ঢাকা ০২:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
পুলিশ প্রশাসনের নীতিগত পরিবর্তন হলেও এসআই মিজানের অসাধু নীতির পরিবর্তন হয়নি ঠাকুরগাঁওয়ে নারীদের ভূমি অধিকার ও কৃষি ভূমি সংষ্কার বিষয়ক সমাবেশ কালিয়াকৈরে ধর্ষণের অভিযোগে বাড়ির মালিক গ্রেফতার পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত কঠিন সময়ে কীভাবে পাশে ছিলেন স্ত্রী, জানালেন কোহলি ইতালিতে জি৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আলোচনার তালিকায় নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে আরো যা ‘পদক্ষেপ’ নিতে বললেন নূরুল কবির মেগা মানডে’: ৩ কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র যাত্রাবাড়ী অর্থের লোভ দেখিয়ে ‘গণঅভ্যুত্থানের’ ব্যর্থ চেষ্টা, নেপথ্যে কারা? ইমরান খানের হাজারো সমর্থক গ্রেপ্তার

জাবিতে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অপরাধের বিচার হয় না’

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : ১০:৫১:০০ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • / ১২৭ ৫০০০.০ বার পাঠক

বহিরাগত এক দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এ ঘটনার বিচার চেয়ে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল্লা ভূঁইয়া বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অপরাধের বিচার হয় না। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ছলচাতুরীর আশ্রয় নেওয়া হলে, যারা এই ছলচাতুরীর আশ্রয় নেবে তাদেরকে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করবো।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা।

এদিকে ধর্ষণের ঘটনা জানাজানির পর শনিবার রাতেই মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ‘ক্যাম্পাসে ধর্ষক কেন, প্রশাসন জবাব চাই’; ‘ধর্ষণমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’; ‘ধর্ষকদের পাহারাদার, হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী বলেন, একটা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে স্বামীকে হলে জিম্মি করে তার স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। আজকে আমি ক্লাসে বলেছি- এই বিশ্ববিদ্যালয় গজব নাজিল হওয়া উচিত, আমাদের সবার ধ্বংস হয়ে যাওয়া উচিত। এই সভ্যতার বিশ্ববিদ্যালয় কোনো দরকার নেই।

তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে এখন প্রায় আড়াই হাজার অছাত্র রয়েছে। এই ধর্ষণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। যতদিন প্রশাসনের মদদে এই ক্যাম্পাসে অছাত্র, অবৈধ ছাত্র অবস্থান করবে, ছাত্রলীগ নামধারী অছাত্ররা নিয়োগ বাণিজ্য করবে, চাঁদাবাজি করবে ততদিন এই ক্যাম্পাস থেকে অপরাধ দূর করা সম্ভব নয়। এই ক্যাম্পাসে কোন অবৈধ, সন্ত্রাসী, অছাত্র, মাদকব্যবসায়ী থাকবে না। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে প্রয়োজনে আমি শহীদ হয়ে যাব। যে সব হলে প্রাধ্যক্ষ অছাত্রদের দিয়ে হল চালায় প্রাধ্যক্ষ থাকতে পারবে না।
১৯৯৮ সালে আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধর্ষকদের বিতাড়িত করেছি। সন্ত্রাসীদের বিতাড়িত করেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরকে খুনিদের মদদ দেওয়ায় তাকে বিতাড়িত করেছি। কিন্তু আজকে আমরা আবার দেখতে পেয়েছি আমাদের এই ক্যাম্পাসে একদল নষ্ট মানুষ যারা যারা ক্ষমতায় বসে আছে, যারা নির্লজ্জ, অসভ্য যাদের কোনো বোধ নেই, বুদ্ধি নেই তারা ওই চেয়ার দখল করে বসে আছে। আমরাও উপাচার্যকে বলে দিতে চাই, আমরা অনেক বড় বড় উপাচার্যকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করেছি। আমরা আপনাকেও বিতাড়িত করে ছাড়ব যদি আপনারা এদের বিচার না করেন, বলেন এই অধ্যাপক।

