ঢাকা ১০:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

অবশেষে মুক্ত হল সুয়েজ খালে আটকে থাকা জাহাজ

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৭:১১:২৬ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২৯ মার্চ ২০২১
  • / ২৭৭ ৫০০০.০ বার পাঠক

আন্তর্জাতিক রিপোর্ট।।

মিশরের সুয়েজ খালে আড়াআড়িভাবে আটকা পড়া কনটেইনারবাহী জাহাজ এমভি এভার গিভেন অবশেষে মুক্ত হয়েছে।

জাহাজটি খালে আড়াআড়ি আটকে থাকায় লোহিত সাগরের সঙ্গে ভূমধ্যসাগরকে যুক্ত করা বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এই বাণিজ্য পথ বন্ধ হয়ে আছে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে।

ফলে তিনশর বেশি জাহাজের জট তৈরি হয় দুই প্রান্তে, তৈরি হয় বিপুল আর্থিক ক্ষতির উদ্বেগ।রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার ভরা জোয়ারেও এমভি এভার গিভেনকে সরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন উদ্ধারকর্মীরা। অবশেষে স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাতে সুখবর দেয় জাহাজটি সরানোর কাজে থাকা ইঞ্চকেপ শিপিং সার্ভিসেস।

টুইটারে এক বার্তায় তারা জানায়, ৪০০ মিটার দীর্ঘ এবং ৫৯ মিটার প্রশস্ত খালের পাশের চরায় আটকে যাওয়া এভার গিভেনকে সফলভাবে ভাসিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে এবং জাহাজটি এখন নিরাপদ।সোশাল মিডিয়ায় আসা ভিডিওতে দেখা গেছে, জাহাজের পেছনের অংশ খালের পাড়ের একদিকে উঠে এসেছে, তাতে সামনের দিকে খালের একটি অংশ উন্মুক্ত হয়েছে।

এখন টাগবোট দিয়ে টেনে জাহাজটিতে খাল পার করে দিতে পারলে গত কয়েক দিনের অচলাবস্থার অবসান ঘটবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংক্ষিপ্ততম জলপথ হল সুয়েজ খাল। ১৯৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই জলপথে তিনটি প্রাকৃতিক হ্রদ আছে।

দুই লাখ ২০ হাজার টন কনটেইনার ধারণ ক্ষমতার এভার গিভেন তাইওয়ান থেকে পণ্য নিয়ে সুয়েজ খাল হয়ে নেদারল্যান্ডসে যাচ্ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার খালে ঢোকার পর ভূমধ্যসাগরের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘুরে যায় এবং সংকীর্ণ খালে আড়াআড়ি আটক পড়ে।

ফলে খালের দুই প্রান্তে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা জাহাজের ভিড় বাড়তে থাকে। যে পরিমাণ পণ্য এখন সুয়েজের দুই পড়ে আটকে আছে, তার পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি হবে বলে ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে ধারণা দেওয়া হয়।

পরিস্থিতি বিবেচনায় অনেক নৌযান ঘুরপথে আফ্রিকা হয়ে চলাচল করতে বাধ্য হয়। কিন্তু তাতে সময় ও খরচ বেড়ে যায় কয়েক গুণ।

তাইওয়ান থেকে একটি জাহাজ সুয়েজ খাল হয়ে নেদারল্যান্ডসে পৌঁছাতে সময় লাগে ২৫ দিনের মত, সেখানে ঘুরপথে আফ্রিকার কেইপ অব গুড হোপ হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে সেই জাহাজের লাগবে ৩৪ দিন।

সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তীব্র বাতাসের কারণে এভার গিভেন খালের তীরের কাছে চরে আটকা পড়ে, তাছাড়া ধুলিঝড়ও তখন দৃষ্টিসীমাকে বাধাগ্রস্ত করেছিল।

সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জেনারেল ওসামা রাবি বলেছেন, আবহাওয়া ‘মূল কারণ ছিল না’। এক্ষেত্রে ‘কারিগরি বা মানুষের ত্রুটি’ ছিল বলেও তার ধারণা।

জাপানের শোয়েই কিসেন-এর মালিকানাধীন তাইওয়ানের এভারগ্রিন মেরিন এভার গিভেন জাহাজটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।

শোয়েই কিসেন-এর প্রেসিডেন্ট ইউকিতো হিগাকি বলেছেন, জাহাজটির ক্ষতি হয়নি। ভেতরে পানিও প্রবেশ করেনি।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

