ঢাকা ০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪

রাণীশংকৈলে গরুর লাম্পি স্কিন রোগের ছড়াছড়ি

ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলায় ব্যাপক হারে বেড়েছে গবাদি পশু গরু’র লাম্পি স্কিন রোগ (এলএসডি)। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে আক্রান্ত হচ্ছে শত শত গরু। এ রোগের চিকিৎসা করেও কাঙ্খিত ফলাফল হচ্ছে না। প্রায় প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে মারা যাচ্ছে গরু।

এদিকে অভিযোগ রয়েছে, এ রোগের বিস্তার প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সচেতনতা ও পশু পালনকারীদের রোগ প্রতিরোধে করণীয় বিষয় নিয়ে তেমন কোন প্রচার প্রচারনা নেই উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। অনেক এলাকায় অভিযোগ রয়েছে এ রোগের বিষয়ে খোঁজ খবর পর্যন্ত নেয়নি প্রাণী সম্পদ দপ্তর।

জানা গেছে, বিগত কয়েক মাস ধরেই এ উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। বর্তমানে এটি ভয়ানক আকার ধারণ করেছে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই ছড়িয়ে পড়েছে এ রোগ। আক্রান্ত হচ্ছে শত শত গরু। আক্রান্ত হওয়ার ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই মারা যাচ্ছে গরু। বড় গরুর থেকে ছোট ধরনের গরু বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। ছোট আকারের গরু গুলোই বেশি মারা যাচ্ছে। বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, এ যাবত প্রায় শতাধিক গরু লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের সন্ধ্যারই খুটিয়াটুলি গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, এ রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে অত্যন্ত দূর্গন্ধ ছড়ায়। তিনি তার খামারের একটি আক্রান্ত গরুর অনেক চিকিৎসা করে কোন প্রতিকার না পেয়ে গরুটিকে জবাই করে মাটিতে পুঁতে দিয়েছেন।
একই এলাকার মুনসুর আলী (মন্টু) বলেন, তার বাড়ির ছোট একটি বাছুরের লাম্পি রোগ দেখা দিয়েছে । গরুটি বর্তমানে খারাপ অবস্থায় রয়েছে, যে কোন সময় মারা যাবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের গ্রামে অনেক গরু লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হলেও পশু হাসপাতালের কাউকে আমাদের গ্রামে আসতে দেখলাম না। কেউ খোঁজ পর্যন্ত নিলো না গরুগুলোর। একাধিকবার উপজেলা প্রাণী সম্পদে জানালেও তারা গ্রামের গুরগুলোর কোন খোঁজ নেয়নি।

একই এলাকার মফিজুল ও আকতার হোসেন বলেন, আমাদের বাড়িতে কয়েকটি গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। অনেক টাকা খরচ করে চিকিৎসা করে বর্তমানে একটু ভালো রয়েছে। তবে সরকারী কোন চিকিৎসক ডেকেও না পেয়ে বেসরকারী চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে এখন গরুগুলো একটু সুস্থের দিকে।

বনগাও রানীদিঘী গ্রামের পান দোকানি ইউনুস আলীর বাড়িতেও দুটি বাছুরের এই রোগ চরমভাবে দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ঠিক মুখটাকে ঘিরে ফস্কা এর মত উঠেছে, গরু মুখ দিয়ে খেতে পারছে না। আক্রান্ত গরুটি না খাওয়ার জন্য খুব খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে।

জানতে চাইলে রানীশংকৈল উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) চিকিৎসক মৌসুমী আকতার জানান, বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতাবোধ লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এটি সারা দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আমাদের উপজেলায় রোগটি নিয়ন্ত্রণে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। প্রায় প্রতিদিনই ভেটেরিনারী হাসপাতালে অসংখ্য গরুর চিকিৎসা দিচ্ছি।

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রাণীশংকৈলে গরুর লাম্পি স্কিন রোগের ছড়াছড়ি

আপডেট টাইম : ০৫:২৮:২৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৪ জুলাই ২০২৩

ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলায় ব্যাপক হারে বেড়েছে গবাদি পশু গরু’র লাম্পি স্কিন রোগ (এলএসডি)। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে আক্রান্ত হচ্ছে শত শত গরু। এ রোগের চিকিৎসা করেও কাঙ্খিত ফলাফল হচ্ছে না। প্রায় প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে মারা যাচ্ছে গরু।

এদিকে অভিযোগ রয়েছে, এ রোগের বিস্তার প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সচেতনতা ও পশু পালনকারীদের রোগ প্রতিরোধে করণীয় বিষয় নিয়ে তেমন কোন প্রচার প্রচারনা নেই উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। অনেক এলাকায় অভিযোগ রয়েছে এ রোগের বিষয়ে খোঁজ খবর পর্যন্ত নেয়নি প্রাণী সম্পদ দপ্তর।

জানা গেছে, বিগত কয়েক মাস ধরেই এ উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। বর্তমানে এটি ভয়ানক আকার ধারণ করেছে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই ছড়িয়ে পড়েছে এ রোগ। আক্রান্ত হচ্ছে শত শত গরু। আক্রান্ত হওয়ার ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই মারা যাচ্ছে গরু। বড় গরুর থেকে ছোট ধরনের গরু বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। ছোট আকারের গরু গুলোই বেশি মারা যাচ্ছে। বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, এ যাবত প্রায় শতাধিক গরু লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের সন্ধ্যারই খুটিয়াটুলি গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, এ রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে অত্যন্ত দূর্গন্ধ ছড়ায়। তিনি তার খামারের একটি আক্রান্ত গরুর অনেক চিকিৎসা করে কোন প্রতিকার না পেয়ে গরুটিকে জবাই করে মাটিতে পুঁতে দিয়েছেন।
একই এলাকার মুনসুর আলী (মন্টু) বলেন, তার বাড়ির ছোট একটি বাছুরের লাম্পি রোগ দেখা দিয়েছে । গরুটি বর্তমানে খারাপ অবস্থায় রয়েছে, যে কোন সময় মারা যাবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের গ্রামে অনেক গরু লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হলেও পশু হাসপাতালের কাউকে আমাদের গ্রামে আসতে দেখলাম না। কেউ খোঁজ পর্যন্ত নিলো না গরুগুলোর। একাধিকবার উপজেলা প্রাণী সম্পদে জানালেও তারা গ্রামের গুরগুলোর কোন খোঁজ নেয়নি।

একই এলাকার মফিজুল ও আকতার হোসেন বলেন, আমাদের বাড়িতে কয়েকটি গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। অনেক টাকা খরচ করে চিকিৎসা করে বর্তমানে একটু ভালো রয়েছে। তবে সরকারী কোন চিকিৎসক ডেকেও না পেয়ে বেসরকারী চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে এখন গরুগুলো একটু সুস্থের দিকে।

বনগাও রানীদিঘী গ্রামের পান দোকানি ইউনুস আলীর বাড়িতেও দুটি বাছুরের এই রোগ চরমভাবে দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ঠিক মুখটাকে ঘিরে ফস্কা এর মত উঠেছে, গরু মুখ দিয়ে খেতে পারছে না। আক্রান্ত গরুটি না খাওয়ার জন্য খুব খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে।

জানতে চাইলে রানীশংকৈল উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) চিকিৎসক মৌসুমী আকতার জানান, বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতাবোধ লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এটি সারা দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আমাদের উপজেলায় রোগটি নিয়ন্ত্রণে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। প্রায় প্রতিদিনই ভেটেরিনারী হাসপাতালে অসংখ্য গরুর চিকিৎসা দিচ্ছি।