শেরপুরে রাইস মিলের বৈদ্যুতিক লাইনে প্রাণ গেল কিশোরের
- আপডেট টাইম : ১২:০২:১৯ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৪ এপ্রিল ২০২১
- / ৩১৪ ৫০০০.০ বার পাঠক
শেরপুর রিপোর্টার ॥
মালিকের অবহেলা ও উদাসিনতার কারণে শেরপুরে রাইস মিলের গোডাউনের চালের উপর দিয়ে যাওয়া উচ্চ ক্ষমতার বৈদ্যুতিক লাইনে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে এবার মারুফ মিয়া (১৬) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। আজ রবিবার সকালে শহরের ঢাকলহাটি মহল্লার আর.বি অটো রাইস মিলের ড্রায়ারের চালের উপর থেকে ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়। মারুফ স্থানীয় মৃত ইমান আলীর ছেলে এবং স্থানীয় একটি ঔষধের ফার্মেসীর কর্মচারী ছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এর আগেও একই জায়গায় বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে কয়েকজন পঙ্গু হয়েছেন। ওই রাইস মিলের মালিক আব্দুর রহিমের গাফিলতির কারণে বারবার এমন দুর্ঘটনা ঘটছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌর শহরের ঢাকলহাটি মহল্লার আর.বি অটো রাইস মিলটি ২/৩ মাস বন্ধ থাকায় কয়েকদিন ধরে সংস্কার কাজ চলছিল। রবিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সংস্কার কাজের মিস্ত্রি মেহেদি হাসানসহ কয়েকজন শ্রমিক ওই মিলের ড্রায়ারের চালের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ১১ কেভি বিদ্যুত সঞ্চালন লাইনের নিচে এক কিশোরের লাশ পড়ে থাকতে দেখে মিল মালিক আব্দুর রহিমকে জানায়। পরে সদর থানায় খবর দেয়া হলে সদর থানার এসআই আনোয়ার হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থল গিয়ে ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করে। পরে তার পরিহিত ট্রাউজারের ডান পকেটে থাকা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তার নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। পরে লাশের সূরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
নিহতের স্বজনরা জানান, মারুফের মৃত্যুর খবর তাদেরকে না দিয়েই তড়িঘড়ি করে লাশ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে মিলের মালিক। এমনকি তাদেরসহ এলাকাবাসীর কাউকে মিলের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই রাইস মিলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া উচ্চ ক্ষমতার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে এর আগেও বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে অন্তত: ৫/৬ জন পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এরপরও মিল মালিক আব্দুর রহিম বিদ্যুতের লাইন সরাতে কোন পদক্ষেপ নেননি।
তবে মিল মালিক আব্দুর রহিম জানান, ওই সঞ্চালন লাইনটি সরাতে তিনি বেশ কয়েকবার পিডিবিকে জানিয়েছিলেন। তারা লাইনটি সরায়নি। এ বিষয়ে শেরপুর পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত কুমার দে বলেন, তিনি ২০১৮ সাল থেকে এ জেলায় কর্মরত আছেন। এই সময়ের মধ্যে আব্দুর রহিম লাইনের খুটি সরানোর কোন আবেদন করেননি।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নিহত মারুফের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। সেই সাথে ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।