ঢাকা ০৮:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
বাঘায় সৎ ভাইয়ের হাতে হত্যা হলো সাদেক আলী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে নিরাপদ জায়গায় রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে: আসিফ মাহমুদ ঠাকুরগাঁওয়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামীলীগের পার্টি অফিস দখল আজমিরীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রকরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নারী পুরুষসহ ৪০ জন আহত, বাড়ি-ঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর ও লোটপাট। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে এই প্রথমবারের মতো আজ নিজ জেলা চট্টগ্রামে আসলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোনাবাড়ী ফ্লাইওভার ব্রিজের মাথায় বাসের ধাক্কায় নারী শ্রমিক নিহত কর্নেল সোফিয়াকে ‘জঙ্গিদের বোন’ বলে বিতর্কের মুখে বিজেপি মন্ত্রী কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, নেই প্রধান উপদেষ্টার নাম আওয়ামী লীগসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বন্ধে বিটিআরসিকে চিঠি ঢাবির ছাত্রদল নেতা হত্যার ঘটনায় উপাচার্য–প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ

রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে সমর্থনের অঙ্গীকার সেনাপ্রধানের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫৬:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১৩৯ ১৫০০০.০ বার পাঠক

বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
ছাত্র-জনতার তুমুল বিক্ষোভের জেরে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। সেইদিনেই সামরিক হেলিকপ্টারে ভারত পালাতে বাধ্য হন। এরপর থেকে ভারতেই অবস্থান করছেন তিনি। হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকার ইতোমধ্যে দেশের প্রধান প্রধান খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার পতনের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেওয়া প্রধান প্রধান সংস্কার কাজগুলো সম্পূর্ণ করতে সাহায্য করার জন্য ‘যাই হোক না কেন’ অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান, যাতে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

রয়টার্স বলছে, গত আগস্ট মাসের শুরুর দিকে জেনারেল ওয়াকার এবং তার সেনারা হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন প্রবল বিক্ষোভে তাদের পাশে দাঁড়ায় এবং এর মাধ্যমে হাসিনার ১৫ বছরের ক্ষমতায় থাকার পর অপসারণ নিশ্চিত হয়ে যায়, তিনি প্রতিবেশী ভারতে পালিয়ে যান।

সোমবার রাজধানী ঢাকায় রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দেন জেনারেল ওয়াকার। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, নোবেল পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

জেনারেল ওয়াকার বলেন, আমি তার (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) পাশে থাকব। যাই হোক না কেন। যাতে তিনি তার মিশন সম্পন্ন করতে পারেন।

হাসিনার বিদায়ের কয়েক সপ্তাহ আগে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সংস্কারের পর গণতন্ত্রে উত্তরণ এক বছর থেকে দেড় বছরের মধ্যে করা উচিত। তবে এই সময়ে তিনি ধৈর্য ধরার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে আমি বলব— এই সময়সীমার মধ্যেই আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করা উচিত।

জেনারেল ওয়াকার বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এবং তিনি (সেনাপ্রধান) প্রতি সপ্তাহে বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন এবং তাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। দেশকে স্থিতিশীল করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত যে আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি তবে আমাদের ব্যর্থ হওয়ার কোনো কারণ নেই।

আমি এমন কিছু করবো না যা আমার সংস্থার ক্ষতি করে, বলেন সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, আমি একজন পেশাদার সৈনিক। আমি আমার সেনাবাহিনীকে পেশাদার রাখতে চাই।

এ ছাড়া কোনো সেনাবাহিনীর সদস্য দোষী সাব্যস্ত হলে তার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সেনাপ্রধান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী (হাসিনা) বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সরাসরি নিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলোতে কাজ করার সময় কিছু সামরিক কর্মকর্তা অন্যায় কাজ করতে পারেন, বলেন জেনারেল ওয়াকার।

রয়টার্স বলছে, দীর্ঘ মেয়াদে জেনারেল ওয়াকার সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে দূরে রাখতে চান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি সৈন্য রয়েছে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অন্যতম প্রধান সেনা প্রেরণকারী হচ্ছে বাংলাদেশ।

জেনারেল ওয়াকার বলেছেন, এটি কেবল তখনই ঘটতে পারে যখন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার কিছুটা ভারসাম্য থাকে, যেখানে সশস্ত্র বাহিনীকে সরাসরি রাষ্ট্রপতির অধীনে রাখা যায়।

সামগ্রিকভাবে সামরিক বাহিনীকে কখনোই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা উচিত নয়। একজন সৈনিককে রাজনীতিতে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়, বলেন বাংলাদেশ সেনাপ্রধান।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে সমর্থনের অঙ্গীকার সেনাপ্রধানের

আপডেট টাইম : ০৬:৫৬:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
ছাত্র-জনতার তুমুল বিক্ষোভের জেরে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। সেইদিনেই সামরিক হেলিকপ্টারে ভারত পালাতে বাধ্য হন। এরপর থেকে ভারতেই অবস্থান করছেন তিনি। হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকার ইতোমধ্যে দেশের প্রধান প্রধান খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার পতনের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেওয়া প্রধান প্রধান সংস্কার কাজগুলো সম্পূর্ণ করতে সাহায্য করার জন্য ‘যাই হোক না কেন’ অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান, যাতে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

রয়টার্স বলছে, গত আগস্ট মাসের শুরুর দিকে জেনারেল ওয়াকার এবং তার সেনারা হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন প্রবল বিক্ষোভে তাদের পাশে দাঁড়ায় এবং এর মাধ্যমে হাসিনার ১৫ বছরের ক্ষমতায় থাকার পর অপসারণ নিশ্চিত হয়ে যায়, তিনি প্রতিবেশী ভারতে পালিয়ে যান।

সোমবার রাজধানী ঢাকায় রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দেন জেনারেল ওয়াকার। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, নোবেল পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

জেনারেল ওয়াকার বলেন, আমি তার (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) পাশে থাকব। যাই হোক না কেন। যাতে তিনি তার মিশন সম্পন্ন করতে পারেন।

হাসিনার বিদায়ের কয়েক সপ্তাহ আগে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সংস্কারের পর গণতন্ত্রে উত্তরণ এক বছর থেকে দেড় বছরের মধ্যে করা উচিত। তবে এই সময়ে তিনি ধৈর্য ধরার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে আমি বলব— এই সময়সীমার মধ্যেই আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করা উচিত।

জেনারেল ওয়াকার বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এবং তিনি (সেনাপ্রধান) প্রতি সপ্তাহে বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন এবং তাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। দেশকে স্থিতিশীল করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত যে আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি তবে আমাদের ব্যর্থ হওয়ার কোনো কারণ নেই।

আমি এমন কিছু করবো না যা আমার সংস্থার ক্ষতি করে, বলেন সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, আমি একজন পেশাদার সৈনিক। আমি আমার সেনাবাহিনীকে পেশাদার রাখতে চাই।

এ ছাড়া কোনো সেনাবাহিনীর সদস্য দোষী সাব্যস্ত হলে তার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সেনাপ্রধান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী (হাসিনা) বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সরাসরি নিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলোতে কাজ করার সময় কিছু সামরিক কর্মকর্তা অন্যায় কাজ করতে পারেন, বলেন জেনারেল ওয়াকার।

রয়টার্স বলছে, দীর্ঘ মেয়াদে জেনারেল ওয়াকার সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে দূরে রাখতে চান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি সৈন্য রয়েছে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অন্যতম প্রধান সেনা প্রেরণকারী হচ্ছে বাংলাদেশ।

জেনারেল ওয়াকার বলেছেন, এটি কেবল তখনই ঘটতে পারে যখন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার কিছুটা ভারসাম্য থাকে, যেখানে সশস্ত্র বাহিনীকে সরাসরি রাষ্ট্রপতির অধীনে রাখা যায়।

সামগ্রিকভাবে সামরিক বাহিনীকে কখনোই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা উচিত নয়। একজন সৈনিককে রাজনীতিতে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়, বলেন বাংলাদেশ সেনাপ্রধান।