ঢাকা ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::

প্রধানমন্ত্রী বলেন ৭৫ পরবর্তীতে কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেছে বলতে সাহস পেত না

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা সবকিছু ছেড়ে যুদ্ধে গিয়েছিলে। সেদিন তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। পঁচাত্তর পরবর্তী সময় এমন ছিলো, যে কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেছে সেটা বলতে সাহস পেত না।’আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে এক অনুষ্ঠানে নয়জন ব্যক্তি এবং একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির হাতে ২০২১ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের আওয়ামী লীগ সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে এ স্বীকৃতি পেলাম।’

পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, “আমি এটাই চাই যে আপনাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। স্ব স্ব কর্মস্থানে তারা নিশ্চয় তাদের মেধা, মননে যোগ্য একটা অবস্থান করে নেবে এবং দেশ ও জাতির জন্য তারা কিছু অবদান রেখে যাবে।”

প্রতিবছর ‘হাতে গোনা’ কয়েকজনকে সরকার পুরস্কৃত করতে পারলেও সমাজের আরো অনেককে তাদের অবদানের জন্য সম্মান জানানো উচিত বলে মত দেন প্রধানমন্ত্রী। সমাজের বহু ক্ষেত্রে অনেক অবদান তারা রেখে যাচ্ছেন। তাদেরকে পুরস্কৃত করতে পারা মানে আমরা আমাদের জাতিকে পুরস্কৃত করা, নিজেদেরকে পুরস্কৃত করা।”

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য এবার প্রয়াত আহসানউল্লাহ মাস্টার ও প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর সঙ্গে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম বজলুর রহমান, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খুরশিদ উদ্দিন আহমেদকে।

সাহিত্যে কবি মহাদেব সাহা, সংস্কৃতিতে চলচ্চিত্রকার-গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার এবং নাট্যকার আতাউর রহমান এ পুরস্কার পেয়েছেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ড. মৃন্ময় গুহ নিয়োগী, সমাজসেবায় অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন এবং গবেষণা ও প্রশিক্ষণে প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এবারের স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছে।

পুরস্কারপ্রাপ্ত গুণীদের সামনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অন্তত আপনাদের কাছ থেকে তারা (তরুণরা) উৎসাহ পাবে। দেশের জন্য, জাতির জন্য, জাতির কল্যাণের জন্য তারা কাজ করবে।”

দেশের মানুষ যাতে সুন্দরভাবে, মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে- সরকার সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজকে আমরা যতদূর এগোতে পেরেছি, ৫০ বছর পূর্তিতে, আমি বলব উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যেই অর্জনটুকু করতে পেরেছি, সেইটুকু ধরে রেখে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই।”

এমনিতে প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন বড় আয়োজন করে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হলেও এবার করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতার কারণে যে সীমিত পরিসরে এ অনুষ্ঠান করতে হয়েছে, সে কথাও বলেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনা যে জাতির পিতাকে হত্যার পর ধ্বংস করার চেষ্টা হয়েছিল, সে কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এমন একটা সময় ছিল যখন কেউ মুক্তিযুদ্ধ করার কথা বলার ‘সাহস পেত না’। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে মুক্তিযোদ্ধাদের হারানো সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

“অনেকে অনেক দিকে চলে গেছেন এটা ঠিক, কিন্তু সেইগুলোর বিচার আমি করব না। কারণ সময়ের বিবর্তনে পরিবর্তনে অনেক কিছু ঘটে। কিন্তু যার যেটুকু অবদান, সেইটুকু অবশ্যই আমরা স্মরণ করি, শ্রদ্ধা জানাই।”

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের পর মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জনকে ‘ব্যর্থ করে দেওয়ার’ চেষ্টা চালানো হয়েছিল, জাতির পিতার নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা হয়েছিল।

“আমি জানি না, একটা স্বাধীন জাতি বা স্বাধীন দেশের নাগরিক, যারা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে, তারা কীভাবে আবার পরাজিত শক্তির পদলেহন করতে পারে? এটা আমি ভাবতেও পারি না। কিন্তু সেই অবস্থাতেই বাংলাদেশকে কিন্তু নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

“আজকে এইটুকু বলতে পারি, যেটা আমার সব সময় একটা প্রচেষ্টা ছিল যে আমরা স্বাধীন জাতি, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। কাজেই আমরা সব সময় বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলব। কারো কাছে হাত পেতে না, করুণা বা ভিক্ষা করে না।”

অনুষ্ঠানে শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরে স্বাধীনতার পর একটি যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ গড়ে তুলতে জাতির পিতার অসামান্য অবদানের কথা বলেন তার মেয়ে শেখ হাসিনা।

জাতির পিতাকে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের বাধার মুখে ছয় বছর নির্বসিত জীবন কাটিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফেরার স্মৃতিও উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর কথায়।

দেশের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে ভবিষ্যত কর্ম পরিকল্পনার কথাও অনুষ্ঠানে বলেন তিনি।

আরো খবর.......

