ঢাকা ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আশুলিয়ায় যানজট, মাদক ও সন্ত্রাস নিরসনে সুশীল সমাজের আলোচনা সভা Logo মিরপুর অগ্নিকাণ্ডে এখনো নিখোঁজ ১৩ জন Logo চাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু Logo ইসরায়েলকে সহায়তার অভিযোগে ৩৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করলো হামাস Logo ভালবাসার বন্ধনের বিরুদ্ধে মিথ্যে অপহরণ মামলা ছেলের বাবা কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে আবেদন Logo কালিয়াকৈরে জমির পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি দলিল জাল জালিয়াতির অভিযোগ Logo ভৈরব জেলা বাস্তবায়নের দাবীতে মানব বন্ধন Logo আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ-আল্লামা মামুনুল হক। Logo ভাঙ্গুড়ায় তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার প্রদর্শনী, নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস Logo ইলিশ রক্ষায় ব্যার্থ মৎস অধিদপ্তর সাংবাদিক দেখে দৌড়ে পালালেন ইলিশ বোঝায় ট্রলার

মেক্সিকোতে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ নিখোঁজ, প্রতিবাদে রাজপথে জনগণ

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:৪৭:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫
  • ৯০ ১০.০০০ বার পড়া হয়েছে

ছবি: রয়টার্স

মেক্সিকোতে ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় দেশটির জনগণ ক্ষুব্ধ। ২০০৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফেলিপে ক্যালদেরন কর্তৃক ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণার পর থেকে এই নিখোঁজের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে, যা বর্তমানে প্রায় দেড় লাখে পৌঁছেছে। খবর বিবিসির।

গুমের ঘটনা প্রকাশ্যে আনতে এবং তা বন্ধে সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপের দাবিতে নিখোঁজদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং মানবাধিকার কর্মীরা মেক্সিকো সিটি, গুয়াদালাহারা, কর্দোভা ও অন্যান্য শহরের রাস্তায় নেমে এসেছেন। এসময় তারা প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবামের সরকারের কাছে ন্যায়বিচার চেয়েছেন এবং নিখোঁজ প্রিয়জনদের খুঁজে বের করতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন।

নিখোঁজদের পরিবারের দাবি, তাদের প্রিয়জনদের জোর করে মাদক চক্রে নিয়োগ করা হয়েছে এবং রাজি না হওয়ায় তাদের হত্যা করা হয়েছে। যদিও এসব ঘটনায় মূলত মাদক চক্র এবং অন্যান্য অপরাধী দল দায়ী, তবে নিরাপত্তা বাহিনীও এসবের জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করা হয়।

মেক্সিকোর ওয়াহাকা রাজ্য থেকে শুরু করে উত্তরের সোনোরা ও দুরাঙ্গো পর্যন্ত বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা প্রিয়জনদের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন এবং এই সমস্যার সমাধানে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। এই বিক্ষোভের কারণে মেক্সিকো সিটির প্রধান সড়কগুলো বন্ধ হয়ে যায়।

পরিবারগুলো বাধ্য হয়ে নিজেরাই ‘বুসকাদোরেস’ নামে নিজস্ব অনুসন্ধান দল গঠন করেছে। এই দলটি উত্তর মেক্সিকোর গ্রামাঞ্চলে এবং মরুভূমিতে দিনরাত খোঁজ চালায়। কখনো কখনো তারা মাদক চক্রের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গণকবরের অবস্থান খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।

এই অনুসন্ধানী দলগুলো নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে। সম্প্রতি জলিস্কো অঙ্গরাজ্যে একটি অনুসন্ধানী দল একটি সন্দেহভাজন মাদক চক্রের খামার আবিষ্কার করে। সেই সময় অভিযানে যুক্ত কয়েকজনকেই গুম করে ফেলা হয়। পরে অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় জানায়, ওই জায়গায় কোনো সমাধির চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

