মোংলা বন্দরে যুক্ত হচ্ছে আধুুনিক ৬ জলযান
- আপডেট টাইম : ১২:৪৯:৩৫ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৩১ জুলাই ২০২৩
- / ১০৮ ৫০০০.০ বার পাঠক
মোংলা বন্দরের সক্ষমতার বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় এবার যুক্ত হচ্ছে আধুনিকমানের ছয়টি জলযান। বন্দরের অপারেশনাল কাজের সুবিধার জন্য ৭৬৭কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা হচ্ছে এ জলযান। ছয়টি জলযানের মধ্যে এ বছরের শেষে বন্দরে আসবে হংকংয়ের চিউলি শিপ ইয়ার্ডে নির্মিত দুটি টাগবোট। বাকি চারটি জলযান আসবে আগামী বছরের জুন মাসে। তবে সেগুলো বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে সার্স অ্যান্ড রেসকিউ ভ্যাসেল তৈরী হচ্ছে খুলনা শিপ ইয়ার্ডে, আর বাকি তিনটি তৈরী হচেছ নারায়ানগঞ্জের কর্নফুলি শিপ ইয়ার্ডে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী (মেরিন) কমান্ডার মোমেন উল্লাহ মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম জানান, ‘আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এই জলযানগুলো কেনা হচ্ছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এ কাজের পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ছয়টি জলযান হচ্ছে-একটি পাইলট মাদার ভ্যাসেল, দুটি টাগবোট, একটি সার্স অ্যান্ড রেসকিউ ভ্যাসেল (উদ্ধারকারী জাহাজ), একটি সার্ভে অ্যান্ড রিসার্স ভ্যাসেল ও একটি বয়লিং ভ্যাসেল। এরমধ্যে পাইলট মাদার ভ্যাসেল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৯১কোটি ২৮লাখ টাকা। এ জাহাজটি বন্দরে যুক্ত হলে মাদার ভ্যাসেল থেকে পাইলট ও বিদেশী নাবিকদের জাহাজ থেকে নদীর তীরে আনা-নেয়া আরও সহজ হবে। এছাড়া জাহাজটির মাধ্যমে প্রয়োজনে বন্দরের নিরাপত্তার জন্য টহল জোরদার করা যাবে।
এ বছরের শেষের দিকে বন্দরে সংযুক্ত হওয়া টাগবোট দুইটি ক্রয় করা হয়েছে ২৩৩কোটি ৩৮লাখ টাকায়। টাগবোট দুইটি বন্দরে আসার পর বন্দরে অবস্থানরত জাহাজ মুরিং (ভিড়াতে-ঘুরাতে) করা সহজ হবে। এছাড়া এ বোটের মাধ্যমে মাদার ভ্যাসেলকে (বিদেশী জাহাজ) প্রপেলার বন্ধ অবস্থায় টেনে আনা ও দূর্ঘটনা কবলিত জাহাজ টেনে নেয়া সহ অন্যান্য জাহাজের সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করবে।
আগামী বছরে বন্দরে যুক্ত হতে যাওয়া উদ্ধারকারী জাহাজ সার্স অ্যান্ড রেসকিউ ভ্যাসেল কেনায় ব্যয় হচ্ছে ১১৩কোটি ৪৪লাখ টাকা। আধুনিক এ জাহাজ দিয়ে সমুদ্রে দূর্ঘটনা কবলিত জাহাজ খুঁজে বের করা ও দূর্ঘটনা কবলিত জাহাজের নাবিক ও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্ধার করা যাবে। এছাড়া এ জাহাজের সাহায্যে ঝড়, জ্বলোচ্ছাসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগে আক্রান্ত জাহাজের ক্ষয়ক্ষতি কমবে বলে জানান বন্দর কর্তৃপক্ষ।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ জহিরুল হক বলেন, বন্দর সংশ্লিষ্ট গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হবে সার্ভে অ্যান্ড রিসার্স ভ্যাসেল। এ জাহাজটিও আগামী বছর মোংলা বন্দরে সংযুক্ত হবে। এটি কেনায় ব্যয় হয়েছে ১১৩কোটি ৪৪লাখ টাকা। জাহাজটির মাধ্যমে নদী ও সমুদ্রে বিভিন্ন ধরণের জরিপের কাজে এবং সামুদ্রিক প্রাণী সম্পর্কে গবেষণার কাজ করা সহজ হবে।
এছাড়া তিনি বলেন, বন্দর চ্যানেলে বয়া স্থাপন ও বিভিন্ন সিগন্যাল দেয়ার জন্য ১২৬কোটি ৩৭লাখ ব্যয়ে কেনা হয়েছে অত্যাধুনিক বয়লিং ভ্যাসেল। এটি দিয়ে স্বল্প সময়ে চ্যানেলের উপযুক্ত স্থানে সহজে বয়েল করা যাবে। এটিও আগামী বছর মোংলা বন্দরে সংযুক্ত হবে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, এসব নৌযান/জাহাজ, জলযান বন্দরে সংযুক্ত হলে বন্দরের সক্ষমতা কয়েকগুন বেড়ে যাবে। সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছর দুইটি ও আগামী বছর চারটি জলযান মোংলা বন্দরে যুক্ত হবে বলে জানান তিনি।