উপচে পড়া ভিড় মার্কেটগুলোতে
- আপডেট টাইম : ০৮:১৫:০১ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ১২ মে ২০২১
- / ২৮১ ৫০০০.০ বার পাঠক
সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
ঈদুল ফিতরে পরিবারের সবার জন্য চাই নতুন জামা। গত ঈদ উৎসবে করোনায় মানুষের নতুন পোশাক কেনার ঝোঁক তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। তবে এবারে ঈদের আগ মুহূর্তে জমে উঠেছে কেনাকাটা। কিছু মার্কেটে স্বাস্থবিধি মানা হলেও অধিকাংশ মার্কেটে স্বাস্থবিধি ছিলো উপেক্ষিত। করোনার দ্বিতীয় ডেউয়ের সংক্রমণ রোধে দীর্ঘদিন দেশের দোকানপাট ও শপিংমগুলো বন্ধ রাখা হয়। পরে গত ২৬ এপ্রিল থেকে আবার চালু হয়।
জানা যায়, এবারে দেশের বাজারগুলোতে বিদেশি পোশাক তেমন একটা ছিলো না। করোনার সংক্রমণ রোধে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সীমান্ত বন্ধ থাকায় দেশের বাইরে থেকে পোশাক আনতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। আমাদের দেশের বাজার ভালো একটি অংশ দখলে থাকে ভারতীয় পোশাকের। গত বছরের ন্যায় এ বছরও ভারতে থেকে ঈদ উপলক্ষ্যে তেমন কোনও পোশাক আসেনি।
নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চক, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটসহ মিরপুর রোডের ফুটপাত জুড়ে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের ভিড় গত কয়েক দিনের তুলনায় কিছুটা কম। মাস্ক পরা এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারে মার্কেট কর্তৃপক্ষ উৎসাহিত করলেও ক্রেতারা উদাসীন।ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ, এমনকি দেশি ভালো মানের শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতাদের মধ্যে এখন দেশি পোশাকের প্রতিও আগ্রহ বেড়েছে। এক্ষেত্রে ফ্যাশন হাউসগুলোর অবদান অনেক। কাপড়ের ভালো মান ও ডিজাইন, সেইসঙ্গে বিভিন্ন ট্রেন্ডের পোশাক উপস্থাপন করছে হাউসগুলো। এভাবে দিনে দিনে ফ্যাশন হাউসগুলো ক্রেতাদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
রাজধানীর মালিবাগ আয়েশা শপিং কমপ্লেক্স পাঞ্জাবির বৃহৎ মার্কেট। এই মার্কেটের মাতৃভূমি দোকানের মালিক ইকবাল হোসেন জানান, গতবছর ঈদুল ফিতরে আমাদের কোনও ব্যবসাই হয়নি। এ বছর কিছুটা হয়েছে। বর্তমানে করোনার সংক্রমণ চলছে এই অবস্থায় যে ব্যবসা হচ্ছে এতেই আমরা খুশি। তিনি বলেন, রোজার আগে থেকেই দোকান বন্ধ ছিলো। রোজার শুরুর ১২ দিন পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হয়। এরপর দোকান চালু করি। শুরুতে খারাপ সময় গেছে। এখন প্রতিদিন সকাল থেকেই ক্রেতাদের উপস্থিতি আছে। রাতেও ভালো বিক্রি হচ্ছে।
মাতৃভূমি দোকানের মালিক বলেন, আমাদের এখানে হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ দুই হাজার ৩ হাজার টাকা দামেও পাঞ্জাবি রয়েছে। তবে ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১৬শ টাকা মূল্যের পাঞ্জাবির বেশি চাহিদা রয়েছে। যুবকদের পছন্দ কালারফুল আর বয়স্কদের সাদা ও অ্যাস্ক কালারের উপর হালকা কাজ।
বৈশ্বিক মহামারি করোনার এই সংকটময় সময়েও মানুষ হুমড়ি খেয়ে ঈদের জামাকাপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত। অনেকে দলবেঁধে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কেনাকাটা করতে আসছেন। অনেকে পরিবারের ছোট্ট শিশুকেও সঙ্গে নিয়ে কেনাকাটা করতে আসছেন। স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার রাজধানীর কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, কিছু মার্কেটে কেতা ও বিক্রেতার মুখে ছিলো না কোনও মাস্ক। মাস্ক মুখের পরিবর্তে হাতে ও থুতনির নিচে দেখা গেছে। ছিলো না ঠোকার পথে কোনো জীবাণুনাশক স্প্রের ব্যবস্থা। তবে কেউ কেউ মাস্ক পড়েছিলেন। তবে শারীরিক দূরত্বের বিষয়টি ছিলো উপেক্ষিত। আমাদের মার্কেটগুলোর যে অবস্থা তাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিক বলে ক্রেতা ও বিক্রেতারা অভিযোগ করেন।
রাজধানীর শান্তি নগরের ব্যবসায়ী আলম বলেন, ঈদের আর খুব একটা বাকি নেই, এ কারণে যাদের কেনা একান্ত প্রয়োজন তারা এখন মার্কেটে আসছেন। এরপরে এবারও আমাদের লোকসান গুনতে হবে। গত বছরও লোকসান হয়েনি।
মৌচাক মার্কেটে ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন বলেন, আমাদের বিক্রি খুব একটা ভালো না। বিক্রি ভালো না হওয়ায় খরচের টাকা তুলতে ছাড় দিয়ে বিক্রি করছি। এতে কিছু ক্রেতা আসছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন বলেন, এখন বিক্রির যে অবস্থা আছে সেটা চাঁদ রাত পর্যন্ত ক্রেতা থাকবে।
তবে ভিন্ন চিত্র দেখা যায় রাজধানীর টুপি-আতরের মার্কেটগুলোতে। বায়তুল মোকাররমের টুপি আতরের দোকানগুলো ছিলো অনেকটা ক্রেতা শূন্য।