ঢাকা ১০:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
কালিয়াকৈরে উঠান বৈঠক ও বিট পুলিশিং সভা অনুষ্ঠিত মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘের মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু নওগাঁর নিয়ামতপুরে সমতল ভূমিতে বসবাসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে মুরগি ও মুরগির উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠান ছাত্রশিবির এখন ছাত্রসমাজের সবচেয়ে আপন: ডা. শফিকুর রহমান ন্যূনতম সংস্কার শেষে নির্বাচন চাই: মির্জা ফখরুল ইন্দোনেশিয়ায় আকস্মিক ভূমিধসে ১৬ জনের মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে নতুন মোড়কে জমি সহ স্থাপনা দখলের চেষ্টা// অবরুদ্ধ পাঁচ দশকের পুরনো হরিপুর মহিলা সমিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যেতে নির্বাহী আদেশে ট্রাম্পের সই নাসিরনগর উপজেলা সদরে দিনে-দুপুরে ফ্ল্যাটে চুরি হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে. ড. রেজাউল করিম

বরগুনায় হস্তান্তরের আগেই নবনির্মিত মুজিব কিল্লায় ফাটল, স্থানীয়দের অসন্তোষ

বরিশাল ব্যুরোচীপ
  • আপডেট টাইম : ০১:১১:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অগাস্ট ২০২৩
  • / ১২০ ৫০০০.০ বার পাঠক

বরগুনার তালতলীতে হস্তান্তরের আগেই ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আপৎকালীন আশ্রয়ণ কেন্দ্রের (মুজিব কিল্লা) একাধিক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি মুজিব কিল্লার বিভিন্ন অংশের ভেতর ও বাইরের দেয়ালে ফাটলগুলো স্থানীয়দের নজরে আসে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় এ ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

জানা গেছে, বরগুনার তালতলীতে তামাতুটিলায় মুজিব কিল্লা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কার্যাদেশ পান পটুয়াখালীর সোনালী ট্রেডার্সের মালিক সঞ্জয় কুমার কর্মকার। প্রকল্পটি ওই অর্থ বছরের ভেতরে নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে তা হয়নি। তবে হস্তান্তরের আগেই গত বছরের ১৩ অক্টোবরে ভবনটি উদ্বোধন হয়েছে এমন সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছেন ঠিকাদার। প্রকল্পে মাটির কাজ, ভবনের স্লোপ, ভিমের লিংটেন, ক্যাটল শেডসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করা হলেও তা অত্যন্ত নিম্নমানের হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ফলে ভবনে স্লোপ, মূল ভিমের লিংটেন ও ক্যাটল শেডে ফাটল দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও মুজিব কিল্লা প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার সম্প্রতি প্রকল্পটি পরিদর্শনে গেলে আগেভাগেই ফাটলগুলো সিমেন্ট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। এদিকে ১৯৯৫ সালে উপজেলার তালতলী, মালিপাড়া ও তুলাতলী গ্রাম নিয়ে গঠিত হয়েছে তামাতু নামের টিলা। এটাও ভুল করে তারা নাম লিখেছেন তামাকুটিলা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় জানান, মুজিব কিল্লা নির্মাণের সময় নিম্নমানের সমগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে ঠিকাদারের লোকজন আমাদের হুমকি দেন। তারা বলেন, আমাদের দেখার দরকার নেই।
ওই এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী নিজাম বলেন, আমরা দেখছি, মুজিব কিল্লায় ফাটল ধরেছে। কেন ফাটল দেখা দিল, আমরা এর ব্যাখ্যা বুঝতে চাই না। ফাটলের কারণে আমরা আতঙ্কিত।
ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নজরুল ইসলাম লিটু বলেন, মুজিব কিল্লার কাজে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করানো হয়েছে। আমি একাধিকার তাদের বলতে গেলে তারা বলেন, উন্নয়ন কাজে বাধা দিতে আসবেন না। এমন কি চাঁদাবাজি মামলা দেওয়ারও হুমকি দেন আমাকে।
স্থানীয় বাসিন্দা রেকসোনা বলেন, তালতলী তামাতুটিলায় মুজিব কিল্লা নির্মাণকাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে, না হলে এভাবে ফাটবে কেন?
এ বিষয় সোনালী ট্রেডার্সের মালিক সঞ্জয় কুমার কর্মকার বলেন, ভবনটি এখনও হস্তান্তর করা হয়নি। যে সব স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে, সেগুলো সংস্কার করে ভবনটি হস্তান্তর করা হবে।
মুজিব কিল্লা প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার মো. শামছুদ্দোহা বলেন, ভবনের কিছু স্থানে ফাটল আছে। এটা ঠিকাদারকে একাধিকবার ঠিক করে দিতে বলেছি। কিন্তু তিনি ঠিক করে দিচ্ছেন না। ফাটলে সংস্কার না করা পর্যন্ত ঠিকাদারকে ফাইনাল বিল দেওয়া হবে না। আর আমরা ভবনটি বুঝেও নেব না।
ভবন নির্মাণ কাজের পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুহিবুল ইসলাম জানান, এ বিষয়টি দেখভাল করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। আসলে আমাদের হাতে তেমন কিছু নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার তুম্পা বলেন, মুজিব কিল্লা আমাদের কাছে হস্তান্তর করেনি। ফাটল থাকলে ভবন আমরা বুঝে নেব না। ফাইনাল বিল ধরে রাখা হয়েছে, ভবন সংস্কার না করে দেওয়া পর্যন্ত ফাইনাল বিল দেওয়া হবে না।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বরগুনায় হস্তান্তরের আগেই নবনির্মিত মুজিব কিল্লায় ফাটল, স্থানীয়দের অসন্তোষ

