ঢাকা ০৫:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
অপারেশন ডেভিল হান্টে মোংলায় ২ জনকে আটক জামায়াত নেতা আজহার লিভ টু আপিলের অনুমতি পাবেন, আদেশ বুধবার শতাধিক সদস্যের কমিটি নিয়ে আত্মপ্রকাশ করছে ছাত্রদের নতুন দল জেলা বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে ফুলবাড়ীতে মানবন্ধন ভৈরবে সুইচ গিয়ার এক ছিনতাইকারী কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১৪ ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের বিশুদ্ধানন্দ – শুভানন্দ অডিটোরিয়াম অনুষ্ঠিত ২০২৫ সাজেকে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে একাধিক কটেজ ও রেস্টুরেন্টে রমজানে সরকারি অফিসের সময়সূচি ঘোষণা মুসলিম ‘গণহত্যা’র জন্য ক্ষমা চাইলেন সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী সাবেক আইজিপিসহ ১০৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিপিএম-পিপিএম পদক প্রত্যাহার

‘২৩৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে’ যেভাবে চার জিম্মিকে উদ্ধার করল ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪
  • / ৮২ ৫০০০.০ বার পাঠক

সরায়েলি সামরিক বাহিনী মধ্য গাজা থেকে শনিবার চারজন জিম্মিকে উদ্ধার করেছে। কয়েক সপ্তাহব্যাপী পরিকল্পনার পর অভিযানে তাদের উদ্ধার করা হয়। তবে সেই অভিযানে শিশুসহ অন্তত ২৩৬ ফিলিস্তিনি মারা গেছে বলে জানা যাচ্ছে।

ইসরায়েলিদের জন্য এ অভিযান স্বস্তি নিয়ে আসলেও ফিলিস্তিনিদের জন্য সেটা আরও দুর্ভোগ তৈরি করেছে। গাজার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঘনবসতিপূর্ণ নুসেইরাত ক্যাম্পে অভিযানে শিশুসহ কয়েক ডজন লোক মারা গেছে।

“সীডস অব সামার” নামে অভিহিত এই অভিযান অস্বাভাবিকভাবে দিনের বেলায় পরিচালনা করা হয়েছিল। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে আরো বেশি চমকে দিয়েছে।

সকালের মাঝামাঝি সময়ে সাধারণত রাস্তাগুলো ব্যস্ত থাকে। লোকজন নিকটবর্তী দোকানে কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকে। ওই এলাকায় ঢুকে অভিযান চালানো ইসরায়েলি স্পেশাল ফোর্সের জন্য শুধু যে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল তা নয়, বিশেষ করে বের হওয়াটা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। স্পেশাল ফোর্সের একজন কর্মকর্তা আহত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন বলে ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে।

১৯৭৬ সালে উগান্ডা থেকে একশজন জিম্মিকে ইসরায়েলের উদ্ধারের কথা উল্লেখ করে আইডিএফ এর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার এডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, “ এটা এনটেবিতে যে রকম অভিযান ছিল সেরকমই একটা”।

 ইসরায়েলি বাহিনীর উদ্ধার করা চার জিম্মির একজন নোয়া আরগামানি

তিনি বলেছেন, স্পেশাল কমান্ডোরা একইসাথে নুসেইরাত ক্যাম্পের দুইটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালিয়েছিল যেখানে জিম্মিদের রাখা হয়েছে। একটা অ্যাপার্টমেন্টে ২৬ বছর বয়সী একজন জিম্মি নোয়া আরগামানি ছিল। অন্যটিতে ৪১ বছর বয়সী স্লোমি জিভ, ২৭ বছর বয়সী আন্দ্রে কজলভ এবং ২২ বছর বয়সী আলমগ মির জেন ছিল।

হাগারি বলেন তারা খাঁচায় আটকা ছিল না কিন্তু রুমে তালাবদ্ধ ছিল যেখানে তাদের রক্ষীরা পাহারা দিচ্ছিল।