জাতিসংঘ এই পরিস্থিতিকে ‘একটি বিশাল আকারের মানবিক ট্র্যাজেডি’ বলে অভিহিত করেছে। মেক্সিকোতে বর্তমানে যে পরিমাণে গুমের ঘটনা ঘটছে, তা লাতিন আমেরিকার কিছু ভয়াবহ রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, গুয়াতেমালায় ৩৬ বছরের গৃহযুদ্ধে প্রায় ৪০ হাজার এবং ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৩ সালের মধ্যে আর্জেন্টিনার সামরিক শাসনের সময় আনুমানিক ৩০ হাজার মানুষ নিখোঁজ হয়েছিলেন।


প্রিন্ট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আশুলিয়ায় যানজট, মাদক ও সন্ত্রাস নিরসনে সুশীল সমাজের আলোচনা সভা

মেক্সিকোতে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ নিখোঁজ, প্রতিবাদে রাজপথে জনগণ

আপডেট সময় ০২:৪৭:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫

ছবি: রয়টার্স

মেক্সিকোতে ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় দেশটির জনগণ ক্ষুব্ধ। ২০০৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফেলিপে ক্যালদেরন কর্তৃক ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণার পর থেকে এই নিখোঁজের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে, যা বর্তমানে প্রায় দেড় লাখে পৌঁছেছে। খবর বিবিসির।

গুমের ঘটনা প্রকাশ্যে আনতে এবং তা বন্ধে সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপের দাবিতে নিখোঁজদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং মানবাধিকার কর্মীরা মেক্সিকো সিটি, গুয়াদালাহারা, কর্দোভা ও অন্যান্য শহরের রাস্তায় নেমে এসেছেন। এসময় তারা প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবামের সরকারের কাছে ন্যায়বিচার চেয়েছেন এবং নিখোঁজ প্রিয়জনদের খুঁজে বের করতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন।

নিখোঁজদের পরিবারের দাবি, তাদের প্রিয়জনদের জোর করে মাদক চক্রে নিয়োগ করা হয়েছে এবং রাজি না হওয়ায় তাদের হত্যা করা হয়েছে। যদিও এসব ঘটনায় মূলত মাদক চক্র এবং অন্যান্য অপরাধী দল দায়ী, তবে নিরাপত্তা বাহিনীও এসবের জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করা হয়।

মেক্সিকোর ওয়াহাকা রাজ্য থেকে শুরু করে উত্তরের সোনোরা ও দুরাঙ্গো পর্যন্ত বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা প্রিয়জনদের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন এবং এই সমস্যার সমাধানে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। এই বিক্ষোভের কারণে মেক্সিকো সিটির প্রধান সড়কগুলো বন্ধ হয়ে যায়।

পরিবারগুলো বাধ্য হয়ে নিজেরাই ‘বুসকাদোরেস’ নামে নিজস্ব অনুসন্ধান দল গঠন করেছে। এই দলটি উত্তর মেক্সিকোর গ্রামাঞ্চলে এবং মরুভূমিতে দিনরাত খোঁজ চালায়। কখনো কখনো তারা মাদক চক্রের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গণকবরের অবস্থান খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।

এই অনুসন্ধানী দলগুলো নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে। সম্প্রতি জলিস্কো অঙ্গরাজ্যে একটি অনুসন্ধানী দল একটি সন্দেহভাজন মাদক চক্রের খামার আবিষ্কার করে। সেই সময় অভিযানে যুক্ত কয়েকজনকেই গুম করে ফেলা হয়। পরে অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় জানায়, ওই জায়গায় কোনো সমাধির চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

জাতিসংঘ এই পরিস্থিতিকে ‘একটি বিশাল আকারের মানবিক ট্র্যাজেডি’ বলে অভিহিত করেছে। মেক্সিকোতে বর্তমানে যে পরিমাণে গুমের ঘটনা ঘটছে, তা লাতিন আমেরিকার কিছু ভয়াবহ রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, গুয়াতেমালায় ৩৬ বছরের গৃহযুদ্ধে প্রায় ৪০ হাজার এবং ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৩ সালের মধ্যে আর্জেন্টিনার সামরিক শাসনের সময় আনুমানিক ৩০ হাজার মানুষ নিখোঁজ হয়েছিলেন।


প্রিন্ট