অবশেষে মুক্ত হল সুয়েজ খালে আটকে থাকা জাহাজ

আপডেট টাইম : ০৭:১১:২৬ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২৯ মার্চ ২০২১

আন্তর্জাতিক রিপোর্ট।।

মিশরের সুয়েজ খালে আড়াআড়িভাবে আটকা পড়া কনটেইনারবাহী জাহাজ এমভি এভার গিভেন অবশেষে মুক্ত হয়েছে।

জাহাজটি খালে আড়াআড়ি আটকে থাকায় লোহিত সাগরের সঙ্গে ভূমধ্যসাগরকে যুক্ত করা বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এই বাণিজ্য পথ বন্ধ হয়ে আছে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে।

ফলে তিনশর বেশি জাহাজের জট তৈরি হয় দুই প্রান্তে, তৈরি হয় বিপুল আর্থিক ক্ষতির উদ্বেগ।রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার ভরা জোয়ারেও এমভি এভার গিভেনকে সরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন উদ্ধারকর্মীরা। অবশেষে স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাতে সুখবর দেয় জাহাজটি সরানোর কাজে থাকা ইঞ্চকেপ শিপিং সার্ভিসেস।

টুইটারে এক বার্তায় তারা জানায়, ৪০০ মিটার দীর্ঘ এবং ৫৯ মিটার প্রশস্ত খালের পাশের চরায় আটকে যাওয়া এভার গিভেনকে সফলভাবে ভাসিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে এবং জাহাজটি এখন নিরাপদ।সোশাল মিডিয়ায় আসা ভিডিওতে দেখা গেছে, জাহাজের পেছনের অংশ খালের পাড়ের একদিকে উঠে এসেছে, তাতে সামনের দিকে খালের একটি অংশ উন্মুক্ত হয়েছে।

এখন টাগবোট দিয়ে টেনে জাহাজটিতে খাল পার করে দিতে পারলে গত কয়েক দিনের অচলাবস্থার অবসান ঘটবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংক্ষিপ্ততম জলপথ হল সুয়েজ খাল। ১৯৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই জলপথে তিনটি প্রাকৃতিক হ্রদ আছে।

দুই লাখ ২০ হাজার টন কনটেইনার ধারণ ক্ষমতার এভার গিভেন তাইওয়ান থেকে পণ্য নিয়ে সুয়েজ খাল হয়ে নেদারল্যান্ডসে যাচ্ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার খালে ঢোকার পর ভূমধ্যসাগরের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘুরে যায় এবং সংকীর্ণ খালে আড়াআড়ি আটক পড়ে।

ফলে খালের দুই প্রান্তে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা জাহাজের ভিড় বাড়তে থাকে। যে পরিমাণ পণ্য এখন সুয়েজের দুই পড়ে আটকে আছে, তার পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি হবে বলে ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে ধারণা দেওয়া হয়।

পরিস্থিতি বিবেচনায় অনেক নৌযান ঘুরপথে আফ্রিকা হয়ে চলাচল করতে বাধ্য হয়। কিন্তু তাতে সময় ও খরচ বেড়ে যায় কয়েক গুণ।

তাইওয়ান থেকে একটি জাহাজ সুয়েজ খাল হয়ে নেদারল্যান্ডসে পৌঁছাতে সময় লাগে ২৫ দিনের মত, সেখানে ঘুরপথে আফ্রিকার কেইপ অব গুড হোপ হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে সেই জাহাজের লাগবে ৩৪ দিন।

সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তীব্র বাতাসের কারণে এভার গিভেন খালের তীরের কাছে চরে আটকা পড়ে, তাছাড়া ধুলিঝড়ও তখন দৃষ্টিসীমাকে বাধাগ্রস্ত করেছিল।

সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জেনারেল ওসামা রাবি বলেছেন, আবহাওয়া ‘মূল কারণ ছিল না’। এক্ষেত্রে ‘কারিগরি বা মানুষের ত্রুটি’ ছিল বলেও তার ধারণা।

জাপানের শোয়েই কিসেন-এর মালিকানাধীন তাইওয়ানের এভারগ্রিন মেরিন এভার গিভেন জাহাজটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।

শোয়েই কিসেন-এর প্রেসিডেন্ট ইউকিতো হিগাকি বলেছেন, জাহাজটির ক্ষতি হয়নি। ভেতরে পানিও প্রবেশ করেনি।