প্রশ্ন তোলে।

বিক্ষোভ পরে সহিংসতায় রূপ নিলে পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থীসহ ১৯ জন প্রাণ হারান। এরপরই আন্দোলন সরকারবিরোধী রূপ নেয়। বাধ্য হয়ে সরকার সোশাল মিডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুললেও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ মূল দাবিতে পরিণত হয়। বিভিন্ন দল এমনকি ওলির মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যও এই দাবিতে সংহতি জানান।

নেপালি কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে গত বছরের জুলাইয়ে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন কমিউনিস্ট নেতা ওলি। এর আগে ২০১৫-১৬, ২০১৮-২১ ও পরে ২০২১ সালে আরও একবার সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।

কাঠমান্ডু পোস্ট লিখেছে, দৃঢ়চেতা অবস্থান ও জাতীয়তাবাদী নীতির জন্য পরিচিত ওলি স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত অস্থিরতা এবং কর্তৃত্ববাদী চর্চার অভিযোগ নিয়ে দায়িত্ব ছাড়লেন। যার দরুন দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের পর নেপালেও প্রবল গণবিক্ষোভে সরকারপতনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো।

এর আগে নেপালজুড়ে চলমান বিক্ষোভের কারণে সৃষ্ট নিরাপত্তা উদ্বেগে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। কোটেশ্বরের কাছে ধোঁয়া দেখা যাওয়ার পর স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ১টার দিকে ত্রিভুবনে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের উড্ডয়ন ও অবতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে বিমানবন্দরে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা একের পর এক মন্ত্রী ও রাজনীতিকের বাড়িতে আগুন ও ভাঙচুর শুরু করলে মঙ্গলবার দুপুর থেকে সেনাবাহিনী সব মন্ত্রী ও বড় বড় দলের শীর্ষ নেতাদের তাদের বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্ট থেকে হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া শুরু করে। তাদেরকে অজ্ঞাত সেনাঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়।

মঙ্গলবার জেন-জি বিক্ষোভকারীরা নেপালের সচিবালয় সিংহ দুর্বার প্রাঙ্গণেও ঢুকে পড়ে।

ওলির পথ ধরে প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পুডেলও পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন বলে একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে এনডিটিভি।

নেপালে রাষ্ট্রপতি সরকার প্রধান, আর প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী প্রধান। প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করলেই সরকারের পতন ঘটবে।

তবে সেক্ষেত্রে কে দায়িত্ব নেবে, বা পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা এখনও অনিশ্চয়তায় ভরা।

পরিস্থিতি শান্ত এবং নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত সেনাবাহিনী দায়িত্বভার নেবে বলে এরইমধ্যে নেপালজুড়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।


প্রিন্ট