ঢাকা ০৯:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
২৯ বিজিবি’র বিশেষ অভিযানে মাদকদ্রব্য সহ ১জন আটক জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে কী কথা হলো, জানাল জামায়াত জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক সংস্কারের কথা সবার আগে বলেছে বিএনপি: মির্জা ফখরুল বিগত সরকারের সময় অর্থনৈতিক তথ্য ছিল ‘গোঁজামিল নির্ভর’ গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে রেন্ট এ কারের গাড়ী ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে জুলাই গণঅভুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে নান্দাইলে ইফতার ও দোয়া মাহফিল আবরার ফাহাদ হত্যা : হাইকোর্টের রায় রোববার ৪৩ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন ট্রাম্প কালিয়াকৈরে ট্রাক ও সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩ আহত ২ নাসিরনগরে ধরমন্ডল ইউনিয়ন যুবদলের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল

মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের পাশে ১০ সশস্ত্র সংগঠন

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ এপ্রিল ২০২১
  • / ৩৪১ ৫০০০.০ বার পাঠক

আন্তর্জাতিক রিপোর্ট।।

সামরিক অভ্যুত্থানের প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনও অশান্ত মিয়ানমারের রাজপথ। অধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৫০০ ছাড়িয়েছে। গ্রেফতার বা আটক ব্যক্তির সংখ্যা আড়াই হাজারের বেশি। তারপরও রাজপথ ছাড়ছে না গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীরা। এর মধ্যেই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে দেশটির শীর্ষস্থানীয় ১০টি সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন।

নির্বাচিত সু চি সরকারের প্রতি সমর্থন এবং জান্তাবিরোধী বিদ্যমান বিক্ষোভের প্রতিও নিজেদের অবস্থানের জানান দিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। শনিবার নিজেদের মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠকে সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পর বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবর্ষণের নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো।

বিদ্রোহী সংগঠন রেস্টোরেশন কাউন্সিল অব শান স্টেট-এর নেতা জেনারেল ইয়াউদ সের্ক। তিনি বলেন, নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর জন্য সামরিক বাহিনীর নেতাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। পাঁচ শতাধিক বেসামরিক মানুষকে হত্যার জবাব তাদের দিতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ স্বৈরশাসনের অবসান চায়। আর ১০ সংগঠন জোরালোভাবে মানুষের সঙ্গে রয়েছে। রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে আমাদের বিভিন্নভাবে কাজ করতে হবে।

সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে গত সপ্তাহে জান্তা সরকারের ঘোষিত এক মাসের যুদ্ধবিরতি নিয়েও কথা বলেন ইয়াউদ সের্ক। তিনি বলেন, ওই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে হলে আগে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর যাবতীয় সহিংসতার অবসান ঘটাতে হবে।

এদিকে, মিয়ানমারে স্বৈরশাসনের অবসান ও গণতন্ত্র-মানবাধিকারের দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। সেনা কর্তৃপক্ষের ব্যাপক দমন-পীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা প্রতিদিনই মিয়ানমারের রাস্তায় নামছেন। তারা সেনাশাসন প্রত্যাখ্যান করছেন। দিনের বেলায় তো বটেই, আন্দোলনকারীরা রাতেও প্রতিবাদে শামিল হচ্ছে। তবে জান্তা সরকার তথ্যের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করতে নানান কৌশল অবলম্বন করেছে। তারা বিশেষ করে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করছে। গত শুক্রবার ইন্টারনেট সেবাদাতাদের ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড সেবা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