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল্লা ভূঁইয়া বলেন, আপনারা জানেন এক বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট যৌন নিপীড়নের অভিযোগ থাকলেও তার কোনো সঠিক বিচার হয়নি। কোনো ঘটনা বিচ্ছিন্ন নয় প্রত্যেকটা ঘটনার সঙ্গে থাকে একটা কার্যকারণিক সম্পর্ক।

সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মূল অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করা হয়। এর আগে, রাতেই তাকে পালাতে সহযোগিতা করায় তিনজনকে আটক করা হয়।

এর আগে, শনিবার (৩ ফেরুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের পাশে জঙ্গলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী। এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জাবিতে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অপরাধের বিচার হয় না’

আপডেট টাইম : ১০:৫১:০০ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

বহিরাগত এক দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এ ঘটনার বিচার চেয়ে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল্লা ভূঁইয়া বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অপরাধের বিচার হয় না। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ছলচাতুরীর আশ্রয় নেওয়া হলে, যারা এই ছলচাতুরীর আশ্রয় নেবে তাদেরকে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করবো।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা।

এদিকে ধর্ষণের ঘটনা জানাজানির পর শনিবার রাতেই মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ‘ক্যাম্পাসে ধর্ষক কেন, প্রশাসন জবাব চাই’; ‘ধর্ষণমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’; ‘ধর্ষকদের পাহারাদার, হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী বলেন, একটা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে স্বামীকে হলে জিম্মি করে তার স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। আজকে আমি ক্লাসে বলেছি- এই বিশ্ববিদ্যালয় গজব নাজিল হওয়া উচিত, আমাদের সবার ধ্বংস হয়ে যাওয়া উচিত। এই সভ্যতার বিশ্ববিদ্যালয় কোনো দরকার নেই।

তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে এখন প্রায় আড়াই হাজার অছাত্র রয়েছে। এই ধর্ষণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। যতদিন প্রশাসনের মদদে এই ক্যাম্পাসে অছাত্র, অবৈধ ছাত্র অবস্থান করবে, ছাত্রলীগ নামধারী অছাত্ররা নিয়োগ বাণিজ্য করবে, চাঁদাবাজি করবে ততদিন এই ক্যাম্পাস থেকে অপরাধ দূর করা সম্ভব নয়। এই ক্যাম্পাসে কোন অবৈধ, সন্ত্রাসী, অছাত্র, মাদকব্যবসায়ী থাকবে না। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে প্রয়োজনে আমি শহীদ হয়ে যাব। যে সব হলে প্রাধ্যক্ষ অছাত্রদের দিয়ে হল চালায় প্রাধ্যক্ষ থাকতে পারবে না।
১৯৯৮ সালে আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধর্ষকদের বিতাড়িত করেছি। সন্ত্রাসীদের বিতাড়িত করেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরকে খুনিদের মদদ দেওয়ায় তাকে বিতাড়িত করেছি। কিন্তু আজকে আমরা আবার দেখতে পেয়েছি আমাদের এই ক্যাম্পাসে একদল নষ্ট মানুষ যারা যারা ক্ষমতায় বসে আছে, যারা নির্লজ্জ, অসভ্য যাদের কোনো বোধ নেই, বুদ্ধি নেই তারা ওই চেয়ার দখল করে বসে আছে। আমরাও উপাচার্যকে বলে দিতে চাই, আমরা অনেক বড় বড় উপাচার্যকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করেছি। আমরা আপনাকেও বিতাড়িত করে ছাড়ব যদি আপনারা এদের বিচার না করেন, বলেন এই অধ্যাপক।

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল্লা ভূঁইয়া বলেন, আপনারা জানেন এক বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট যৌন নিপীড়নের অভিযোগ থাকলেও তার কোনো সঠিক বিচার হয়নি। কোনো ঘটনা বিচ্ছিন্ন নয় প্রত্যেকটা ঘটনার সঙ্গে থাকে একটা কার্যকারণিক সম্পর্ক।

সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মূল অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করা হয়। এর আগে, রাতেই তাকে পালাতে সহযোগিতা করায় তিনজনকে আটক করা হয়।

এর আগে, শনিবার (৩ ফেরুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের পাশে জঙ্গলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী। এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।