হোমনায় তিতির পাখি ও ব্রাহামা মুরগির খামার দিয়ে এখন স্বাবলম্বী বিদেশ ফেরত ইকবাল হোসেন
- আপডেট টাইম : ০৪:২৯:২৮ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩
- / ৩১৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের চুনারচর গ্রাম। সেই গ্রামের চুনারচর কবরস্থানের পাশের বাড়ির বিদেশ ফেরত ইকবাল হোসেন দুই বছরে তিতির পাখি এবং ব্রাহামা মুরগী পালন করে বেশ সাফল্য অর্জন করেছেন। তিতিরের ডিম,বাচ্চা এবং ব্রাহামা মুরগি বিক্রি করে তিনি এখন বেশ লাভবান।
পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ ৪টি বছর প্রবাসে কাটান ইকবাল হোসেন । তবে তাতে ভাগ্যের চাকা ঘুরেনি।
পরিবারের সহযোগিতা নিয়ে ২০২১ সালে মাত্র ২টি তিতির পাখি এবং কুমিল্লা থেকে ব্রাহামা মুরগির ডিম নিয়ে শুরু করেন খামার। প্রথম বছরেই তিনি খামার থেকে ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন করে সফলতা অর্জন করেন। বর্তমানে তার খামারে বড় তিতির পাখির সংখ্যা ২৫০ এবং ব্রাহামা বড় মুরগির সংখ্যা ৩০ । এদের থেকে প্রতিদিন ডিম সংগ্রহ করেন।
খামারি ইকবাল হোসেন তিতির পাখির ডিম ও ব্রাহামা মুরগির ডিম থেকে ইনকিউবেটরের মাধ্যমে বাচ্চা উৎপাদন করেন। তিনি একদিনের তিতির পাখির বাচ্চা প্রতি পিস ৯৫-১০০ টাকা দরে ও বীজ ডিম প্রতি পিস ৪৫-৫০ টাকা দরে বিক্রি করেন। ব্রাহামা মুরগির একদিনের বাচ্চা প্রতি পিস ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করেন। বড় তিতির পাখিগুলো ১ জোড়া বিক্রি করেন ২৮০০ -৩০০০ হাজার টাকা দরে। তিতির পাখি ও ব্রাহামা মুরগি বিক্রি করে তিনি বেশ লাভবান হয়েছেন । তিতির পাখি বছরের বেশির ভাগ সময় ডিম দিয়ে থাকে।
খামারি ইকবাল হোসেন বলেন, আমি দীর্ঘ ৪ বছর প্রবাস জীবন পার করেছি। সেখান থেকে ফিরে নিজেই আমি খামারের উদ্যোক্তা হয়ে এ খামার দিয়েছি। প্রথমে আমি ২ টি তিতির পাখি এবং কুমিল্লা থেকে ব্রাহামা মুরগির ডিম এনে খামার শুরু করেছি। আমি ইউটিউব দেখে দেখে শিখেছি তিতির পাখির লালন পালন কিভাবে করতে হয় ও কিভাবে ব্রাহামা মুরগির ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন করতে হয়। তিতির পাখির লালন পালন ও ব্রাহামার ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন করতে আমি সক্ষম হয়েছি। প্রথম বছরই ডিম, বাচ্চা উৎপাদন করে ভালোই সাড়া পাই। তিনি বলেন খামার দেওয়ার প্রথম থেকেই আমার স্ত্রী সাদিয়া আক্তার আমাকে সাহস দিয়ে আসছে। আজ আমার এই সাফল্যের পেছনে আমার স্ত্রী সাদিয়া আক্তার এর অনেক ভূমিকা রয়েছে। খামার দেওয়ার প্রথম দিকে গ্রামের সবায় আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করলেও এখন সবায় আমাকে নিয়ে গর্ব করেন। সবাই আমার খামার দেখতে চলে আসেন। এ খামার আমি আরও বড় করার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন কেউ চাইলে তার কাছ থেকে তিতির পাখি এবং তিতির পাখির বীজ ডিম কিনে দিতে পারবেন এবং ব্রাহামা মুরগি ও ডিম কিনে নিতে পারবেন। একদিনের তিতি পাখির বাচ্চা বিক্রি করছেন প্রতি পিস ৯৫-১০০ টাকা ধরে ও বীজ ডিম বিক্রি করছেন প্রতি পিস ৪৫-৫০ টাকা দরে।আর খাবার ডিম বিক্রি করছেন ৬০-৭০ টাকা হালি। আর বড় তিতির ১ জোড়া বিক্রি করছেন ২৮০০-৩০০০টাকা দরে। অন্যদিকে একদিনের ব্রাহামা মুরগির বাচ্চা বিক্রি করছেন প্রতি পিস ৫০০ টাকা দরে।
তিনি আরও বলেন, তিতির পাখির রোগবালাই অনেক কম হয়। খাবার হিসেবে চাল, সবুজ ঘাস, লতাপাতা খায়। লালনপালনেও খরচ অনেক কম লাগে। অন্যান্য পাখি থেকে তিতির পাখির ডিম, মাংস অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর।
তিনি আরও বলেন উপজেলা ভেটেনারি ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হেলাল উদ্দিনের পরামর্শ নিয়ে তিনি এই খামার পরিচর্যা করছেন।