ঢাকা ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
ইউক্রেনকে দ্বিখণ্ডিত করতে চান ট্রাম্প মার্চ ফর গাজা ফিলিস্তিনের জন্য কাঁদলেন লাখো মানুষ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক মোনাজাত করেন কোন দিকে মোড় নিচ্ছে লংমার্চ কর্মসূচি কোন পথ দিয়ে যাচ্ছে ‘মার্চ ফর গাজা’, শাহবাগে গাড়ি চলছে না, হেঁটে কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিপুল মানুষ অবশেষে আলোচনা করতে ওমানে পৌঁছেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ট্রাম্পের দূত ইসরাইলের সঙ্গে সব চুক্তি বাতিল ও সম্পর্ক ছিন্ন করতে মুসলিম নেতাদের প্রতি আহ্বান ফ্যাসিস্ট হাসিনার মুখাবয়বে আগুন, সিসিটিভির ফুটেজে যা দেখা গেল গাজায় ত্রাণ প্রবেশ যুদ্ধবিরতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়: সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্চ ফর গাজা’ শিরোনামে ভিন্নধর্মী এক প্রতিবাদ হতে যাচ্ছে মঠবাড়িয়া ইউ এন ওর বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষক পরিবার সহ সর্বস্তরের জনগণের মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয় সকাল থেকেই লাখো মানুষের ঢল, পতাকা-টিশার্ট বিক্রির ধুম

ইউক্রেনকে দ্বিখণ্ডিত করতে চান ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম : ১২:১৫:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • / ০ ৫০০০.০ বার পাঠক

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার চলমান যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনকে দুই ভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে, যেমনটা করা হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী জার্মানিকে। এমন পরামর্শই দিয়েছেন ইউক্রেন-রাশিয়ার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত বিশেষ দূত জেনারেল (অব.) কিথ কেলগ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বার্লিনের মতো করে ভাগ করা হতে পারে। জেনারেল কেলগ বলেন, এরপর যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সেনারা দেশটির পশ্চিমাংশে নিয়ন্ত্রণ তৈরি করতে পারে এবং একটি ‘রিঅ্যাসিউরেন্স ফোর্স’ গঠন করতে পারে।

কিথ কেলগ বলেন, রাশিয়ার সেনাবাহিনী পূর্বের দখলকৃত অংশে থাকতে পারে এবং এই দুই অঞ্চলের মাঝে থাকবে একটি ডিমিলিটারাইজড বা নিরস্ত্রীকৃত একটি অঞ্চল এবং ইউক্রেনীয় বাহিনী এই অঞ্চলে থাকবে। কেলগ এর আগে ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন।

জেনারেল কেলগ দ্য টাইমসকে বলেন, দিনিপ্রো নদীর পশ্চিমে অ্যাংলো-ফরাসি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর উপস্থিতি ক্রেমলিনের জন্য ‘মোটেই উসকানিমূলক হবে না।’ এই নদীটি ইউক্রেনকে উত্তর-দক্ষিণে বিভক্ত করেছে। গত মাসে ক্রেমলিন অভিযোগ করেছিল, জেনারেল কেলগ কিয়েভের ‘খুব বেশি ঘনিষ্ঠ।’ আর তাই তাকে শান্তি আলোচনা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে।

এখন কেলগই বলছেন, ইউক্রেন যথেষ্ট বড় এবং যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য একাধিক সেনাবাহিনী এখানে থাকতে পারে। তিনি বলেন, ‘আপনারা প্রায় এটিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বার্লিনের মতো দেখতে পারেন। যে সময় (বার্লিনেও) একটি রুশ অঞ্চল, একটি ফরাসি অঞ্চল, একটি ব্রিটিশ অঞ্চল এবং একটি মার্কিন অঞ্চল ছিল।’

ট্রাম্পের দূত জানান, ইউক্রেনে আমেরিকা কোনো স্থল সেনা পাঠাবে না। তিনি আরও জানান, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ রেখা (রাশিয়া যে পর্যন্ত দখল করে এগিয়ে এসেছে) বরাবর ১৮ মাইলের একটি ডিমিলিটারাইজড অঞ্চল তৈরি করা যেতে পারে। তবে, মস্কো বারবার জোর দিয়ে বলেছে, তারা কোনো অবস্থাতেই ইউক্রেনে কোনো ন্যাটো দেশের শান্তিরক্ষী মেনে নেবে না।

জেনারেল কেলগের এই পরামর্শের অর্থ মূলত, ইউক্রেন তার পূর্বাঞ্চলীয় ভূখণ্ড রাশিয়ার কাছ থেকে পুনরুদ্ধারের আশা ছেড়ে দেবে। তবে তিনি দিনিপ্রো নদীর পূর্বে কিয়েভকে আরও কোনো ভূখণ্ড রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সম্মত যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা পুতিন বারবার বিলম্বিত করছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউস জোর দিয়ে বলেছে, ট্রাম্প রাশিয়ার ওপর তার প্রভাব খাঁটিয়ে একটি শান্তি চুক্তি করবেন। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বলেন, আমরা মনে করি, একটি শান্তি চুক্তির আলোচনায় আমাদের প্রভাব রয়েছে এবং আমরা সেই প্রভাব ব্যবহার করব। প্রেসিডেন্ট এটি সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর।

ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার বলেছে, রাশিয়া যুদ্ধের বিষয়ে আলোচনা বিলম্বিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ব্যবহার করছে, যা ইঙ্গিত করে, ক্রেমলিন যুদ্ধ শেষ করার জন্য গুরুতর শান্তি আলোচনায় আগ্রহী নয়।

এদিকে, ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ সেন্ট পিটার্সবার্গে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন। ক্রেমলিন তাদের ওয়েবসাইটে দুজনের করমর্দনের ছবি পোস্ট করে বলেছে, বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘বৈঠকের বিষয় ছিল—ইউক্রেনীয় মীমাংসার দিকগুলো।’

আলোচনা শুরু হওয়ার ঠিক আগে ট্রাম্প নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে সতর্ক করে বলেন, পুতিনের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে অগ্রগতি করা উচিত। তিনি পোস্টে বলেন, ‘রাশিয়ার পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। ভয়াবহ ও অর্থহীন এই যুদ্ধে প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে।’

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ইউক্রেনকে দ্বিখণ্ডিত করতে চান ট্রাম্প

আপডেট টাইম : ১২:১৫:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার চলমান যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনকে দুই ভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে, যেমনটা করা হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী জার্মানিকে। এমন পরামর্শই দিয়েছেন ইউক্রেন-রাশিয়ার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত বিশেষ দূত জেনারেল (অব.) কিথ কেলগ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বার্লিনের মতো করে ভাগ করা হতে পারে। জেনারেল কেলগ বলেন, এরপর যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সেনারা দেশটির পশ্চিমাংশে নিয়ন্ত্রণ তৈরি করতে পারে এবং একটি ‘রিঅ্যাসিউরেন্স ফোর্স’ গঠন করতে পারে।

কিথ কেলগ বলেন, রাশিয়ার সেনাবাহিনী পূর্বের দখলকৃত অংশে থাকতে পারে এবং এই দুই অঞ্চলের মাঝে থাকবে একটি ডিমিলিটারাইজড বা নিরস্ত্রীকৃত একটি অঞ্চল এবং ইউক্রেনীয় বাহিনী এই অঞ্চলে থাকবে। কেলগ এর আগে ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন।

জেনারেল কেলগ দ্য টাইমসকে বলেন, দিনিপ্রো নদীর পশ্চিমে অ্যাংলো-ফরাসি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর উপস্থিতি ক্রেমলিনের জন্য ‘মোটেই উসকানিমূলক হবে না।’ এই নদীটি ইউক্রেনকে উত্তর-দক্ষিণে বিভক্ত করেছে। গত মাসে ক্রেমলিন অভিযোগ করেছিল, জেনারেল কেলগ কিয়েভের ‘খুব বেশি ঘনিষ্ঠ।’ আর তাই তাকে শান্তি আলোচনা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে।

এখন কেলগই বলছেন, ইউক্রেন যথেষ্ট বড় এবং যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য একাধিক সেনাবাহিনী এখানে থাকতে পারে। তিনি বলেন, ‘আপনারা প্রায় এটিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বার্লিনের মতো দেখতে পারেন। যে সময় (বার্লিনেও) একটি রুশ অঞ্চল, একটি ফরাসি অঞ্চল, একটি ব্রিটিশ অঞ্চল এবং একটি মার্কিন অঞ্চল ছিল।’

ট্রাম্পের দূত জানান, ইউক্রেনে আমেরিকা কোনো স্থল সেনা পাঠাবে না। তিনি আরও জানান, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ রেখা (রাশিয়া যে পর্যন্ত দখল করে এগিয়ে এসেছে) বরাবর ১৮ মাইলের একটি ডিমিলিটারাইজড অঞ্চল তৈরি করা যেতে পারে। তবে, মস্কো বারবার জোর দিয়ে বলেছে, তারা কোনো অবস্থাতেই ইউক্রেনে কোনো ন্যাটো দেশের শান্তিরক্ষী মেনে নেবে না।

জেনারেল কেলগের এই পরামর্শের অর্থ মূলত, ইউক্রেন তার পূর্বাঞ্চলীয় ভূখণ্ড রাশিয়ার কাছ থেকে পুনরুদ্ধারের আশা ছেড়ে দেবে। তবে তিনি দিনিপ্রো নদীর পূর্বে কিয়েভকে আরও কোনো ভূখণ্ড রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সম্মত যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা পুতিন বারবার বিলম্বিত করছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউস জোর দিয়ে বলেছে, ট্রাম্প রাশিয়ার ওপর তার প্রভাব খাঁটিয়ে একটি শান্তি চুক্তি করবেন। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বলেন, আমরা মনে করি, একটি শান্তি চুক্তির আলোচনায় আমাদের প্রভাব রয়েছে এবং আমরা সেই প্রভাব ব্যবহার করব। প্রেসিডেন্ট এটি সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর।

ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার বলেছে, রাশিয়া যুদ্ধের বিষয়ে আলোচনা বিলম্বিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ব্যবহার করছে, যা ইঙ্গিত করে, ক্রেমলিন যুদ্ধ শেষ করার জন্য গুরুতর শান্তি আলোচনায় আগ্রহী নয়।

এদিকে, ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ সেন্ট পিটার্সবার্গে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন। ক্রেমলিন তাদের ওয়েবসাইটে দুজনের করমর্দনের ছবি পোস্ট করে বলেছে, বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘বৈঠকের বিষয় ছিল—ইউক্রেনীয় মীমাংসার দিকগুলো।’

আলোচনা শুরু হওয়ার ঠিক আগে ট্রাম্প নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে সতর্ক করে বলেন, পুতিনের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে অগ্রগতি করা উচিত। তিনি পোস্টে বলেন, ‘রাশিয়ার পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। ভয়াবহ ও অর্থহীন এই যুদ্ধে প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে।’