গরমের শুরুতেই মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ রাজধানীবাসী
- আপডেট টাইম : ০১:৪৬:০৬ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২ মার্চ ২০২১
- / ২৫৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
স্টাফ রিপোর্টার।।
শীত শেষে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মশার উপদ্রব। গত কয়েকদিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মশার পরিমাণ বেড়ে গেছে। এতে রাজধানীর বাসিন্দারা মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।
গত এক সপ্তাহ আগে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘রাজধানী ঢাকায় গত বছরের এই সময়ের তুলনায় বর্তমানে মশার ঘনত্ব বেড়েছে চার গুণ। বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের মশার ঘনত্ব বেশি লক্ষ্য করা যায়। আর মশা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া না হলে চলতি মাসে মশার ঘনত্ব বেড়ে চরমে পৌঁছাবে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশা মারার ওষুধ ছিটানো ছাড়া আরও কিছু সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমের উপর জোর দিতে। নর্দমা ও ডোবা পরিষ্কার এবং মশা নিয়ন্ত্রণের পুরো দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের নর্দমা ও ডোবার পানি চলমান করে দিতে হবে। একই সঙ্গে সেখানে লার্ভিসাইড, অ্যাডাল্টিসাইট কিংবা গাপ্পি মাছ ছাড়তে হবে। আর নগর কর্মকর্তারা বলছেন, মশা নিয়ন্ত্রণে শিগগিরই সাঁড়াশি অভিযানে নামবেন তারা।
এদিকে বাড্ডা, মহাখালী, নাখালপাড়া, ফার্মগেটসহ রাজধানীর কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা জানান, তারা মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।
রাজধানীর পশ্চিম নাখালপাড়ার বাসিন্দা সিয়াম আহমেদ বলেন, এলাকায় মশা বেড়ে গেছে। সন্ধ্যার পর ঘরে বসে থাকা যায় না। রাজধানীর কর্তৃপক্ষ কি রকম মশার ওষুধ ব্যবহার করে বুঝি না।
মহাখালীর হাজারি বাড়ি এলাকার একটি মেসে বসবাসকারী ওমর ফারুক নামে এক শিক্ষার্থী দৈনিক ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘মশার যন্ত্রণায় দরজা জানালা খেলা যায় না। পড়তে বসলে মশা কামড়ে স্থির থাকা যায় না। আমাদের এখানে মশার ওষুধ ছিটানো খুব একটা চোখে পড়েনি। আমি সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনুরোধ করবো যেন দ্রুত এই এলাকায় মশার ওষুধ ছিটানোর ব্যবস্থা করেন।’
একই সমস্যার কথা জানান উত্তর বাড্ডার স্বাধীনতা সরণীর বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী বিল্লাল হোসেন নীরব। তিনি বলেন, ১০-১২ দিন দরে মশা বৃদ্ধির বিষয়টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে মশারি টাঙিয়ে বসে থাকতে হয়।
তিনি আরও বলেন, মাঝেমধ্যে দেখি ওষুধ ছিটাতে আসে। যেভাবে ধোয়া ওড়ে এভাবে তো মশা মরে না। মশা মারার যে ওষুধ ছিটানো হয় সেটি একটু ভালো মানের হলে মশার উপদ্রব কমবে।
এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. লেলিন চৌধুরী দৈনিক ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, দিন দিন মশার ঘনত্ব বাড়ছে। ফলে ডেঙ্গু আর চিকন গুনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে পোরে। আমরা মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য সাধারণত মশা মারার ওষুধ ছিটায়। এছাড়া আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে মশা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে আমাদের কিছু বিষয়ের উপর নজর দিতে হবে। সেগুলো হলো- পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা। আমাদের চারপাশের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে যেনো কোথাও মশা না জন্মায়। অন্যগুলো হচ্ছে জৈবিক ব্যবস্থাপনা বা বায়োলজিক্যাল কন্ট্রোল। আরেকটি হচ্ছে কেমিক্যাল নিয়ন্ত্রণ। সর্বশেষ বিষয় হলো জনসাধারণকে এসব বিষয়ে সম্পৃক্ততা বাড়ানো। বিভিন্ন সচেতনমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। মশা নিয়ন্ত্রণে সরকারি পরিকল্পনা বাড়াতে হবে।
মশা নিয়ন্ত্রণে সিটি কর্পোরেশন কি পদক্ষেপ গ্রহণ করছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল জোবায়দুর রহমান দৈনিক সময়ের কন্ঠ অনলাইনকে বলেন, শীতের শেষে তাপমাত্রা বাড়ায় প্রকৃতিতে যে মশার ডিম থাকে সেগুলো একযোগে ফুটে যায়। ফলে ফেব্রুয়ারি ও মার্চে মশার ঘনত্ব বেড়ে যায়। আমাদের একটি বিশেষ টিম ৮ মার্চ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত প্রতিটি এলাকায় সাড়াশি অভিযান চালাবে। এছাড়া আমাদের নিয়মিত সব কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।