ঢাকা ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৯৯০ ইলা লালালালা: সবুজ ঘাসের লাল দ্রোহের সুর যার কন্ঠে তরুণ আইনজীবী সাইফুলকে যেভাবে হত্যা করা হয় গাজীপুরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত রায়পুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দুর্নীতিত অতিষ্ঠ জনসাধারণ সমাবেশে গিয়ে টাকা না পেয়ে বাড়ি ঘেরাও, ৫ প্রতারক আটক অভিনব সিন্ডিকেট: সয়াবিন তেলের সঙ্গে চাল-ডাল কেনা বাধ্যতামূলক! সব ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলেন হাসনাত ডেপুটি রেজিস্ট্রার হয়েও নার্সিং ইনস্টিটিউট ব্যবসা নিলুফার ইয়াসমিনের অভিযোগ তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তলব পুলিশ প্রশাসনের নীতিগত পরিবর্তন হলেও এসআই মিজানের অসাধু নীতির পরিবর্তন হয়নি

নাজিরপুরে ভাসমান বেড তৈরীর কাজে ব্যস্ত কৃষক

নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ
  • আপডেট টাইম : ০৩:০৫:৩৫ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩
  • / ১৪১ ৫০০০.০ বার পাঠক

পিরোজপুরের নাজিরপুর বিলাঞ্চলে ভাসমান বেড তৈরীর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। আষাঢ় মাসের পানির দেখা পেয়ে কৃষকদের এ কাজের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। উপজেলার কলারদোয়ানিয়া,পদ্মডুবি,মনোহরপুর,দেউলবাড়ি,সোনাপুর,বিলডুমরিয়া সহ বিভিন বিলে কৃষকের এ ব্যস্ততা রয়েছে। ভাসমান বেডের উপর উৎপাদিত কৃষি সবজি নিয়েই বৈঠাকাটা ঐতিহ্যবাহী ভাসমান সবজি বাজার মেলে।

ভাসমান সবজি চাষী ফরিদ বালি জানান,কচুরিপানার ঘন, লম্বা ও পুরু স্তরের উপর একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের বাঁশ ফেলে এ বেড তৈরী করা হয়।এরপর বাঁশের উপর দাঁড়িয়ে শরীরের ভারসাম্য ঠিক রেখে দু’পাশ থেকে কচুরিপানা টেনে এনে বাঁশের উপর স্তরে স্তরে সাজাতে হয়।কচুরিপানার স্তর সাজানোর সময় কচুরিপানা পানিতে যেভাবে থাকে সেভাবে ঘন করে অর্থাৎ খাড়া করে সাজাতে হবে। পরবর্তী অর্ধেক স্তর সজানোর সময় কচুরিপানা উল্টো করে সাজাতে হবে অর্থাৎ এর শিকড় উপরের দিকে থাকতে হবে। তারপর পা দিয়ে চেপে চেপে উঁচু স্তর তৈরি করতে হবে যাতে কোন গ্যাপ বা ফাঁকা জায়গা না থাকে।এরপর স্তূপের উপরে উঠে প্রয়োজনীয় কচুরিপানা তুলে মাপ অনুযায়ী ধাপ তৈরি করতে হবে। ধাপের উপরের অংশে অপেক্ষাকৃত ছোট কচুরিপানা, খুদি পানা, টোপা পানা দেয়া ভাল। বন্যা, ঢেউ বা জোঁয়ার-ভাটার স্রোত থাকলে বেডের মাঝামাঝি জায়গায় বাঁশের খুঁটি বা বেডের চারপাশে ফ্রেম দিতে হবে।
কৃষক হোসাইন মোল্লা জানান, ভাসমান বেড তৈরির পর উপরিভাগ আবাদ উপযোগি হতে প্রায় ১৫-২০ দিন সময় লাগে। বেড তৈরির পর তাতে সারি করে সরাসরি বীজ বোনা যায়। আবার বল বা বিড়ায় তৈরি করা চারা নির্দিষ্ট দূরত্বে বেডে রোপণ করা যায়। আদা, হলুদ, কচু প্রভূতি ফসল সরাসরি রোপণ করা যায়। চারা ৫-৬ ইঞ্চি হলে এবং শিকড়ের মাথা বল থেকে বের হলেই (কালো হওয়ার আগেই) বেডে লাগাতে হবে। বিড়া বা ব্যাগের চারা একত্রে বেডে নির্দিষ্ট পরিমান গর্ত করে রোপণ করতে হবে। বিড়ার আকার ছোট হলে পার্শ্বে পচা কচুরির আস্তরণ দিতে হবে। নতুন আস্তরণের সাথে ১-২ চা চামচ জৈব সার প্রয়োগ করলে চারা তাড়াতাড়ি বাড়বে। চারা লাগানোর পর সামান্য পানি দিয়ে চারা ও চারার গোড়া ভিজিয়ে দেয়া আবশ্যক। চারা বেশি লম্বা হলে বাউনি দিতে হবে। অধিক ফলন পাওয়ার জন্য ভাসমান বেডে ঢেঁড়শ, টমেটো, বেগুন, কলমিশাক ইত্যাদি ফসলের সাথে আন্ত-ফসল ও মিশ্র ফসল হিসেবে ঝিঙ্গে, লালশাক, পুঁইশাক, ধনিয়া, ডাঁটা প্রভূতি চাষ করা যায়।
এ বিষয় নাজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইশরাতুন্নেছা এশা জানান, এ উপজেলার বিলাঞ্চলে ভাসমান বেডে কৃষি সবজি উৎপাদনের সুনাম দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ভাসমান বেডে সবজি উৎপাদনকারী কৃষকদের আমার দপ্তর থেকে প্রশিক্ষন সহ প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাদের সবজি ও মশলা প্রদর্শনী দেয়া হয়।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নাজিরপুরে ভাসমান বেড তৈরীর কাজে ব্যস্ত কৃষক