তিনি বলেন, ইসরায়েলি কমান্ডোরা সেখানে অভিযান চালিয়ে নিজেদের শরীর দিয়ে জিম্মিদের ঘিরে রাখে। বাইরে থাকা সামরিক গাড়িতে ওঠানোর আগে পর্যন্ত এভাবে তাদের নিরাপত্তা দেয়া হয়। চলে যাওয়ার সময় তারা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছিল।

হাগারি বলেন, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী নিখুঁতভাবে অভিযানের পরিকল্পনা করেছিল। এমনকি প্রশিক্ষণের জন্য অ্যাপার্টমেন্টের নমুনাও তৈরি করেছিল।

ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া মোবাইল ফোনের ভিডিওতে দেখা যায় ক্ষেপণাস্ত্রের বাঁশি এবং গোলাগুলির শব্দ শুনলে লোকজন আত্মরক্ষার জন্য নিচু হয়ে পড়ছে। পরের ফুটেজে রাস্তায় মরদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়।

এই অভিযানে স্পষ্টতই বড়সড় ফোর্স জড়িত ছিল। মধ্য গাজার দুইটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৭০ টিরও বেশি মরদেহ তারা গণনা করেছেন।

নিহতের সংখ্যা একশরও কম বলে হাগারি অনুমান করছেন। কিন্তু হামাসের মিডিয়া অফিস বলছে দুইশ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে।

হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত হতে পারেনি বিবিসি।

নুসেইরাতে আশ্রয় নেয়া নোরা আবু খামিস কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বিবিসিকে বলেন, “ আমি আমার সন্তানের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করেছি। আমার আরেক সন্তান জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এমনকি আমার স্বামী এবং শাশুড়ি আমার পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। এটা একটা গণহত্যা”।

 ইসরায়েলি হামলায় সন্তান নিহতের পর কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নোরা আবু খামিস

দশ বছর বয়সী আরিজ আল জাদনেহ কাছের একটি হাসপাতালে আমাদের সাথে কথা বলেছেন। বিমান হামলা, ট্যাঙ্ক এবং গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।

“আমরা শ্বাস নিতে পারছিলাম না। আমার বোন রিমাজের মাথায় শার্পনেলের আঘাত লেগেছিল এবং আমার পাঁচ বছরের বোন ইয়ারাও শার্পনেলের আঘাতে আহত হয়েছে”। তথ্যসূত্র: বিবিসি

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

‘২৩৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে’ যেভাবে চার জিম্মিকে উদ্ধার করল ইসরায়েল

আপডেট টাইম : ১০:৪৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪

সরায়েলি সামরিক বাহিনী মধ্য গাজা থেকে শনিবার চারজন জিম্মিকে উদ্ধার করেছে। কয়েক সপ্তাহব্যাপী পরিকল্পনার পর অভিযানে তাদের উদ্ধার করা হয়। তবে সেই অভিযানে শিশুসহ অন্তত ২৩৬ ফিলিস্তিনি মারা গেছে বলে জানা যাচ্ছে।

ইসরায়েলিদের জন্য এ অভিযান স্বস্তি নিয়ে আসলেও ফিলিস্তিনিদের জন্য সেটা আরও দুর্ভোগ তৈরি করেছে। গাজার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঘনবসতিপূর্ণ নুসেইরাত ক্যাম্পে অভিযানে শিশুসহ কয়েক ডজন লোক মারা গেছে।

“সীডস অব সামার” নামে অভিহিত এই অভিযান অস্বাভাবিকভাবে দিনের বেলায় পরিচালনা করা হয়েছিল। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে আরো বেশি চমকে দিয়েছে।