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রচন্ড খড়া রোদে ডিএমপি কমিশনারের স্বস্থির উদ্যোগ

প্রধানমন্ত্রী বলেন ৭৫ পরবর্তীতে কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেছে বলতে সাহস পেত না

আপডেট টাইম : ০৪:০৭:৩৬ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২০ মে ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা সবকিছু ছেড়ে যুদ্ধে গিয়েছিলে। সেদিন তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। পঁচাত্তর পরবর্তী সময় এমন ছিলো, যে কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেছে সেটা বলতে সাহস পেত না।’আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে এক অনুষ্ঠানে নয়জন ব্যক্তি এবং একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির হাতে ২০২১ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের আওয়ামী লীগ সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে এ স্বীকৃতি পেলাম।’

পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, “আমি এটাই চাই যে আপনাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। স্ব স্ব কর্মস্থানে তারা নিশ্চয় তাদের মেধা, মননে যোগ্য একটা অবস্থান করে নেবে এবং দেশ ও জাতির জন্য তারা কিছু অবদান রেখে যাবে।”

প্রতিবছর ‘হাতে গোনা’ কয়েকজনকে সরকার পুরস্কৃত করতে পারলেও সমাজের আরো অনেককে তাদের অবদানের জন্য সম্মান জানানো উচিত বলে মত দেন প্রধানমন্ত্রী। সমাজের বহু ক্ষেত্রে অনেক অবদান তারা রেখে যাচ্ছেন। তাদেরকে পুরস্কৃত করতে পারা মানে আমরা আমাদের জাতিকে পুরস্কৃত করা, নিজেদেরকে পুরস্কৃত করা।”

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য এবার প্রয়াত আহসানউল্লাহ মাস্টার ও প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর সঙ্গে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম বজলুর রহমান, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খুরশিদ উদ্দিন আহমেদকে।

সাহিত্যে কবি মহাদেব সাহা, সংস্কৃতিতে চলচ্চিত্রকার-গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার এবং নাট্যকার আতাউর রহমান এ পুরস্কার পেয়েছেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ড. মৃন্ময় গুহ নিয়োগী, সমাজসেবায় অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন এবং গবেষণা ও প্রশিক্ষণে প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এবারের স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছে।

পুরস্কারপ্রাপ্ত গুণীদের সামনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অন্তত আপনাদের কাছ থেকে তারা (তরুণরা) উৎসাহ পাবে। দেশের জন্য, জাতির জন্য, জাতির কল্যাণের জন্য তারা কাজ করবে।”

দেশের মানুষ যাতে সুন্দরভাবে, মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে- সরকার সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজকে আমরা যতদূর এগোতে পেরেছি, ৫০ বছর পূর্তিতে, আমি বলব উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যেই অর্জনটুকু করতে পেরেছি, সেইটুকু ধরে রেখে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই।”

এমনিতে প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন বড় আয়োজন করে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হলেও এবার করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতার কারণে যে সীমিত পরিসরে এ অনুষ্ঠান করতে হয়েছে, সে কথাও বলেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনা যে জাতির পিতাকে হত্যার পর ধ্বংস করার চেষ্টা হয়েছিল, সে কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এমন একটা সময় ছিল যখন কেউ মুক্তিযুদ্ধ করার কথা বলার ‘সাহস পেত না’। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে মুক্তিযোদ্ধাদের হারানো সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

“অনেকে অনেক দিকে চলে গেছেন এটা ঠিক, কিন্তু সেইগুলোর বিচার আমি করব না। কারণ সময়ের বিবর্তনে পরিবর্তনে অনেক কিছু ঘটে। কিন্তু যার যেটুকু অবদান, সেইটুকু অবশ্যই আমরা স্মরণ করি, শ্রদ্ধা জানাই।”

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের পর মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জনকে ‘ব্যর্থ করে দেওয়ার’ চেষ্টা চালানো হয়েছিল, জাতির পিতার নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা হয়েছিল।

“আমি জানি না, একটা স্বাধীন জাতি বা স্বাধীন দেশের নাগরিক, যারা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে, তারা কীভাবে আবার পরাজিত শক্তির পদলেহন করতে পারে? এটা আমি ভাবতেও পারি না। কিন্তু সেই অবস্থাতেই বাংলাদেশকে কিন্তু নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

“আজকে এইটুকু বলতে পারি, যেটা আমার সব সময় একটা প্রচেষ্টা ছিল যে আমরা স্বাধীন জাতি, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। কাজেই আমরা সব সময় বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলব। কারো কাছে হাত পেতে না, করুণা বা ভিক্ষা করে না।”

অনুষ্ঠানে শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরে স্বাধীনতার পর একটি যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ গড়ে তুলতে জাতির পিতার অসামান্য অবদানের কথা বলেন তার মেয়ে শেখ হাসিনা।

জাতির পিতাকে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের বাধার মুখে ছয় বছর নির্বসিত জীবন কাটিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফেরার স্মৃতিও উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর কথায়।

দেশের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে ভবিষ্যত কর্ম পরিকল্পনার কথাও অনুষ্ঠানে বলেন তিনি।