ঢাকা ১১:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::

মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের ওপর আজ গুলি চালাল পুলিশ, নিহত ৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীদের ওপর ফের গুলি ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী, এতে ৬ জন নিহত হয়েছে বলে গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

রবিবার পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কয়েক ডজন মানুষ নিহত এবং হামলাকারীরা চীনা অর্থায়নে পরিচালিত অনেকগুলো কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পরদিন আজ সোমবার ফের গণতন্ত্রপন্থিদের রক্তে রঞ্জিত হল মিয়ানমারের মাটি।

এদিন মধ্যাঞ্চলীয় মাইংইয়ান ও অংলান শহরে পুলিশ গুলিবর্ষণ করেছে; দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় ও পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হাখাসহ বেশ কয়েকটি শহরে কারাবন্দি নেত্রী অং সান সু চির সমর্থকরা সমাবেশ করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

“একটি মেয়ের মাথায় ও এক বালকের মুখে গুলি লেগেছে। আমি এখন লুকিয়ে আছি,” টেলিফোনে এমনটাই বলেছেন মাইংইয়ানের ১৮ বছর বয়সী এক আন্দোলনকারী।

বার্তা সংস্থা মিয়ানমার নাও তাদের প্রতিবেদনে মাইংইয়ানে তিন ও অংলানে দুই প্রতিবাদকারী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে। মান্দালয়েও একজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন শহরটির এক সাংবাদিক।

রয়টার্স লিখেছে, কর্তৃপক্ষের সব ধরনের দমনপীড়ন অগ্রাহ্য করেই সোমবার সামরিক জান্তাবিরোধী প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নামে।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকেও অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ দমনে দিন দিন আরও সহিংস হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের পর রোববারই ছিল সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন।

এদিন সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে ইয়াংগনের হ্লাইং থারিয়ারে; সেখানে চীনা-মালিকানাধীন কারখানাগুলোতে অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ৩৭ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানিয়েছেন।

অন্যান্য এলাকায় আরও ১৬ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স (এএপিপি); রোববারের সহিংসতায় এক পুলিশ সদস্যও নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

ইয়াংগনের হ্লাইং থারিয়ার ও আরও কয়েকটি জেলা এবংমান্দালয়ের একাংশে সামরিক আইন জারি করা হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ১৪০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে এএপিপি-র এক হিসাবে জানানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার মুখপাত্রের মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

রবিবার ইয়াংগনের বিভিন্ন কারখানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর চীনের দিক থেকে কড়া প্রতিক্রিয়াও এসেছে।

চীনা সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস লিখেছে, মিয়ানমারে চীনের বিনিয়োগ করা ৩২টি কারখানা ‘ভয়াবহ আক্রমণে লণ্ডভণ্ড’ হয়েছে। এতে ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি দুই চীনা কর্মী আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। চীনের দূতাবাস মিয়ানমারের জেনারেলদেরকে সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে।

মিয়ানমারে প্রভাব বিস্তারে চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা জাপান জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে কি ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখানো যায় তা নিয়ে ভাবছে।

আরো খবর.......

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রচন্ড খড়া রোদে ডিএমপি কমিশনারের স্বস্থির উদ্যোগ

মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের ওপর আজ গুলি চালাল পুলিশ, নিহত ৬

আপডেট টাইম : ০২:২৮:১৬ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৫ মার্চ ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীদের ওপর ফের গুলি ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী, এতে ৬ জন নিহত হয়েছে বলে গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

রবিবার পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কয়েক ডজন মানুষ নিহত এবং হামলাকারীরা চীনা অর্থায়নে পরিচালিত অনেকগুলো কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পরদিন আজ সোমবার ফের গণতন্ত্রপন্থিদের রক্তে রঞ্জিত হল মিয়ানমারের মাটি।

এদিন মধ্যাঞ্চলীয় মাইংইয়ান ও অংলান শহরে পুলিশ গুলিবর্ষণ করেছে; দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় ও পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হাখাসহ বেশ কয়েকটি শহরে কারাবন্দি নেত্রী অং সান সু চির সমর্থকরা সমাবেশ করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

“একটি মেয়ের মাথায় ও এক বালকের মুখে গুলি লেগেছে। আমি এখন লুকিয়ে আছি,” টেলিফোনে এমনটাই বলেছেন মাইংইয়ানের ১৮ বছর বয়সী এক আন্দোলনকারী।

বার্তা সংস্থা মিয়ানমার নাও তাদের প্রতিবেদনে মাইংইয়ানে তিন ও অংলানে দুই প্রতিবাদকারী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে। মান্দালয়েও একজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন শহরটির এক সাংবাদিক।

রয়টার্স লিখেছে, কর্তৃপক্ষের সব ধরনের দমনপীড়ন অগ্রাহ্য করেই সোমবার সামরিক জান্তাবিরোধী প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নামে।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকেও অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ দমনে দিন দিন আরও সহিংস হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের পর রোববারই ছিল সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন।

এদিন সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে ইয়াংগনের হ্লাইং থারিয়ারে; সেখানে চীনা-মালিকানাধীন কারখানাগুলোতে অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ৩৭ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানিয়েছেন।

অন্যান্য এলাকায় আরও ১৬ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স (এএপিপি); রোববারের সহিংসতায় এক পুলিশ সদস্যও নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

ইয়াংগনের হ্লাইং থারিয়ার ও আরও কয়েকটি জেলা এবংমান্দালয়ের একাংশে সামরিক আইন জারি করা হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ১৪০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে এএপিপি-র এক হিসাবে জানানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার মুখপাত্রের মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

রবিবার ইয়াংগনের বিভিন্ন কারখানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর চীনের দিক থেকে কড়া প্রতিক্রিয়াও এসেছে।

চীনা সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস লিখেছে, মিয়ানমারে চীনের বিনিয়োগ করা ৩২টি কারখানা ‘ভয়াবহ আক্রমণে লণ্ডভণ্ড’ হয়েছে। এতে ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি দুই চীনা কর্মী আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। চীনের দূতাবাস মিয়ানমারের জেনারেলদেরকে সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে।

মিয়ানমারে প্রভাব বিস্তারে চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা জাপান জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে কি ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখানো যায় তা নিয়ে ভাবছে।