সকালের মাঝামাঝি সময়ে সাধারণত রাস্তাগুলো ব্যস্ত থাকে। লোকজন নিকটবর্তী দোকানে কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকে। ওই এলাকায় ঢুকে অভিযান চালানো ইসরায়েলি স্পেশাল ফোর্সের জন্য শুধু যে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল তা নয়, বিশেষ করে বের হওয়াটা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। স্পেশাল ফোর্সের একজন কর্মকর্তা আহত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন বলে ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে।

১৯৭৬ সালে উগান্ডা থেকে একশজন জিম্মিকে ইসরায়েলের উদ্ধারের কথা উল্লেখ করে আইডিএফ এর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার এডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, “ এটা এনটেবিতে যে রকম অভিযান ছিল সেরকমই একটা”।

 ইসরায়েলি বাহিনীর উদ্ধার করা চার জিম্মির একজন নোয়া আরগামানি

তিনি বলেছেন, স্পেশাল কমান্ডোরা একইসাথে নুসেইরাত ক্যাম্পের দুইটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালিয়েছিল যেখানে জিম্মিদের রাখা হয়েছে। একটা অ্যাপার্টমেন্টে ২৬ বছর বয়সী একজন জিম্মি নোয়া আরগামানি ছিল। অন্যটিতে ৪১ বছর বয়সী স্লোমি জিভ, ২৭ বছর বয়সী আন্দ্রে কজলভ এবং ২২ বছর বয়সী আলমগ মির জেন ছিল।

হাগারি বলেন তারা খাঁচায় আটকা ছিল না কিন্তু রুমে তালাবদ্ধ ছিল যেখানে তাদের রক্ষীরা পাহারা দিচ্ছিল।

তিনি বলেন, ইসরায়েলি কমান্ডোরা সেখানে অভিযান চালিয়ে নিজেদের শরীর দিয়ে জিম্মিদের ঘিরে রাখে। বাইরে থাকা সামরিক গাড়িতে ওঠানোর আগে পর্যন্ত এভাবে তাদের নিরাপত্তা দেয়া হয়। চলে যাওয়ার সময় তারা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছিল।

হাগারি বলেন, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী নিখুঁতভাবে অভিযানের পরিকল্পনা করেছিল। এমনকি প্রশিক্ষণের জন্য অ্যাপার্টমেন্টের নমুনাও তৈরি করেছিল।

ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া মোবাইল ফোনের ভিডিওতে দেখা যায় ক্ষেপণাস্ত্রের বাঁশি এবং গোলাগুলির শব্দ শুনলে লোকজন আত্মরক্ষার জন্য নিচু হয়ে পড়ছে। পরের ফুটেজে রাস্তায় মরদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়।

এই অভিযানে স্পষ্টতই বড়সড় ফোর্স জড়িত ছিল। মধ্য গাজার দুইটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৭০ টিরও বেশি মরদেহ তারা গণনা করেছেন।

নিহতের সংখ্যা একশরও কম বলে হাগারি অনুমান করছেন। কিন্তু হামাসের মিডিয়া অফিস বলছে দুইশ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে।

হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত হতে পারেনি বিবিসি।

নুসেইরাতে আশ্রয় নেয়া নোরা আবু খামিস কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বিবিসিকে বলেন, “ আমি আমার সন্তানের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করেছি। আমার আরেক সন্তান জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এমনকি আমার স্বামী এবং শাশুড়ি আমার পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। এটা একটা গণহত্যা”।

 ইসরায়েলি হামলায় সন্তান নিহতের পর কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নোরা আবু খামিস

দশ বছর বয়সী আরিজ আল জাদনেহ কাছের একটি হাসপাতালে আমাদের সাথে কথা বলেছেন। বিমান হামলা, ট্যাঙ্ক এবং গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।

“আমরা শ্বাস নিতে পারছিলাম না। আমার বোন রিমাজের মাথায় শার্পনেলের আঘাত লেগেছিল এবং আমার পাঁচ বছরের বোন ইয়ারাও শার্পনেলের আঘাতে আহত হয়েছে”। তথ্যসূত্র: বিবিসি