আপডেট টাইম : ০১:১১:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অগাস্ট ২০২৩

বরগুনার তালতলীতে হস্তান্তরের আগেই ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আপৎকালীন আশ্রয়ণ কেন্দ্রের (মুজিব কিল্লা) একাধিক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি মুজিব কিল্লার বিভিন্ন অংশের ভেতর ও বাইরের দেয়ালে ফাটলগুলো স্থানীয়দের নজরে আসে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় এ ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

জানা গেছে, বরগুনার তালতলীতে তামাতুটিলায় মুজিব কিল্লা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কার্যাদেশ পান পটুয়াখালীর সোনালী ট্রেডার্সের মালিক সঞ্জয় কুমার কর্মকার। প্রকল্পটি ওই অর্থ বছরের ভেতরে নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে তা হয়নি। তবে হস্তান্তরের আগেই গত বছরের ১৩ অক্টোবরে ভবনটি উদ্বোধন হয়েছে এমন সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছেন ঠিকাদার। প্রকল্পে মাটির কাজ, ভবনের স্লোপ, ভিমের লিংটেন, ক্যাটল শেডসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করা হলেও তা অত্যন্ত নিম্নমানের হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ফলে ভবনে স্লোপ, মূল ভিমের লিংটেন ও ক্যাটল শেডে ফাটল দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও মুজিব কিল্লা প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার সম্প্রতি প্রকল্পটি পরিদর্শনে গেলে আগেভাগেই ফাটলগুলো সিমেন্ট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। এদিকে ১৯৯৫ সালে উপজেলার তালতলী, মালিপাড়া ও তুলাতলী গ্রাম নিয়ে গঠিত হয়েছে তামাতু নামের টিলা। এটাও ভুল করে তারা নাম লিখেছেন তামাকুটিলা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় জানান, মুজিব কিল্লা নির্মাণের সময় নিম্নমানের সমগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে ঠিকাদারের লোকজন আমাদের হুমকি দেন। তারা বলেন, আমাদের দেখার দরকার নেই।
ওই এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী নিজাম বলেন, আমরা দেখছি, মুজিব কিল্লায় ফাটল ধরেছে। কেন ফাটল দেখা দিল, আমরা এর ব্যাখ্যা বুঝতে চাই না। ফাটলের কারণে আমরা আতঙ্কিত।
ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নজরুল ইসলাম লিটু বলেন, মুজিব কিল্লার কাজে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করানো হয়েছে। আমি একাধিকার তাদের বলতে গেলে তারা বলেন, উন্নয়ন কাজে বাধা দিতে আসবেন না। এমন কি চাঁদাবাজি মামলা দেওয়ারও হুমকি দেন আমাকে।
স্থানীয় বাসিন্দা রেকসোনা বলেন, তালতলী তামাতুটিলায় মুজিব কিল্লা নির্মাণকাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে, না হলে এভাবে ফাটবে কেন?
এ বিষয় সোনালী ট্রেডার্সের মালিক সঞ্জয় কুমার কর্মকার বলেন, ভবনটি এখনও হস্তান্তর করা হয়নি। যে সব স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে, সেগুলো সংস্কার করে ভবনটি হস্তান্তর করা হবে।
মুজিব কিল্লা প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার মো. শামছুদ্দোহা বলেন, ভবনের কিছু স্থানে ফাটল আছে। এটা ঠিকাদারকে একাধিকবার ঠিক করে দিতে বলেছি। কিন্তু তিনি ঠিক করে দিচ্ছেন না। ফাটলে সংস্কার না করা পর্যন্ত ঠিকাদারকে ফাইনাল বিল দেওয়া হবে না। আর আমরা ভবনটি বুঝেও নেব না।
ভবন নির্মাণ কাজের পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুহিবুল ইসলাম জানান, এ বিষয়টি দেখভাল করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। আসলে আমাদের হাতে তেমন কিছু নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার তুম্পা বলেন, মুজিব কিল্লা আমাদের কাছে হস্তান্তর করেনি। ফাটল থাকলে ভবন আমরা বুঝে নেব না। ফাইনাল বিল ধরে রাখা হয়েছে, ভবন সংস্কার না করে দেওয়া পর্যন্ত ফাইনাল বিল দেওয়া হবে না।