সংবাদ প্রকাশের পর গাজীপুরে জিএমপি মিডিয়া হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে এক সাংবাদিকের একাউন্ট রিমোভ
- আপডেট টাইম : ১২:১৩:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ২৫ ৫০০০.০ বার পাঠক
গত ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর রাষ্ট্রীয় অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পুলিশ প্রশাসনের নীতিগত পরিবর্তন হলেও গাজীপুরে পুলিশের অসাধু নীতিহীন কার্যকলাপে কোন রুপ পরিবর্তন আসেনি। গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) “মাদক সংক্রান্তে আসামী গ্রেফতার করে উৎকোচের বিনিময়ে আদালতে প্রসিকিউশন প্রতিবেদন দাখিল” এই শিরোনামে পূবাইল পুলিশের কর্মকাণ্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে সাংবাদিক আনোয়ারের একাউন্ট রিমোভ করেছে কমিশনারের স্টাফ অফিসার।
গত শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) পূবাইল থানার এএসআই মোঃ জুয়েল মিয়া সঙ্গীয় কনস্টেবল ৭১০ ফরহাদ ২৪২ নং জিডি মূলে থানা এলাকায় অভিযানে যায়। পরের দিন (৭ ডিসেম্বর) দুপুর ০২:৩০ ঘটিকার সময় মেঘডুবি কলের বাজার এলাকার মোঃ তাইজুল ইসলামের বাড়ীতে তল্লাশী করে। এসময় উনার ছেলে রাসেল(২৮) কে মাদক দ্রব্য ইয়াবা সেবন রত অবস্থায় আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের এএসআই জুয়েল গাজীপুর মেট্রোপলিটন অধ্যাদেশের ৭৮ ধারায় ননএফআইআর ৫৩নং প্রসিকিউশন মূলে আদালতে গ্রেফতারকৃত রাসেলকে কোর্টে চালান দেয়। এঘটনার সাথে ননএফআইআর প্রসিকিউশন প্রতিবেদনে গরমিল রয়েছে। পুলিশ রাসেলকে তার বাড়ী থেকে গ্রেফতার করলেও প্রতিবেদনে “মেঘডুবি কলের বাজারের জনৈক মাসুমের দোকানের সামনে রাসেল হৈই হুল্লা ও চিল্লা চিল্লি করে জনসাধারণের বিরক্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপরাধে ৭৮ ধারায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে” মর্মে উল্লেখ করেন। গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আসামীকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করে মুক্তি প্রদান করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতার হওয়া রাসেলের পরিবারের কাছ হতে উৎকোচের বিনিময়ে থানা থেকে কৌশলে না ছেড়ে মাদক কারবারি কে মাদক মামলা না দিয়ে, গ্রেফতারের সময় টাকা, মোবাইল, মাদক সেবনের উপকরণসহ কোন কিছুই আলামত জব্দ না করে আদালতে প্রসিকিউশন প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর কারণ সকল থানায় সিসিটিভি ফুটেজ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এজন্য পুলিশ দায় এড়াতে আসামীদের না ছেড়ে নন-এফআইআর প্রসিকিউশন প্রতিবেদন দিয়ে আদালতে চালান দিলে জরিমানা দিলেই আদালত আসামীকে মুক্তি দিয়ে থাকে। এর ফলে এলাকায় কারবারীরা মাদক ব্যবসা করতে আরো উৎসাহিত হবে। গাজীপুর মহানগরীর প্রতিটি থানা এলাকায় মাদকের থাবায় যুব সমাজ ধ্বংসের পথে। সেই সাথে দিন দিন মাদকের কারণে অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই কারণেই মাদকের সঙ্গে জড়িতদের আইন বহির্ভূত নন-এফআইআর প্রসিকিউশন দেওয়া বন্ধ করার দাবি স্থানীয়দের।
পুলিশ কাউকে তল্লাশী করার সময় কোন কিছু পাওয়া গেলে তাহা স্পষ্টভাবে ফৌজদারী কার্যবিধির ১০৩(২) ধারা অনুযায়ী জব্দ তালিকায় উল্লেখ করতে হয় । তাহা ফেরৎকালে জিডি বা আদালতের আদেশ মূলে ফেরৎ দিতে হয়। এছাড়া ২০১৮ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২৩(১) ধারা অনুযায়ী পুলিশের উপপরিদর্শক অথবা তদূর্ধ্ব অফিসার ব্যতীত এএসআই মাদকের আলামত জব্দ করতে পারে না। কিন্তু পূবাইল থানার পুলিশের বেলায় সম্পূর্ণ উল্টো। পূবাইল থানার ওসি শেখ মোঃ আমিরুল ইসলাম আওয়ামীলীগের ক্ষমতাকালে কাপাসিয়া ও কালীগঞ্জ থানার ওসি ছিলেন। মহানগরীর অন্য থানা গুলো আইন মেনে কাজ করলেও এই থানার ওসির অলৌকিক ক্ষমতা থাকায় উনি আইনের তোয়াক্কা করে না।
মাদক নির্মূল করতে কঠোর নির্দেশনা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের তৎপরতা বৃদ্ধি করতে সংবাদ প্রচার করায় গণমাধ্যমকর্মী ও গাজীপুর সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের আইন বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেনকে মিথ্যা মামলার হুমকী প্রদান করা হচ্ছে। এবিষয়ে প্রতিকার পেতে আনোয়ার সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন।
জিএমপি’র মিডিয়া হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের রিমোভ করা সংক্রান্তে কমিশনারে স্টাফ অফিসারের কাছে জানতে চাইলে উনি জানান, সিনিয়র অফিসারের নির্দেশেই রিমোভ করা হয়েছে।