আপডেট টাইম : ০৩:০৫:৩৫ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩

পিরোজপুরের নাজিরপুর বিলাঞ্চলে ভাসমান বেড তৈরীর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। আষাঢ় মাসের পানির দেখা পেয়ে কৃষকদের এ কাজের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। উপজেলার কলারদোয়ানিয়া,পদ্মডুবি,মনোহরপুর,দেউলবাড়ি,সোনাপুর,বিলডুমরিয়া সহ বিভিন বিলে কৃষকের এ ব্যস্ততা রয়েছে। ভাসমান বেডের উপর উৎপাদিত কৃষি সবজি নিয়েই বৈঠাকাটা ঐতিহ্যবাহী ভাসমান সবজি বাজার মেলে।

ভাসমান সবজি চাষী ফরিদ বালি জানান,কচুরিপানার ঘন, লম্বা ও পুরু স্তরের উপর একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের বাঁশ ফেলে এ বেড তৈরী করা হয়।এরপর বাঁশের উপর দাঁড়িয়ে শরীরের ভারসাম্য ঠিক রেখে দু’পাশ থেকে কচুরিপানা টেনে এনে বাঁশের উপর স্তরে স্তরে সাজাতে হয়।কচুরিপানার স্তর সাজানোর সময় কচুরিপানা পানিতে যেভাবে থাকে সেভাবে ঘন করে অর্থাৎ খাড়া করে সাজাতে হবে। পরবর্তী অর্ধেক স্তর সজানোর সময় কচুরিপানা উল্টো করে সাজাতে হবে অর্থাৎ এর শিকড় উপরের দিকে থাকতে হবে। তারপর পা দিয়ে চেপে চেপে উঁচু স্তর তৈরি করতে হবে যাতে কোন গ্যাপ বা ফাঁকা জায়গা না থাকে।এরপর স্তূপের উপরে উঠে প্রয়োজনীয় কচুরিপানা তুলে মাপ অনুযায়ী ধাপ তৈরি করতে হবে। ধাপের উপরের অংশে অপেক্ষাকৃত ছোট কচুরিপানা, খুদি পানা, টোপা পানা দেয়া ভাল। বন্যা, ঢেউ বা জোঁয়ার-ভাটার স্রোত থাকলে বেডের মাঝামাঝি জায়গায় বাঁশের খুঁটি বা বেডের চারপাশে ফ্রেম দিতে হবে।
কৃষক হোসাইন মোল্লা জানান, ভাসমান বেড তৈরির পর উপরিভাগ আবাদ উপযোগি হতে প্রায় ১৫-২০ দিন সময় লাগে। বেড তৈরির পর তাতে সারি করে সরাসরি বীজ বোনা যায়। আবার বল বা বিড়ায় তৈরি করা চারা নির্দিষ্ট দূরত্বে বেডে রোপণ করা যায়। আদা, হলুদ, কচু প্রভূতি ফসল সরাসরি রোপণ করা যায়। চারা ৫-৬ ইঞ্চি হলে এবং শিকড়ের মাথা বল থেকে বের হলেই (কালো হওয়ার আগেই) বেডে লাগাতে হবে। বিড়া বা ব্যাগের চারা একত্রে বেডে নির্দিষ্ট পরিমান গর্ত করে রোপণ করতে হবে। বিড়ার আকার ছোট হলে পার্শ্বে পচা কচুরির আস্তরণ দিতে হবে। নতুন আস্তরণের সাথে ১-২ চা চামচ জৈব সার প্রয়োগ করলে চারা তাড়াতাড়ি বাড়বে। চারা লাগানোর পর সামান্য পানি দিয়ে চারা ও চারার গোড়া ভিজিয়ে দেয়া আবশ্যক। চারা বেশি লম্বা হলে বাউনি দিতে হবে। অধিক ফলন পাওয়ার জন্য ভাসমান বেডে ঢেঁড়শ, টমেটো, বেগুন, কলমিশাক ইত্যাদি ফসলের সাথে আন্ত-ফসল ও মিশ্র ফসল হিসেবে ঝিঙ্গে, লালশাক, পুঁইশাক, ধনিয়া, ডাঁটা প্রভূতি চাষ করা যায়।
এ বিষয় নাজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইশরাতুন্নেছা এশা জানান, এ উপজেলার বিলাঞ্চলে ভাসমান বেডে কৃষি সবজি উৎপাদনের সুনাম দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ভাসমান বেডে সবজি উৎপাদনকারী কৃষকদের আমার দপ্তর থেকে প্রশিক্ষন সহ প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাদের সবজি ও মশলা প্রদর্শনী দেয়া হয়।