সামরিক শাসনের বিরোধিতা করায় প্রায় ৪০ জন সেলিব্রিটিকে গ্রেফতারের জন্য পরোয়ানা জারি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এই দলে সামাজিক মাধ্যম তারকা, সংগীতশিল্পী, মডেল রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে মতবিরোধ প্ররোচিত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অভিযোগে তাদের সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান হয়। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। গ্রেফতার করা হয় অং সান সু চি-সহ তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের। সেনাবাহিনী মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে। সেনা অভ্যুত্থানের পর সেখানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সেনা কর্তৃপক্ষ সহিংস ব্যবস্থা নিতে শুরু করে। সেনাবাহিনীর রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়নের মুখেও গণতন্ত্রপন্থীরা টানা বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই এ বিক্ষোভে সমর্থনের কথা জানালো দেশটির ১০টি সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের পাশে ১০ সশস্ত্র সংগঠন

আপডেট টাইম : ১০:৪৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ এপ্রিল ২০২১

আন্তর্জাতিক রিপোর্ট।।

সামরিক অভ্যুত্থানের প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনও অশান্ত মিয়ানমারের রাজপথ। অধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৫০০ ছাড়িয়েছে। গ্রেফতার বা আটক ব্যক্তির সংখ্যা আড়াই হাজারের বেশি। তারপরও রাজপথ ছাড়ছে না গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীরা। এর মধ্যেই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে দেশটির শীর্ষস্থানীয় ১০টি সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন।

নির্বাচিত সু চি সরকারের প্রতি সমর্থন এবং জান্তাবিরোধী বিদ্যমান বিক্ষোভের প্রতিও নিজেদের অবস্থানের জানান দিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। শনিবার নিজেদের মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠকে সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পর বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবর্ষণের নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো।

বিদ্রোহী সংগঠন রেস্টোরেশন কাউন্সিল অব শান স্টেট-এর নেতা জেনারেল ইয়াউদ সের্ক। তিনি বলেন, নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর জন্য সামরিক বাহিনীর নেতাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। পাঁচ শতাধিক বেসামরিক মানুষকে হত্যার জবাব তাদের দিতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ স্বৈরশাসনের অবসান চায়। আর ১০ সংগঠন জোরালোভাবে মানুষের সঙ্গে রয়েছে। রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে আমাদের বিভিন্নভাবে কাজ করতে হবে।

সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে গত সপ্তাহে জান্তা সরকারের ঘোষিত এক মাসের যুদ্ধবিরতি নিয়েও কথা বলেন ইয়াউদ সের্ক। তিনি বলেন, ওই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে হলে আগে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর যাবতীয় সহিংসতার অবসান ঘটাতে হবে।

এদিকে, মিয়ানমারে স্বৈরশাসনের অবসান ও গণতন্ত্র-মানবাধিকারের দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। সেনা কর্তৃপক্ষের ব্যাপক দমন-পীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা প্রতিদিনই মিয়ানমারের রাস্তায় নামছেন। তারা সেনাশাসন প্রত্যাখ্যান করছেন। দিনের বেলায় তো বটেই, আন্দোলনকারীরা রাতেও প্রতিবাদে শামিল হচ্ছে। তবে জান্তা সরকার তথ্যের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করতে নানান কৌশল অবলম্বন করেছে। তারা বিশেষ করে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করছে। গত শুক্রবার ইন্টারনেট সেবাদাতাদের ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড সেবা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

সামরিক শাসনের বিরোধিতা করায় প্রায় ৪০ জন সেলিব্রিটিকে গ্রেফতারের জন্য পরোয়ানা জারি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এই দলে সামাজিক মাধ্যম তারকা, সংগীতশিল্পী, মডেল রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে মতবিরোধ প্ররোচিত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অভিযোগে তাদের সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান হয়। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। গ্রেফতার করা হয় অং সান সু চি-সহ তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের। সেনাবাহিনী মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে। সেনা অভ্যুত্থানের পর সেখানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সেনা কর্তৃপক্ষ সহিংস ব্যবস্থা নিতে শুরু করে। সেনাবাহিনীর রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়নের মুখেও গণতন্ত্রপন্থীরা টানা বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই এ বিক্ষোভে সমর্থনের কথা জানালো দেশটির ১০টি সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন।