জিএমপি’র কোনাবাড়ি থানার ওসির ঘুষ কেলেংকারীতে তিন এসআই প্রত্যাহার
- আপডেট টাইম : ১০:৩২:৪৪ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
- / ১ ৫০০০.০ বার পাঠক
গাজীপুর জিএমপি’র কোনাবাড়ী এলাকার ঔষধ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামকে ধরে নিয়ে অস্ত্র ও হত্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ ওঠে কোনাবাড়ি থানার (ওসি) নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় কোনাবাড়ী থানার তিন (এসআই) কে শাস্তির আওতায় এনে তাদের ওই থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এর আগে, ঔষধ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামকে ধরে নিয়ে টাকা নেয়ার খবর প্রকাশ হলে ঘটনার তদন্তে পুলিশের এডিসি (উত্তর) রবিউল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। পরে গত রোববার রাতে কোনাবাড়ী থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) উৎপল সাহা, (এসআই) হামিদ মাহমুদ ও (এসআই) আবুল কাশেম কে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর তিন এসআই’কে থানা থেকে প্রত্যাহারের ঘটনায় সমালোচনার জন্ম দেয়। তাদের প্রত্যাহারে হতবাক ওই তিন এসআই। ওসিকে বহাল রেখে তাদের প্রত্যাহার কেন করা হয়েছে তার উত্তর জানেন না তারা কেউই!
এ ব্যাপারে প্রত্যাহারকৃত তিন এসআই জানান, নুরুল ইসলামকে আটকের পর অর্থ লেনদেনের বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ হয় ওসির বিরুদ্ধে, কিন্তু ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান ওই তিন এসআই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানার এক পুলিশ সদস্য বলেন, ঔষধ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামকে আটক করে থানায় আনার পর রাত একটা থেকে দুইটার মধ্যে হাজতখানা থেকে তাকে ওসির শোয়ার কক্ষে (বেডরুমে) নেয়া হয়। সেখানে স্থানীয় বিএনপি’র কর্মী আজিজ ও শামীমের মধ্যস্থতায় দুই লাখ টাকায় আপোষ করার পর নুরুল ইসলামকে প্রসিকিউশন মামলা দেয়া হয়।
এদিকে নুরুল ইসলামের ভাষ্য, যে তিন এসআই’কে প্রত্যাহার করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই। এমনকি অর্থ লেনদেনের বিষয়েও কোনো কথা হয়নি তাদের সঙ্গে। কয়েকটি পত্রিকায় ওই তিন এসআই’য়ের নাম যোগ করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ তাদের নিয়ে তিনি কোনো বক্তব্য দেননি সংবাদ মাধ্যমে।
বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ জানান, কোনাবাড়ি থানার ওই তিন এসআই’কে ঘুষকাণ্ডের অভিযোগে নয়, অন্য কারণে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই কারণ অবশ্য তিনি বলেন নি।
প্রসঙ্গত, গত (৩ জানুয়ারি) শুক্রবার । ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে কোনাবাড়ী বাজারে নিজ ঔষধের দোকানে বসেছিলেন নুরুল ইসলাম। হঠাৎ একদল যুবক তার দোকানের এসে নুরুলকে আওয়ামী লীগের নেতা, ৪ ও ৫ আগষ্টের হত্যাঘটনার সঙ্গে জড়িত এসব নানা কিছু বলে হেয় করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা কয়েকটা কিলঘুষিও মারে। এমন সময় কোনাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হানিফ মাহমুদ এসে লোকজনের কাছ থেকে নুরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে থানা পুলিশ নানা ধরনের প্রশ্ন করে এবং ভয়-ভীতি দেখায় থাকে। এক পর্যায়ে তাকে হত্যা মামলা, মাদকমামলা দেয়াসহ নানা ধরণের ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করা হয়।