নাজিরপুরে ১ কেজি ইলিশের দাম ১ মন ধানের চেয়েও বেশি
- আপডেট টাইম : ১১:০৯:২৪ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ২৯২ ৫০০০.০ বার পাঠক
ধান, নদী, খাল এই তিনে বরিশাল, আর বরিশালের পিরোজপুর নাজিরপুর একটি নদীবেষ্ঠিত এলাকা, এতে এ উপজেলায় রয়েছে কালিগঙ্গা,মধুমতি, বলেশ্বর, তালতলা, আর এ নদীতে একসময় প্রচুর পরিমানে ইলিশ পাওয়া যেত। উপজেলায় রয়েছে অসংখ্য হাট-বাজার এ বাজারগুলোতে বিভিন্ন নদী ও সাগর থেকে প্রচুর পরিমানে ইলিশের আমদানি হলেও দাম আঁকাশচুম্বী যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।
এঅঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষই কৃষক মৌসুমের সময় ধান গোলাভরে রেখে দেয় আর তা দিয়ে প্রতি হাটে ২/১ মন করে বিক্রী করে বাজার করে থাকেন তারা। আগে একমন ধান ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রী করে পুরা সপ্তাহের বাজার করা যেত সাথে ইলিশ মাছ ও কিনতে পারত। বর্তমানে চাষীরা ১ মন ধান বিক্রী করেন ১ হাজার থেকে ১১ শত টাকায়, আর ১ কেজি ইলিশের দাম ১৬ শত থেকে ২ হাজার টাকা, যা গত বছরের ভরা ইলিশের মৌসুমের তুলনায় আকাঁশ-পাতাল ব্যবধান। ১ মন ধান বিক্রী করে পুরা সপ্তাহের বাজার তো দুরের কথা ১ কেজি ইলিশ মাছ কিনতেই এখন বিক্রী করতে হয় দেড় মন ধান।
দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারনে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের যেমন দাম বেড়েছে তুলনামূলক ভাবে ধানের দাম ততটা বৃদ্ধি হয় নাই বলে দাবী করেন কৃষকেরা, তবে আগের চেয়ে ধানের দাম দ্বিগুন বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিকই কিন্তু ১ মন ধান বিক্রী করেও ১ কেজির ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না, এর ফলে গ্রাম বাংলার দরিদ্র কৃষকদের খাদ্য তালিকায় থাকছে না ইলিশ মাছ। বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ তা গ্রামগঞ্জের ছেলে মেয়েরা শুধু বইয়ের পাতায়ই পড়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার (১ লা সেপ্টেম্বর) স্থানীয় নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠীর কালিবাড়ী বাজারে ঘুড়ে দেখা যায় বাজারে ইলিশ মাছের আমদানী থাকলেও ভিরছে না ক্রেতা, অতিরিক্ত দামের কারনে কিনতে পারছে না সাধারণ মানুষ, তবে জাটকা ইলিশ এর দাম কিছুটা নাগালের ভিতরে থাকলেও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। ঝাটকা ৬ শত থেকে ৭ শত টাকা। আর বড় ইলিশ কেজি ১৮ শত থেকে ২২ শত টাকা, আর মাঝারি ইলিশ ১ হাজার হতে ১২ শত টাকা।
সাধারণ মানুষ বলছে যে মাছ চাষ করতে হয় না, যা উৎপাদনে ব্যয় নাই তার কেন এত দাম হবে ? তবে জেলেদের ভাষ্য জ্বালানী তেলের দাম অতিরিক্ত মাত্রায় বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারনে শ্রমিকদের বেতন দিতে হয় আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন তাই গত বছরের তুলনায় অধিক দামে মাছ বিক্রয় করেও তেমন একটা লাভ হচ্ছে না।
এবিষয়ে নাজিরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গৌতম মন্ডল বলেন, আমাদের অঞ্চলের নদীগুলোতে যে পরিমান ইলিশ মাছ পাওয়া যায় তাতে এলাকার চাহিদা মিটছে না, এছাড়া সাগর থেকে মাছ আহরন করা বোর্ড গুলোর বোর্ড ল্যান্ডি স্পর্ট (আরৎ) নেই। বর্তমানে একশ্রেনীর মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে,এবং তারা নির্ভেজাল মাছ খেতে অভ্যস্ত হওয়ার কারনে দামের কথা চিন্তা না করে যে কোন মূল্যে তরতাজা মাছ নদী থেকে ওঠার সাথে সাথে ক্রয় করে নিচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারনে সবকিছুরই যেমন দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি ইলিশের দাম ও বৃদ্ধি পেয়েছে। যদি সাগর থেকে মাছ আহরণকৃত বোর্ড ল্যান্ডি স্পর্ট থাকত তাহলে কিছুটা কম দামে ইলিশ মাছ পাওয়া যেত।